জুলাইয়ে পেনশন ও কোটা বিরোধী আন্দোলনে উত্তপ্ত হতে পারে ঢাবি
- ঢাবি প্রতিনিধি
- ২৯ জুন ২০২৪, ০০:০০
সাম্প্রতিক সময়ে দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বেশ কয়েকটি ইস্যু নিয়ে আন্দোলন শুরু হয়েছে। ফলে ক্যাম্পাস প্রাঙ্গণে বিরাজ করছে তীব্র অস্থিরতা। আন্দোলনগুলোর মধ্যে একটি সার্বজনীন পেনশন স্কিম সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্তিকরণের প্রতিবাদ অন্যটি মুক্তিযোদ্ধা কোটা পূর্ণবহাল বাতিলের দাবি।
গত ১৩ মার্চ থেকে অর্থ মন্ত্রণালয় কর্তৃক সার্বজনীন পেনশন স্কিম ঘোষণার পর থেকেই আন্দোলনে সরব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকবৃন্দ। গত ২৫-২৭ জুন পর্যন্ত অর্ধদিবস কর্মবিরতি পালন করছে তারা। আগামী ৩০ জুনের মধ্যে প্রত্যয় স্কিম বাতিল না হলে ১ জুলাই থেকে সর্বোচ্চ কর্মবিরতির হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকবৃন্দ যাবতীয় শ্রেণী কার্যক্রম থেকে বিরত থাকবে বলে জানানো হয়। এতে উচ্চশিক্ষা কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হবে বলে মন্তব্য করছেন শিক্ষাবিদরা।
আন্দোলন প্রসঙ্গে বাংলাদেশ শিক্ষক ফেডারেশনের মহাসচিব ও ঢাবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক নিজামুল হক ভূঁইয়া বলেন, অর্থ মন্ত্রণালয় কর্তৃক বৈষম্যমূলক প্রজ্ঞাপন জারির পর থেকেই বাংলাদেশের শিক্ষক সমাজ এক প্রকার বাধ্য হয়েই মানববন্ধন, কর্মবিরতি, অবস্থান গ্রহণসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছে। এ প্রজ্ঞাপন বাতিল না হলে আগামী জুলাই থেকে সর্বাত্মক কর্মবিরতিতে যাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ ৩৫টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকবৃন্দ। পরীক্ষা, ক্লাস বন্ধসহ যাবতীয় শ্রেণী কার্যক্রম থেকে বিরতিতে থাকবে শিক্ষকেরা। সার্বজনীন পেনশন স্কিম বাতিল না হওয়া পর্যন্ত এ কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।
অন্য দিকে গত ৫ জুন সরকারি চাকরিতে ২০১৮ সালে জারিকৃত সার্বজনীন কোটা বাতিলে পরিপত্র অবৈধ ঘোষণা করে পুনর্বহালের রায় দেন হাইকোর্ট। এতে মুক্তিযোদ্ধার উত্তরসূরিদের ৩০ শতাংশসহ সর্বমোট ৫৬ শতাংশ কোটা পুনর্বহালের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। প্রতিবাদস্বরূপ রায় ঘোষণার পরপরই বিক্ষোভ করে শিক্ষার্থীরা। ঈদের ছুটির আগ পর্যন্ত ধারাবাহিক আন্দোলনে সরব ছিল সাধারণ শিক্ষার্থীরা। রায় স্থগিতের দাবিতে আগামী ৩০ জুনের মধ্যে আল্টিমেটাম বেঁধে দিয়েছেন তারা। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে উক্ত রায় রহিত না হলে সর্বাত্মক আন্দোলনে যাবেন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। অন্তর্ভুক্তিমূলক ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন কর্মসূচি পালন করবে তারা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো আন্দোলনের মানসিক প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানা গেছে। কোটা আন্দোলনের সংগঠক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও নাহিদ হাসান জানান, আন্দোলনের প্রাথমিক প্রস্তুতি হিসেবে ক্লাস, পরীক্ষাসহ যাবতীয় শ্রেণী কার্যক্রম বর্জনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। দাবি আদায় না হলে প্রয়োজনে অনশন ধর্মঘটে যাবো। দেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সাথে যোগাযোগোত্তর বৃহৎ আন্দোলনের প্রস্তুতির কথা জানান তিনি।
শিক্ষাবিদরা জানান, কোটা ও পেনশন সংক্রান্ত আন্দোলন হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উচ্চশিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হওয়াসহ সামগ্রিক পরিবেশ ব্যাহত হবে। জুলাই থেকে শুরু করে টানা ১১টি বিভাগের পরীক্ষার শিডিউল রয়েছে। আন্দোলন চলমান থাকলে ঢাবিসহ অন্যান্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভাগগুলোর সেশন জটে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এ নিয়ে শঙ্কায় রয়েছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষাবিদরা জানান আন্দোলকারীদের সাথে আলোচনা সাপেক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় অঙ্গনে আগের মতো পরিবেশ ফিরিয়ে আনার দাবি জানিয়েছেন তারা।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা