১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`
আলোচনা সভায় অভিমত

কবি ফররুখ আহমদ বিভাজনের শিকার

-


কবি ফররুখ আহমদ বিভাজনের শিকার। কবিতায় ফররুখ আহমদ যে বড় কাজ করেছেন এটা স্বীকৃত। অন্তত ৭০-এর দশক পর্যন্ত মূলধারার কবি বা সাহিত্যিক তাদের প্রত্যেকেই ফররুখ আহমদকে শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেছেন। কিন্তু এ ধারায় গত দুই দশক ধরে একটা ব্যত্যয় তৈরি হয়েছে।
জাতীয় জাগরণের অন্যতম প্রাণপুরুষ কালোত্তীর্ণ কবি ফররুখ আহমদের ১০৬তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভায় গতকাল বক্তারা এসব কথা বলেন।

ফররুখ গবেষণা ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এ সভায় প্রধান আলোচক ছিলেন ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম। অধ্যাপক মোহাম্মদ সিরাজ উদ্দিনের সভাপতিত্বে সভায় অন্যান্যের মধ্যে কবি হাসান আমীন, ডা. সৈয়দ রিপন আহমদ, ওয়াহিদুজ্জামান বাচ্চু প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। প্রধান আলোচক বলেন, ফররুখ চর্চায় তাকে প্রথম থেকেই আদর্শবাদী কবি বলে সম্মানিত করা হয়। কিন্তু এর মধ্যেও যারা নানাভাবে বিভাজনের শিকার হয়েছেন তাদের মধ্যে ফররুখ আহমদ একজন। রাজনৈতিক কারণেই এমনটা হচ্ছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, এমনটা মোটেও কল্যাণকর নয়। ফররুখকে নিয়ে এ পর্যন্ত যথেষ্ট ভালো আলোচনা হয়েছে। যে কথাটা ফররুখ চর্চাকে সঙ্কটাপন্ন করে তুলে তা হলো অকারণে বিরোধের মুখোমুখি হওয়া। অথচ তিনি বাংলা সাহিত্যের এক অমর কবি-প্রতিভা। তিনি জাতীয় জাগরণের অন্যতম প্রাণপুরুষ, পরাধীন যুগে অধঃপতিত বাঙালি মুসলিম নবজাগরণের অন্যতম রূপকার।

সভায় অন্য বক্তারা তার সৃষ্টিকর্ম নানা বৈচিত্র্য ও বৈশিষ্ট্যে সমুজ্জ্বল মন্তব্য করে বলেন, এক্ষেত্রে বাংলা সাহিত্যে তার এক স্বতন্ত্র মহিমান্বিত আসন সুচিহ্নিত। এ ক্ষেত্রে তাকে গুরুত্বের সাথে স্মরণ করা জাতীয় কর্তব্য বলে আমরা মনে করি।
তারা বলেন, বাংলাদেশের মুসলমানদের মধ্যে সাড়া জাগিয়েছেন যে দুইজন কবি তাদের মধ্যে ফররুখ আহমদ অন্যতম। ফররুখ জাতিসত্তা ও গণমানুষের কবি ছিলেন। তার কবিতায় বাংলাভাষা ও বাংলাদেশের মানুষের জীবনচিত্র অসাধারণভাবে ফুটে উঠেছে। কবিতায় তিনি তুলে এনেছেন বাংলার শেকড় ও সংস্কৃতি। অথচ কাজী নজরুল ইসলাম, ইসমাইল হোসেন সিরাজী, কবি ফররুখ আহমদকে আমরা ইতিহাস থেকে বাদ দেয়ার চেষ্টা করছি, যা অন্যায়।
সভায় বলা হয়, ফররুখ আহমদ যদি স্বাধীনতার পর নিজের আদর্শ বিসর্জন দিতেন তাহলে তার কোনো সমস্যা হতো না। কিন্তু তিনি তা না করায় তাকে বিভিন্নভাবে অপমানিত করা হয়েছে। অথচ তিনি অসহায়তা-অলসতা ও পশ্চাদপদতার অন্ধকার ঘূর্ণাবর্তে নিপতিত মানবতা রক্ষার্থে সাহিত্য ভূবনের এক দুঃসাহসী ও মানবতাবাদী কবি। তাই জাতিসত্তার স্বার্থে তাকে স্মরণ রাখা উচিত।
সভায় দেশের বরেণ্য কবি, সাহিত্যিক, ছড়াকারসহ বুদ্ধিজীবীরা উপস্থিত ছিলেন। উপস্থিত অনেকে গান, কবিতা আবৃত্তি পরিবেশন করেন।

 


আরো সংবাদ



premium cement