১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

ময়মনসিংহ ও নেত্রকোনায় গ্যাস সরবরাহ বন্ধ

-

- খাবারের জন্য ঘরে ঘরে হাহাকার
- হোটেলগুলোয় অস্বাভাবিক ভিড়

ময়মনসিংহের ত্রিশালে চায়না কোম্পানির নির্মাণকাজের পাইলিংয়ের সময় তিতাস গ্যাসের সঞ্চালন লাইনের পাইপ ছিদ্র হওয়ায় ময়মনসিংহ ও নেত্রকোনা জেলায় সোমবার রাত ১১টা থেকে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। ফলে ৮৬ হাজার আবাসিক গ্রাহকের পাশাপাশি বাণিজ্যিক গ্রাহক, সিএনজি পাম্প ও শিল্পকারখানায় গ্যাস সরবারাহ বন্ধ ছিল। এতে গ্রাহকরা চরম ভোগান্তির শিকার হন। গতকাল মঙ্গলবার ৮টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত গ্যাস সরবরাহ চালু হয়নি। তবে রাত ১০টা নাগাদ গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক হতে পারে বলে তিতাসের ময়মনসিংহের আঞ্চলিক বিক্রয় বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক প্রকৌশলী সুরঞ্জিত কুমার দে জানিয়েছেন।
তিতাস গ্যাস এন্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির ময়মনসিংহের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি) প্রকৌশলী কাজী মোহাম্মদ সাইদুল হাসান জানান, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে ত্রিশাল উপজেলার আমিরাবাড়ি ইউনিয়নের নারায়ণপুর গ্রামে মিনিস্টার হাইটেক পার্কের অদূরে ‘ডিফেং ইকোনমিক জোন’ নামক একটি চায়না কোম্পানি অবৈধভাবে জবরদখল করা জমিতে নির্মাণকাজের পাইলিং করার সময় সঞ্চালন লাইনের ১২ ইঞ্চি ব্যাসার্ধের পাইপ ছিদ্র হয়ে যায়। গত সোমবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। দিনভর গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক থাকলেও মেরামতকাজের জন্য রাত ১১টার পর গ্যাস লাইনে সরবরাহ বন্ধ করা হয়। মেরামতকাজের জন্য গ্যাস সরবরাহ বন্ধ রাখার বিষয়টি অবহিত করে মাইকিং করা হয়েছে।
তিনি আরো জানান, তিতাস গ্যাস কোম্পানির কর্তৃপক্ষকে না জানিয়ে সঞ্চালন লাইনের নিজস্ব জায়গায় চায়না মোম্পানি খোঁড়াখুঁড়ি করে পাইপ ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। মেরামতকাজ শেষে গ্যাস সরবরাহ চালুর পর ক্ষতিপূরণ আদায়ে ওই কোম্পানির বিরুদ্ধে প্রশাসনিক পদক্ষেপ নেয়া হবে।

তিতাস গ্যাস এন্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির ম্যানেজার (অপারেশন) হিমটন পাল জানান, নিরাপত্তার জন্য সঞ্চালন লাইন সম্পূর্ণভাবে গ্যাস শূন্য হওয়ার পর পাইপ লাইনের ‘লিকেজ’ সরানোর কাজ শুরু করা হয়। এক্সকেভেটর দিয়ে মাটি খুঁড়ে ক্ষতিগ্রস্ত পাইপের অংশ বের করা হয়। পাইপ কেটে নতুন করে জোড়া লাগানোর পর পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে গ্যাস সরবরাহ চালু করতে হবে। উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন সরবরাহ লাইনটির মেরামতকাজ শেষ করতে সন্ধ্যা গড়িয়ে যেতে পারে। পাইন লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় কী পরিমাণ আর্থিক ক্ষতি হয়েছে, তা এখনো নিরূপণ করা সম্ভব হয়নি।
এদিকে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকায় গতকাল (মঙ্গলবার) সকাল থেকে আবাসিক গ্রাহকরা রান্না করতে না পারায় খাবারের জন্য হাহাকার পড়ে যায়। অনেকেই এলপিজিতে রান্না করা হোটেল থেকে রুটি, বিরিয়ানী, পুরি, সিঙ্গারাসহ হালকা খাবার কিনে উদরপূর্তি করেন। দুপুরে খাবারের জন্য হোটেলগুলো অস্বাভাবিক ভিড় দেখা যায়। বহু হোটেলে গ্যাসের অভাবে রান্না করা হয়নি। নগরীর ১০টি গ্যাসভিত্তিক সিএনজি পাম্পে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকায় গাড়ি চালকরাও বিপাকে পড়েছেন। গ্যাস না থাকায় বিকল্প হিসেবে জ্বালানি তেল দিয়ে গাড়ি চালাচ্ছেন। অনেক গাড়িচালককে গ্যাসের জন্য পাম্পগুলোতে গাড়ি নিয়ে অবস্থান করতেও দেখা যায়। গ্যাস সঞ্চালন লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় ময়মনসিংহ, ভালুকা, মুক্তাগাছা, শম্ভুগঞ্জ, নেত্রকোনা জেলার ৮৬ হাজার আবাসিক গ্রাহক, ২৫০ বাণিজ্যিক গ্রাহক, ১৪টি সিএনজি পাম্প ও শতাধিক শিল্পকারখানা এবং রুরাল পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেডের (আরপিসিএল) শম্ভুগঞ্জ বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র্র গ্যাস পায়নি।
মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় তিতাসের ময়মনসিংহের আঞ্চলিক বিক্রয় বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক প্রকৌশলী সুরঞ্জিত কুমার দে নয়া দিগন্তকে জানান, রাত ১০টা নাগাদ গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক হতে পারে।


আরো সংবাদ



premium cement