চোখের স্ট্রোক প্রতিরোধ
- ২৬ জুন ২০২৪, ০১:৪৩
‘স্ট্রোক’ শব্দটি শুনলে প্রথমে মস্তিষ্কের কথা মনে হয়। আবার স্ট্রোকের সঙ্গে যোগ রয়েছে হার্টেরও। গরম, আপেক্ষিক আর্দ্রতাজনিত কষ্ট সহ্য করতে না পেরে বহু মানুষ হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হয়েছেন এবার। এমনকি মারাও গেছেন। এসব খবর সাধারণ মানুষের মনে বেশ ভয় ধরিয়েছে। গরমের দাপটে কিংবা কোনোভাবে শরীর পানিশূন্য হয়ে পড়লে একইভাবে স্ট্রোক যে চোখেও হতে পারে, সে সম্পর্কে অনেকের ধারণা নেই।
চোখ হলো শরীরের স্পর্শকাতর ইন্দ্রিয়গুলোর অন্যতম। ঘুমের সময়টুকু বাদ দিলে দিনের বেশির ভাগ সময় চোখ খোলা থাকে। বাতাসে মিশে থাকা ধুলা, ময়লা, জীবাণুর সঙ্গে গরম হাওয়ার আঁচ সরাসরি চোখে এসে লাগে। সেখান থেকেই শুরু হয় প্রদাহ। স্বাভাবিক রক্ত চলাচল ব্যাহত হলে চোখের চাপ বেড়ে যায়। রেটিনা রক্তবর্ণ হয়ে ওঠে। এ অবস্থায় চিকিৎসায় হেলাফেলা করলে দৃষ্টিশক্তি নষ্ট হতে পারে। তা ছাড়া চোখের সঙ্গে মস্তিষ্কের সরাসরি যোগ রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে রক্তচাপ বা শর্করা অনিয়ন্ত্রিত অবস্থায় থাকলেও এর প্রভাব চোখের ওপর পড়ার আশঙ্কা থাকে। সে কারণেও চোখে স্ট্রোক হয়।
চোখে স্ট্রোকের লক্ষণ : চোখ লাল হয়ে ফুলে অনবরত পানি পড়তে পারে। রেটিনার ওপর রক্তজালিকা ভেসে উঠতে পারে। কিছু ক্ষেত্রে রক্ত জমাট বাঁধতেও দেখা যায়। চোখে রক্ত সরবরাহ ব্যাহত হয়। ফলে অক্সিজেনের অভাব দেখা দেয়।
স্ট্রোক বোঝার উপায় : সাদা দেয়ালের দিকে তাকিয়ে থাকলেও মনে হতে পারে এর গায়ে যেন ধূসর ধূলিকণা ঘুরে বেড়াচ্ছে। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় একে ‘ফ্লোটারস’ বলা হয়। আবার চোখে স্ট্রোক হলে দৃষ্টি ঝাপসা হতে পারে। কারো ক্ষেত্রে চোখের নির্দিষ্ট একটি অংশ ঝাপসা হয়ে যেতে পারে। আবার কারো ক্ষেত্রে পুরো দৃষ্টিশক্তিই ঝাপসা হয়ে যায়। পরিস্থিতি জটিল হলে দৃষ্টিশক্তি হারানোর আশঙ্কাও থাকে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে চোখে স্ট্রোক হলে রোগী তা বুঝতে পারে না। কারণ, চোখে বিশেষ কোনো কষ্ট বা যন্ত্রণা হয় না। তবে চোখের ওপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি হয়। একটু সচেতন থাকলে সেই অস্বস্তি টের পাওয়া যায়। অনেক সময় রক্তনালী ছিঁড়ে গিয়ে রেটিনার ওপর তা ছড়িয়ে পড়ে। তাই চোখ রক্তবর্ণ হয়ে যায়।
প্রতিরোধের উপায় : নিয়মিত প্রাণায়াম করলে উচ্চ রক্তচাপ এবং ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে। এতে চোখের ওপর চাপ কম পড়ে। চোখের স্ট্রোক এড়ানোর অন্যতম পন্থা হলো প্রাণায়াম। চোখ ভালো রাখতে বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন ও খনিজসমৃদ্ধ বাদাম এবং বীজ খাওয়া প্রয়োজন। সঙ্গে যদি কিশমিশ ও শুকনো ডুমুর খাওয়া যায়, তাহলে আরো ভালো হয়। প্রতিদিনের খাবারে বিটা-ক্যারোটিনযুক্ত খাবার, যেমন গাজর, পালংশাক, ব্রকলি, মিষ্টিআলু, স্ট্রবেরি রাখা যেতে পারে। একান্তই না পারলে চিকিৎসকের পরামর্শে ভিটামিন এ সাপ্লিমেন্ট খেতে হবে। চোখে সরাসরি রোদ লাগলেও ক্ষতি হতে পারে। তাই রোদ থেকে চোখ বাঁচিয়ে রাখতে রোদ-চশমা ব্যবহার করতে হবে। চোখকে পর্যাপ্ত বিশ্রাম দিতে হবে। দিনের যেটুকু সময় চোখ দুটিকে কাজ না করালেই নয়, সেটুকু সময় ছাড়া বাকি সময় চোখ বন্ধ করে রাখতে পারলে ভালো। প্রয়োজনে চোখের হালকা কিছু ব্যায়াম করা যেতে পারে। ইন্টারনেট।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা