কালো টাকা সাদা করার সুযোগ বৈধ করদাতাদের অনীহা সৃষ্টি করবে
- বিশেষ সংবাদদাতা
- ২৩ জুন ২০২৪, ০২:৫৩
২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে ১৫ শতাংশ কর দিয়ে অপ্রদর্শিত আয় বা কালো টাকা সাদা করার সুযোগ বৈধ করদাতাদের কর প্রদানে অনীহা সৃষ্টি করবে বলে মনে করছেন সরকার ও বিরোধী দলীয় সংসদ সদস্যরা। সংসদে আলোচনায় তারা বলেছেন, বাজেটে সাদা ও কালো টাকা নিয়ে কথা হয়েছে। একজন করদাতা হিসেবে আমার ৩০ লাখ টাকা থাকলে ৩০ শতাংশের বেশি কর দিতে হচ্ছে; কিন্তু যিনি আগের বছর টাকা দেখাননি, ১৫ শতাংশ কর দিয়ে সেই অপ্রদর্শিত আয়কে বৈধ করে নিচ্ছেন। এতে করে সঠিক করদাতারা কর দিতে অনিচ্ছা পোষণ করবেন।
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে জাতীয় সংসদে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপরে গতকাল আলোচনায় অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন সরকারি ও বিরোধী উভয় পক্ষের সংসদ সদস্যরা।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি ডা: প্রাণ গোপাল দত্ত বলেন, আমরা এই বাজেটে কালো টাকা এবং সাদা টাকা নিয়ে কথা তুলেছি। অর্থাৎ অপ্রদর্শিত আয়, প্রদর্শিত আয় যেটা আমরা ট্যাক্স দিয়েছি। আমি একজন করদাতা হিসেবে যখন ৩০ লাখ টাকার উপরে আমার আয় থাকে আমাকে ৩০ ভাগ কর দিতে হচ্ছে। কিন্তু যিনি টাকা দেখাননি গত বছর তিনি কিন্তু ১৫ ভাগ দিয়ে সে টাকাকে বৈধ করে অপ্রদর্শিত আয়কে প্রর্দশিত আয় বা বৈধ ট্যাক্স করে নিচ্ছেন। এতে করে সঠিক করদাতা যারা তারা কিন্তু কর দিতে অনিচ্ছা পোষণ করবে। তিনি বলেন, আমরা কালো টাকা এবং সাদা টাকার কথা বলি কখনো কেউ গ্রে মানি অর্থাৎ ইনফরমাল ইকোনোমি যেটা আছে সেটিকে কোনো অবস্থাতেই নিয়ন্ত্রণ করা যায় না সেই ব্যাপারে অর্থমন্ত্রী বাজেট বক্তৃতায় কিছুই বলেননি। এই গ্রে মানিটা সেটিও কিন্তু আনট্যাক্স মানির চেয়েও আরো অনেক বেশি খারাপ অর্থাৎ অপ্রদর্শিত আয়ের চেয়েও খারাপ। সেটিকে যদি সঙ্কুচিত করা না যায় তাহলে মানিলন্ডারিং কোনো অবস্থাতেই স্তিমিত হবে না বা বন্ধ হবে না।
সংরক্ষিত মহিলা আসনের জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য নুরুন নাহার বেগম বলেন, বাজেটে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ থাকল। এ সুযোগ নিয়ে অনেক অপরাধী দেশের বাইরে টাকা পাঠানোর পাশাপাশি দেশে কালো টাকা সাদা করতে পারবে, যা দেশের অর্থনীতির সঙ্কট বাড়িয়ে দিবে।
কালো টাকা সাদা করার সুযোগের সমালোচনার জবাবে গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী বলেন, বাস্তবতা হচ্ছে, কালো টাকা আমাদের মার্কেটে আছে। এ টাকা কিভাবে ব্যবহার করবেন, সেই উপায় কেউ বাতলায় না, সমালোচনা করে। দেখলাম, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সমালোচনা করে বলছেন, এতে নাকি দেশের অর্থনীতি ধ্বংস হয়ে যাবে। কিন্তু উনি বলেন না, ২০০৭ (২০০৬ হবে) সালে ওনার নেত্রী খালেদা জিয়া ৫ শতাংশ কর দিয়ে এক কোটি ৩৩ লাখ ১৪ হাজার ৭১০ টাকা সাদা করেছেন। এটা বলেন না, এটা তাদের মনে থাকে না। এটা মনে রাখার জন্য বলব।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা