তজুমদ্দিনে দেখা মিলল রাসেল ভাইপার, আতঙ্কে এলাকাবাসী

ভোলার তজুমদ্দিনেও দেখা মিলল ভয়ঙ্কর বিষধর সাপ রাসেল ভাইপারের। গত দুই দিনে চাঁদপুর ইউনিয়নের চৌমুহনী ও সোনাপুর ইউনিয়নের চাঁপড়ী গ্রামে দু’টি সাপকে এলাকাবাসী পিটিয়ে মেরেছে। এতে পাশের এলাকাগুলোতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে মানুষ।
গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে তজুমদ্দিন উপজেলার সোনাপুর ইউনিয়নের কাচারী বাড়ির জসিম (৩৪) ঘরের পেছনে কলাবাগানে যান। এ সময় বিষধর রাসেল ভাইপার দেখে চিৎকার করলে লোকজন জড়ো হয়। পরে এলাকাবাসী দলবেঁধে লাঠি, টেঁটা, বর্শা হাতে সাপটিকে খুঁজে পিটিয়ে মেরে ফেলে। চাঁপড়ী গ্রামের নুরে আলম মাতাব্বর (৩২) জানান, কাচারী বাড়ির জসিম কলা কাটতে বাগানে গেলে সাপের দেখা পায়। পরে সবাই মিলে রাসেল ভাইপার সাপ নিশ্চিত হয়ে এটিকে পিটিয়ে মেরে ফেলে। নদী ও নিম্নাঞ্চল এলাকা হওয়ায় এখন আমরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছি।
অপর দিকে গত বুধবার বিকেলে চাঁদপুর ইউনিয়নের চৌমুহনী ঘাটসংলগ্ন একটি ফসলি জমিতে ফুটবল খেলতে গেলে কয়েক কিশোর আরেকটি বিষধর সাপ দেখতে পায়। একপর্যায়ে সাপটি তাদের আক্রমণ করতে এলে রাসেল ভাইপার সন্দেহে কিশোররা মিলে পিটিয়ে সাপটিকে মেরে ফেলে। পরে পলিথিন পেঁচিয়ে সাপটিকে মাটির নিচে পুঁতে রাখে তারা।
রায়হান নামে এক কিশোর জানায়, বিভিন্ন সময় ফেসবুকে রাসেল ভাইপার সাপ দেখেছি। এবার বাস্তবে ফসলি জমিতে ফুটবল খেলতে গিয়ে সাপটিকে নিজ চোখে দেখলাম। পরে সাপটির ছবি তুলে ইন্টারনেটের মাধ্যমে শনাক্ত করি যে, সাপটি বিষাক্ত রাসেল ভাইপার। সাপটি দেখে এলাকার সবাই আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। তবে এই সাপটির ছবি ফেসবুকে প্রকাশ করা হলে অনেক নেটিজেন এটিকে রাসেল ভাইপার মানতে নারাজ। তবে তাদের অনেকেই এটিকে বিষাক্ত প্রজাতির সাপ বলে দাবি।

জানা গেছে, বাংলাদেশে বর্তমানে যেসব সাপ দেখা যায় সেগুলোর মধ্যে রাসেল ভাইপার সবচেয়ে বিষাক্ত। এই সাপের ছোবলে শরীরের দংশিত অংশে বিষ ছড়িয়ে অঙ্গহানি, ক্রমাগত রক্তপাত, রক্ত জমাট বাঁধা, স্নায়ু বৈকল্য, চোখ নষ্ট হয়ে যাওয়া, পক্ষাঘাত ও কিডনির ক্ষতিসহ বিভিন্ন ধরনের শারীরিক উপসর্গ দেখা দেয়।
এ বিষয়ে দৌলতখান বন বিভাগের রেঞ্জ অফিসার মো: সাইফুল ইসলাম জানান, তীব্র বর্ষায় নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ায় রাসেল ভাইপার লোকালয়ে চলে এসেছে। পানি কমে গেলে এগুলো আবার তাদের আবাসস্থলে চলে যাবে বলে মনে করি।
সাপ দেখলেই আতঙ্কিত না হওয়ার জন্য পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, অনেক স্থানে সাপ দেখলেই মানুষ তা পিটিয়ে মেরে ফেলার চেষ্টা করে। সাপ প্রকৃতিতে অনেক অবদান রাখছে। আক্রান্ত না হলে কাউকে আঘাত করে না। সে জন্য সাপ দেখলে প্রথমে তাকে চলে যাওয়ার সুযোগ দেয়া উচিত।
সোনাপুর ইউনিয়নের চাঁপড়ী এলাকায় এলাকাবাসী যে সাপটিকে পিটিয়ে মেরেছে সেটির ছবি দেখে রাসেল ভাইপার বলে তিনি নিশ্চিত করেন।
রাসেল ভাইপার সাপ লোকালয়ে সাধারণত খুব কমই দেখা যায়। বাচ্চা দেয়ার কারণে হয়তো ওই সাপটি লোকালয়ে চলে এসেছে। তবে সবাইকে এ বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।