১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

ঈদের ছুটিতে ঘুরে আসুন মিরসরাইয়ের ৮ ঝরনায়

-

এবারের ঈদের টানা ছুটিতে ঘুরে আসুন অপরূপ পাহাড়ি ঝরনার লীলাভূমি হিসেবে পরিচিত চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার ৮ ঝরনায়। বৃৃষ্টির পানিতে ঝরনাগুলো আপনরূপে ফিরেছে। ঝরনার পাশাপাশি উপজেলার অন্যান্য পর্যটন স্পটও ঘুরে দেখতে পারবে ভ্রমণপিপাসু পর্যটকরা।
বন্ধু-সহপাঠি, পরিবারের সদস্য, আত্মীয়স্বজন নিয়ে ঝরনার স্বচ্ছ পানিতে ঘা ভেজানোর জন্য অন্যতম সময় এখন।
জানা গেছে, মিরসরাই উপজেলা ঝরনার রানি হিসেবে সারাদেশে পরিচিত। সেখানে বছরের যেকোনো সময় দূরদূরান্ত থেকে প্রতিদিন ছুটে আসে ভ্রমণপিপাসুরা। এবারের ঈদের ছুটিতে মানুষের ঢল নামতে পারে খৈয়াছড়া ঝরনা, রূপসী ঝরনা, হরিনাকুণ্ড ঝরনা, নাপিত্তাছড়া ঝরনা, সোনাইছড়ি ঝরনা, বোয়ালিয়া ঝরনা, সোনাইছড়ি ঝরনা ও মেলখুম ট্রেইলে।
এক খরচেই পর্যটকরা দেখার সুযোগ পাচ্ছেন পাহাড়ের ঝরনা ও সমুদ্র। এ যেন এক ঢিলে দুই পাখি শিকার। ‘রথ দেখা ও কলা বেচা’র মতোই পাহাড় দেখতে এসে দেশের দূরদূরান্তের পর্যটকরা বোনাস হিসেবে পাচ্ছেন সমুদ্র তীরে সূর্যাস্ত দেখার সুযোগ।
রূপসী ঝরনা : প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্যের আরেক নাম বড় কমলদহ রূপসী ঝরনা। আঁকাবাঁকা গ্রামীণ সবুজ শ্যামল মেঠোপথ পার হয়ে পাহাড়ের পাদদেশে গেলেই শোনা যাবে ঝরনার পানি গড়িয়ে পড়ার অপরূপ নুপূরধ্বনি। দুই পাশে সুউচ্চ পাহাড়। সাঁ সাঁ শব্দে উঁচু পাহাড় থেকে অবিরাম শীতল পানি গড়িয়ে যাচ্ছে ছড়া দিয়ে। রূপসী ঝরনা প্রথম দেখেই তার রূপে পাগল হবে যে কেউ। মেঘের মতো উড়ে আসা শুভ্র এ পানি আলতো করে ছুঁয়ে দেখলেই এর শীতল পরশ মুহূর্তে ক্লান্তি ভুলিয়ে দেবে। টলটলে শান্ত পানির চুপচাপ বয়ে চলার ধরনই বলে দেবে এর উৎস অবশ্যই বিশাল কিছু থেকে। কিছুক্ষণের মধ্যেই পর্যটকেরা আবিষ্কার করবেন লাল আর নীল রঙের ফড়িঙের মিছিল! যত দূর পর্যন্ত ঝিরিপথ গেছে তত দূর পর্যন্ত তাদের মন মাতানো ঝিঁঝি পোকার গুঞ্জন শোনা যায়। রূপসী ঝরনার পানিতে গোসল করার লোভ সামলানো কারো পক্ষেই সম্ভব নয়।
মিরসরাই উপজেলার সর্ব দক্ষিণে বড় দারোগারহাটের উত্তরে পাহাড়ের কোল অবস্থিত এক দৃষ্টিনন্দন, অনিন্দ্যসুন্দর এক জলপ্রপাত। মিরসরাইয়ের অন্যান্য ঝরনাগুলোর চেয়ে এ ঝরনায় যাওয়া অনেকটাই সহজ।
রূপসী ঝরনায় যাবেন কীভাবে? : দেশের বিভিন্ন স্থান হতে যেকোনো বাসযোগে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের বড়দারোগাহাট বাজারে নামবেন। এরপর সিএনজি অটোরিক্সাযোগে বাজারের উত্তর পাশের ব্রিকফিল্ড সড়ক দিয়ে পাহাড়ের পাদদেশ পর্যন্ত যাবে। এরপর পায়ে হেঁটে ঝরনায় যাওয়া যাবেন। অথবা যে কোন বাস থেকে ব্রিকফিল্ড সড়কের মাথায় নেমে অটোরিক্সা ছাড়া আধা কিলোমিটার পথ পায়ে হেঁটে যেতে পারবেন।
খৈয়াছড়া ঝরনা : আর ঝরনা বা জলপ্রপাতের কলকল শব্দও মনে আশ্চর্য শান্তির পরশ বুলিয়ে দেবে। বর্ষায় ঝরনার আকর্ষণ অন্য সময়ের তুলনায় বাড়তি থাকে। তাই পর্যটকদেরও ঢল নামে। এবারের ঈদে অনেক পর্যটক আসবে বলে আশাবাদী ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা নুর উদ্দিন।
আকার আকৃতি ও গঠনশৈলির দিক দিয়ে বেশ বড় এই ঝরনা। এর মোট ৯টি মূল ধাপ ও অনেকগুলো বিচ্ছিন্ন ধাপ আছে। প্রকৃতির নান্দনিক তুলিতে আঁকা সৌন্দর্য দেখে মুগ্ধ হচ্ছে দেশের ভ্রমণপিপাসু মানুষ।
অনেকে রাতের বেলায় চাঁদের আলোয় ঝরনার অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করতে পাহাড়ের পাদদেশে তাবু টাঙিয়ে অবস্থান করেন। প্রকৃতির অপরূপ সৃষ্টি সেতুবন্ধন করে, সবুজের চাদরে ঢাকা বনানী রূপের আগুন ঝরায়। যেখানে প্রকৃতি খেলা করে আপন মনে।
মিরসরাই উপজেলার খৈয়াছড়া ইউনিয়নের বড়তাকিয়া বাজারের উত্তর পাশে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ৪.২ কিলোমিটার পূর্বে ঝরনার অবস্থান।
এর মধ্যে এক কিলোমিটার পথ গাড়িতে যাওয়ার পর বাকি পথ যেতে হবে পায়ে হেঁটে। বাঁশের সাঁকো, ক্ষেতের আইল, আঁকাবাকা পাহাড়ি পথ, ছড়া, অন্তত ৪টি পাহাড় পেরিয়ে যখন ঝরনার স্বচ্ছ পানিতে গা ভিজাবে পর্যটক, তখন মনে হবে পথের এ দূরত্ব খুব সামান্য।
ঝরনায় যাওয়ার সড়কটি দারুণ মনোমুগ্ধকর। গাড়ির রাস্তা পার হয়ে যখন হাঁটা শুরু করবেন এর চারপাশের দৃশ্য দেখে আপনি মুগ্ধ হতে বাধ্য হবেন। খানিকক্ষণ উঁচু-নিচু রাস্তা পার হয়ে একসময় এসে পড়বেন পাহাড়ি ঝিরিপথে।
এরপরই শুরু হবে আপনার আসল অ্যাডভেঞ্চার। আপনাকে ঝিরিপথ ধরেই এগিয়ে যেতে হবে। কখনো হাঁটুপানিতে পাথরের ওপর দিয়ে হাঁটবেন তো সেই পানিই কখনো কখনো আপনার কোমর ছাড়িয়ে বুক পর্যন্ত উঠে আসবে। আনুমানিক দেড় ঘণ্টার মতো হাঁটার পর আপনি ঝরনার কাছে পৌঁছে যাবেন।
কীভাবে যাবেন খৈয়াছড়া ঝরনায়? : ঢাকার যেকোনো বাস কাউন্টার থেকে চট্টগ্রামগামী বাসে উঠবেন। যাওয়ার পথে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মিরসরাই পৌরসদর পার হয়ে বড়তাকিয়া বাজারের আগে খৈয়াছড়া আইডিয়াল স্কুলের সামনে নামবেন।
ঢাকার ফকিরাপুল, সায়দাবাদ থেকে সোহাগ পরিবহন, গ্রীণ লাইন পরিবহন, সৌদিয়া পরিবহন, হানিফ এন্টারপ্রাইজ, টি আর ট্রাভেলসের বাস যায় চট্টগ্রাম। এ ছাড়া শ্যামলী, হানিফ, সৌদিয়া, ইউনিক, এস আলম ইত্যাদি পরিবহনের নন এসি বাসও চলে এ পথে। বারৈয়ারঢালা রেঞ্জের সব কটি ঝরনার ইজারা পেয়েছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এএইচ এন্টারপ্রাইজ। প্রতিষ্ঠানটির তত্ত্বাবধায়ক নাজমুল হাসান বলেন, ‘এবারের ঈদের ছুটিতে ঝরনাগুলো ভালো পর্যটক আসবেন বলে আশাবাদী। তবে সকল পর্যটকের কাছে অনুরোধ থাকবে তারা যেন সাথে গাইড নিয়ে যান। গাইড ছাড়া গেলে হয়তো অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা ঘটতে পারে।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমরা সব পর্যটককে সাথে গাইড নিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি, ঝরনার ঝুঁঁকিপূর্ণ স্থানে না যাওয়া, বিকেল ৫টার মধ্যে ঝরনা থেকে নিচে নেমে আসাসহ বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে থাকি।’
এ ছাড়াও এবারের ছুটিতে পর্যটকদের আগমন বাড়বে হরিনাকুণ্ড ঝরনা, নাপিত্তাছড়া ঝরনা, সোনাইছড়ি ঝরনা, বোয়ালিয়া ঝরনা, সোনাইছড়ি ঝরনা ও মেলখুম ট্রেইলে।


আরো সংবাদ



premium cement
পরোয়ানাভুক্ত আসামিদের গ্রেফতারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকা জানতে চায় ট্রাইব্যুনাল সুইজারল্যান্ডে থাকা সিরিয়ার হিমায়িত অর্থের পরিমাণ জানালো সুইস সরকার ইসরাইলি হামলায় ২১ জন নিহত : বেসামরিক প্রতিরক্ষা সংস্থা ২০২৪ সালে ৫৪ জন সাংবাদিককে হত্যা যাত্রাবাড়ী থানার ওসিকে ১৫ ডিসেম্বর জিজ্ঞাসাবাদ করবে তদন্ত সংস্থা ইন্টারনেট বিচ্ছিন্ন করার বিষয়ে পলককে জিজ্ঞাসাবাদ করবে তদন্ত সংস্থা র‍্যাবে আয়নাঘর ছিল, স্বীকার করলেন ডিজি আবারো গাজায় অবিলম্বে নিঃশর্ত যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব পাশ জাতিসঙ্ঘের ডিএসইতে মূল্যসূচক বাড়ল ১৪.৪৮ পয়েন্ট সিরিয়ায় বাশার সরকারের পতনে ইরানি মুদ্রার মান রেকর্ড তলানিতে নারায়ণগঞ্জে ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে কলেজেছাত্র আহত

সকল