নজর কাড়ছে ‘রাজা বাবু’ ও ‘কালো পাহাড়িয়া’
- আবুল কালাম
- ১৪ জুন ২০২৪, ০০:০৫
ঈদ ঘনিয়ে আসার সাথে সাথে রাজধানীর পশুর হাটগুলোতে ক্রেতার নজর কাড়তে মরিয়া বিক্রেতারা। তাই বাজারে আনা পশুগুলোকে মানুষের নামসহ এমন সব নাম দিচ্ছেন যা শুনে ক্রেতারা চমকে উঠছেন। এমনি দুটি গরু হলো ‘রাজা বাবু’ ও ‘কালো পাহাড়িয়া’। বাজারে আনার পর এগুলো মানুষের নজর কাড়ছে।
শনির আখড়া পশুর হাটে কুষ্টিয়ার মিরপুরের খামারি শাহীন আলম নিয়ে এসেছেন ‘রাজা বাবু’কে। দাম হাঁকাচ্ছেন ১২ লাখ টাকা। তিনি জানান এই গরুতে গোশত হবে ১৮ মণ। নামের রহস্য জানতে চাইলে শাহীন জানান, গরুটা একেবারে শান্ত। তার চালচলন রাজার মতো। এ জন্যই নাম দিয়েছেন রাজা বাবু।
শাহীন জানান, দুই বছর আগে এলাকার হাট থেকে প্রায় এক লাখ টাকায় এটি কিনেছিলেন। এত দিন লালন পালনে প্রতিদিন এর পেছনে খরচ করেছেন হাজার টাকা। এখন ১২ লাখ চাইলেও এ পর্যন্ত ৬ লাখ টাকা দাম উঠেছে। তবে প্রত্যাশিত দাম পেলেই বিক্রি করবেন।
অন্য দিকে সিরাজগঞ্জের কাজীপুরের খামারি কামাল হোসেন নিয়ে এসেছেন ‘কালো পাহাড়িয়া’। তার ভাষ্য, বিশাল আকারের এই গরুটা কালো পাহাড়ের মতো। তাই নাম দিয়েছেন ‘কালো পাহাড়িয়া’। এর দাম হাঁকাচ্ছেন ১০ লাখ টাকা। তার দাবি এতে গোশত হবে ২০ মনের কাছাকাছি। ৬ মাস বয়সে এলাকার হাট থেকে গরুটা কিনে দুই বছর লালন পালন করেছেন। এখন বাজারে আনলেও ট্রেড দাম প্রস্তাব করেননি। তবে ৬ লাখের কম তিনি বিক্রি করবেন না বলে জানান।
হাট কর্তৃপক্ষ জানান, রাজধানীর অন্যতম বড় পশুর এ হাটে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে গরু, ছাগল, মহিষ নিয়ে এসেছেন খামারিরা। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক ঘেঁষে, বর্ণমালা স্কুল রোড, শনির আখড়া, কাজলা, রায়েরবাগ সড়ক, শনির আখড়া-মৃধাবাড়ী সড়ক, শেখদী আব্দুল্লাহ মোল্লা স্কুল সড়কসহ এলাকার অলিগলিতে ছড়িয়ে পড়েছে হাট।
তাদের ভাষ্য, পশু বিক্রি এখনো শুরু হয়নি। আজ থেকে ক্রেতার দেখা মিলবে বলে তাদের প্রত্যাশা। তারা জানান, প্রতি ঈদুল আজহায় বিত্তবানরা বড় গরুর পাশাপাশি উট-দুম্বা কোরবানি দেন। তাদের জন্য বড় বড় গরু, দুম্বা, খাসি রাখা হলেও উট প্রস্তুত রাখার চেষ্টা চলছে।
এ দিকে আমের ট্রেনে গতকাল ঢাকায় আনা হয়েছে ৮১ গরু-ছাগল। বুধবার বিকেলে চাঁপাইনবাবগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশনে চতুর্থবারের মতো পশু পরিবহন কার্যক্রম শুরু হয়। এই স্টেশন থেকে ৪টি ওয়াগনে ৮১টি কোরবানির পশু ঢাকায় পাঠানো হয়। এর মধ্যে ৭১টি গরু বাকি ১০টি ছাগল। ফলে রেলওয়ের আয় হয় ৬১ হাজার ৮৮০ টাকা। বিশেষায়িত এ ট্রেন একটানা তিন দিন অর্থাৎ ১৪ জুন পর্যন্ত চালু থাকবে বলে জানিয়েছেন রেলওয়ের কর্মকর্তারা।
যমুনা সেতুর পরিবর্তে পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে এবার এই ট্রেনে গরু পরিবহন করা হচ্ছে। কম খরচে ঢাকায় পশু নিতে পেরে খুসি খামারিরাও। তাদের ভাষ্য, লাখ টাকা দিয়ে ট্রাক ভাড়া করে ২০-২২ ঘণ্টা পর গরু পৌঁছাবে ঢাকায়। এতে সময়ও লাগছে বেশি, টাকাও গুনতে হচ্ছে বেশি। অন্য দিকে ট্রেনে গাদাগাদি ছাড়া ঢাকায় গরু পরিবহন করা যায়। এতে গরুর কষ্ট হয় না, শারীরিকভাবে জখম হওয়ার সুযোগও নেই।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে ২০২১ সালের ১৭ জুলাই ক্যাটল স্পেশাল ট্রেন চালু হয়। খামারিদের ভোগান্তি কমাতে স্বল্প খরচে পশুবাহী ক্যাটল স্পেশাল ট্রেনটিতে প্রতিটি গরু পরিবহনে ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ৭৭৩ টাকা ৫০ পয়সা। প্রতিটি ওয়াগনে ২০টি করে গরু পরিবহন করা যাবে। আর প্রতিটি ওয়াগনের ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ১৫ হাজার ৪৭০ টাকা। যা গত বছর ছিল ১১ হাজার ৮৩০ টাকা। ট্রেনটি অন্যান্য বছর যমুনা সেতু দিয়ে পারাপার হতো। কিন্তু এবার পদ্মা সেতু দিয়ে ঢাকায় পৌঁছাবে এ ট্রেন। যেহেতু পদ্মা সেতু দিয়ে কিছুটা দূরে, তাই এই ট্রেনের ভাড়া ৩ হাজার ৬৪০ টাকা বাড়ানো হয়েছে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা