পরিবেশবাদী ১৬ সংগঠনের সমন্বয়ে সেমিনার
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ০৭ জুন ২০২৪, ০০:০৫
‘উষ্ণায়ন, খরা ও মরুকরণরোধে ভূমি ও জলাশয় রক্ষার এখনি সময়’ শীর্ষক সেমিনার পরিবেশ অধিদফতরের মিলনায়তনে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা), বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র (ক্যাপস)সহ পরিবেশবাদী ১৬টি সংগঠনের সমন্বয়ে অনুষ্ঠিত হয়। পরিবেশ অধিদফতরের মহাপরিচালক ড. আব্দুল হামিদের সভাপতিত্বে সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন জলবায়ু সংসদের সভাপতি ও সংসদ সদস্য তানভীর শাকিল জয়, বিশেষ অতিথি ছিলেন স্থপতি ইকবাল হাবিব এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ও জলবায়ু সংসদের সদস্য আমাতুল কিবরিয়া কেয়া চৌধুরী এমপি।
বাপার সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কবিরের সঞ্চালনায় সেমিনারে মূল প্রবন্ধ প্রদান করেন স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের বিজ্ঞান অনুষদের ডিন এবং ক্যাপসের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জমান মজুমদার এবং এলআরডির প্রোগ্রাম ম্যানেজার সানজিদা খান রিপা ও বেলার রিসার্চ কো-অর্ডিনেটর রেহমুনা নুরাইন।
সেমিনারে আরও বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক এম শহীদুল ইসলাম এবং ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট (ডব্লিউবিবি) ট্রাস্টের পরিচালক গাউস পিয়ারী প্রমুখ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে জলবায়ু সংসদের সভাপতি ও সংসদ সদস্য তানভীর শাকিল জয় সবাইকে পরিবেশ সচেতন হতে আহ্বান জানান। পরিবেশ দূষণকারী উপাদান প্লাস্টিকের বিরুদ্ধে কাজ করে এর রোধকল্পে সমাধান খুঁজে বের করার আহ্বান জানান এবং এটি সবার সহযোগিতায় কেবল সম্ভব বলে জানান।
তিনি আরো বলেন, আমাদের প্রতিটি কাজের বিপরীতমুখী চিন্তা করেই উন্নয়নের দিকে আগাতে হবে। শুধু সরকারের পক্ষে এটা সম্ভব নয়, সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। পরিবেশকে সংরক্ষণে রেখেই চিন্তা করতে হবে কিভাবে নতুন কিছু অর্জন করা যায়। পরিবেশের বিষয়ে সচেতন করতে হবে নিজেদেরকে। কোনটার প্রয়োজন আগে সে বিষয়েও জনসচেতনতা বাড়ানো দরকার। সবশেষে তিনি পরিবেশ সংরক্ষণে বাজেট বর্ধিত করার আগ্রহ প্রকাশ করেন।
মূল প্রবন্ধে ক্যাপসের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জমান মজুমদার বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন, খরা ও মানুষের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের ফলে উর্বর ভূমির ধীরে ধীরে মরুভূমিতে পরিণত হওয়ার প্রক্রিয়াই হচ্ছে মরুকরণ। ২০৫০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ উপকূলীয় অঞ্চলের প্রায় ১৭ শতাংশ এলাকা সমুদ্রে বিলীন হয়ে যেতে পারে। তিনি ঢাকার দক্ষিণ ও উত্তর করপোরেশন সিটির জলাশয় ও বৃক্ষ নিয়ে কথা বলে তুলনামূলক তথ্য প্রদান করেন।
বিশেষ অতিথি প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ও জলবায়ু সংসদের সদস্য আমাতুল কিবরিয়া কেয়া চৌধুরী এমপি পরিবেশ বিপর্যয়ে তার সংসদীয় এলাকার অবস্থা তুলে ধরে, সংশ্লিষ্ট সবাইকে পরিবেশ নিয়ে নিবেদিত হয়ে কাজ করার আহ্বান জানান। তিনি নিজের এলাকাসহ পুরো দেশের জন্য পরিবেশ রক্ষায় কাজ করার আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে স্থপতি ইকবাল হাবিব বলেন, পরিকল্পনার সাথে সাথে কোথা থেকে শুরু করতে হবে সে বিষয় চিহ্নিত করতে হবে। ব্যক্তি থেকে শুরু করে সরকারি অধিদফতর পর্যন্ত সবার এক সাথে কাজ করতে হবে, সরকারকে আরও শক্ত করে ক্ষমতা প্রয়োগ করে কথা বলতে হবে। পরিবেশ অধিদফতরকে আরও শক্তিশালী ভূমিকা পালন করার আহ্বান জানান তিনি।
সেমিনারে স্বাগত বক্তব্যে বাপার যুগ্ম সম্পাদক আমিনুর রসুল বলেন, বৃক্ষরোপণ দিয়ে কর্মসূচি শুরু হলেও, আমরা ১২ লাখ গাছ কর্তন করেছি এক বছরে, উষ্ণায়ন বৃদ্ধির অন্যতম কারণ এটি। ফলে, দাবদাহ শুরু হয়েছে, কৃষি সভ্যতায় আঘাত হেনেছে। টেকসই বর্জ্যরে বিরুদ্ধে কাজ করতে হবে। প্লাস্টিক উৎপাদন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করতে হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক এম শহীদুল ইসলাম নদী দখল, ভূমিগ্রাস, বালিগ্রাস, পানিদূষণ, বায়ুদূষণ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন।
সবশেষে সভাপতির বক্তব্যে পরিবেশ অধিদফতরের ডিজি ড. আব্দুল হামিদ পরিবেশ অধিদফতরের পরিবেশ বিষয়ক বিভিন্ন উদ্যোগ তুলে ধরেন, পাশাপাশি পরিবেশ নিয়ে কাজ করার আহ্বান জানান এবং এ ক্ষেত্রে প্রয়োজনে ফান্ড দিয়ে সহায়তার আশ্বাস দেন।
জাতীয় সংলাপে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এবং ক্যাপসের আইন পরিচালক অ্যাডভোকেট রাশেদুজ্জামান মজুমদারসহ ১৮টি সংগঠনের প্রতিনিধি ও অন্যান্য পরিবেশবাদী সংস্থার সদস্যরা।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা