১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

রানীনগর-আত্রাইয়ে ঝড়ে আড়াই শতাধিক বাড়িঘরের ক্ষতি উপড়ে গেছে শত শত গাছ

-

নওগাঁর রানীনগর ও আত্রাই উপজেলায় কয়েকটি গ্রামে ঝড়ে আড়াই শতাধিক বাড়িঘরের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। উপড়ে গেছে শত শত গাছ। এতে বিদ্যুতের তারে গাছপালা ভেঙে পড়ায় আত্রাইয়ে ১২০টি এবং রানীনগরে অন্তত ২০টি স্থানে তার ছিঁড়ে গেছে। ভেঙে গেছে কয়েকটি খুঁটি। এতে ঝড়ের পর থেকে বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত বেশ কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। বুধবার রাতে ঝড়বৃষ্টিতে এ ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার রাত অনুমান সাড়ে ৮টা নাগাদ ঝড়বৃষ্টি শুরু হয়। এ সময় প্রচণ্ড বেগে বয়ে যাওয়া ঝড়ে রানীনগর উপজেলা ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এর কিছু পরেই আত্রাই উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ঝড়বৃষ্টি শুরু হয়। বিভিন্ন এলাকায় ঝড়ে বাড়িঘরের ছাউনি, টিনের চালা উড়ে যায়। গাছপালা উপড়ে এবং ভেঙে পড়ে যায়। এতে ঝড়ের সময় থেকেই বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে এলাকাগুলো। এ ছাড়া রাস্তায় গাছপালা ভেঙে-উপড়ে পড়ার কারণে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা স্থানীয়দের সহায়তায় রাস্তা থেকে গাছপালা সরিয়ে চলাচল স্বাভাবিক করে। তবে বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টা পর্যন্ত এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ঝড়ের কবলে পড়া এলাকা স্বাভাবিক হয়নি বলে স্থানীয়রা জানান।
রানীনগর উপজেলার গোনা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল খালেক বলেন, তার ইউনিয়নের গোনা, চকবলরাম, ঝিনা, খাজুরিয়া, লক্ষ্মীপুরসহ বেশ কয়েকটি গ্রামে প্রায় ১২০টির মতো বাড়িঘরের ছাউনি, টিনের চালা উড়ে গিয়ে ক্ষতি হয়েছে। এ ছাড়া গাছপালা ভেঙে বিদ্যুতের তারের উপর পরে রাত থেকে এখন পর্যন্ত (বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টা) বিদ্যুৎহীন রয়েছে গ্রামগুলো। তবে এর সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে জানান তিনি। এ ব্যাপারে সরকারি সহায়তা কামনা করেছেন তিনি।
আত্রাই উপজেলার বিশা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান তোফাজ্জল হোসেন খান বলেন, রাতে বয়ে যাওয়া ঝড়বৃষ্টিতে তার ইউনিয়নের ভাঙ্গাজাঙ্গাল, বিশা, মোহনঘোষ, উদয়পুরসহ কয়েকটি গ্রামে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। তার ইউনিয়নে দেড় শতাধিক বাড়িঘরের টিনের চালা উড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মেম্বর এবং গ্রামপুলিশ দিয়ে তালিকা তৈরির কাজ চলছে।
ভাঙ্গাজাঙ্গাল গ্রামের এস কে রুবেল জানান, ঝড়ে তার বাড়িঘরের টিনের চালা উড়ে গেছে। এ ছাড়া তার গ্রামে আরো বেশ কয়েকটি ঘরবাড়ির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
আত্রাই পল্লীবিদ্যুৎ অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার আব্দুল আলিম বলেন, উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ঝড়ে গাছপালা ভেঙে তারের উপর পড়ে প্রায় ১২০টি স্থানে তার ছিঁড়ে গেছে। এ ছাড়া একটি খুঁটিও ভেঙে গেছে। রাত থেকেই গাছপালা সরিয়ে এবং লাইন মেরামত করে বিদ্যুৎ পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার প্রাণপণ চেষ্টা চলছে।
রানীনগর পল্লীবিদ্যুৎ অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার আকিয়াব হোসেন বলেন, ঝড়ে রানীনগর এলাকায় অন্তত ২০টি স্থানে বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে গেছে। এ ছাড়া একটি খুঁটিও ভেঙে গেছে।
আত্রাই উপজেলা ফায়ার সার্ভিস স্টেশন লিডার নেকবর আলী সরকার বলেন, ঝড়ের কারণে গাছপালা উপড়ে-ভেঙে রাস্তায় চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে। এর মধ্যে আত্রাই-সিংড়া রাস্তায় বেশি গাছপালা ভেঙে পড়ে। রাত ২টা থেকে একটানা সকাল সাড়ে ৯টা পর্যন্ত স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় রাস্তা থেকে গাছ সরিয়ে চলাচল স্বাভাবিক করা হয়েছে।
রানীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে তাবাস্সম এবং আত্রাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সঞ্চিতা বিশ্বাস বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের তালিকা করতে এলাকার চেয়ারম্যান-মেম্বারদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তালিকা পেলে সরকারি সহায়তার জন্য ত্রাণ ও দুর্যোগ অধিদফতরে পাঠানো হবে।


আরো সংবাদ



premium cement