মৃত্যুদণ্ড বহাল ২ আসামির
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ০৫ জুন ২০২৪, ০১:১৭
রাজধানীর সূত্রাপুরের আলোচিত আশিকুর রহমান খান অপু হত্যা মামলায় দুই আসামির মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। এই দুই আসামি হলো মঞ্জুরুল আবেদীন রাসেল ও নওশাদ হোসেন মোল্লা রবিন।
এ ছাড়া হাইকোর্টে খালাস পাওয়া এ মামলার আসামি ইফতেখার বেগ ঝলককে আমৃত্যু কারাদণ্ড ও মোহাম্মদ আলী মুন্নাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আপিল বিভাগ। আসামি মোহাম্মদ আলী মুন্না জামিনে থাকায় তাকে ৩০ দিনের মধ্যে আত্মসমর্পণ করতে বলা হয়েছে।
মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে চার বিচারপতির আপিল বিভাগের বেঞ্চ এ রায় দেন।
আদালতে আসামিপক্ষে ছিলেন সিনিয়র আইনজীবী মনসুরুল হক চৌধুরী ও আইনজীবী সারোয়ার আহমেদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুর্টি অ্যাটর্নি জেনারেল সারওয়ার হোসেন বাপ্পী।
আপিল বিভাগের রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন মামলার বাদি ও অপুর বোন আতিয়া খান কেয়া। মঙ্গলবার রায় ঘোষণার পর তিনি বলেন, ১৭ বছরের আইনি লড়াই শেষে আজ সর্বোচ্চ আদালতে ন্যায়বিচার পেয়েছি। ১৭ বছর আগে ভাইকে নির্মমভাবে খুন হতে দেখেছি। তারপর থেকে একা লড়াই করে এসেছি। প্রতি মুহূর্তে হুমকি পেয়েছি। অবশেষে সত্যের জয় হয়েছে। আমরা ন্যায়বিচার পেয়েছি। আদালতের কাছে, রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীদের, আমাদের আইনজীবীদের কাছে আমি কৃতজ্ঞ। এখন দ্রুত আসামিদের দণ্ড যেন কার্যকর হয়, সরকারের কাছে সেই দাবি করছি।
২০১৮ সালের মে মাসে রাজধানীর সূত্রাপুরের আশিকুর রহমান খান অপু হত্যা মামলায় দুই আসামির মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখেন হাইকোর্ট। এ ছাড়া নি¤œ আদালতে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামিকে খালাস দেন আদালত। এ মামলার অপর দুই আসামি পলাতক থাকায় তাদের বিষয়ে কোনো আদেশ দেননি হাইকোর্ট। বিচারপতি রুহুল কুদ্দুস ও বিচারপতি ভীষ্মদেব চক্রবর্তীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন। পরে রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন আসামিরা। একই সাথে খালাসের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ।
২০১২ সালের ১৩ মার্চ সূত্রাপুরের আশিকুর রহমান খান অপু হত্যা মামলায় দুই আসামিকে মৃত্যুদণ্ড ও আপর চার আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন বিচারিক আদালত। ঢাকার একনম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক শাহেদ নূর উদ্দিন এ রায় দেন। পরে এ রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেন আসামিরা।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০০৮ সালের ২৩ মে সন্ধ্যায় সূত্রাপুর থানার ৪/১ ওয়ারী হেয়ার স্ট্রিটের বাসা থেকে সন্ত্রাসীরা অ্যাডভোকেট রইস উদ্দিনের ছেলে ও আশিকুর রহমান খান অপুর ভাই আরিফুর রহমান খান সেতুকে মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে মারতে মারতে স্থানীয় সিলভারডেল স্কুলের মাঠে নিয়ে যায়। খবর পেয়ে আশিকুর রহমান খান অপু ও আতিকুর রহমান খান বাপ্পী সেখানে গেলে সন্ত্রাসীরা তাদের এলোপাতাড়ি গুলি করে। এরপর তারা তিন ভাইয়ের মৃত্যু নিশ্চিত মনে করে গুলি করতে করতে চলে যায়। পরে স্থানীয় লোকজন মারাত্মক আহত অবস্থায় তিন ভাইকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক অপুকে মৃত ঘোষণা করেন। অপর দুই ভাই বেঁচে গেলেও চিরতরে পঙ্গু হয়ে যান। এ ঘটনায় নিহতের বোন আতিয়া খান কেয়া বাদি হয়ে সূত্রাপুর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক মাকসুদুর রহমান ২০০৮ সালের ৩১ আগস্ট ওই সাত আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। অভিযোগপত্র থেকে জানা যায়, আসামিরা ১২ লাখ টাকা চাঁদার দাবিতে এ হত্যাকাণ্ড ঘটান। ২০০৯ সালের ১২ এপ্রিল আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা