১৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

ঢাকায় কোরবানি গরুর প্রতি পিস চামড়ার দাম ১২০০ টাকা নির্ধারণ

-

আসন্ন পবিত্র ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে কোরবানির পশুর চামড়ার দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে সরকার। এ বছর ঢাকায় লবণযুক্ত গরুর চামড়ার প্রতি বর্গফুটে দাম গত বছরের তুলনায় বেড়েছে সর্বোচ্চ পাঁচ টাকা, আর ঢাকার বাইরে সর্বোচ্চ সাত টাকা বাড়ানো হয়েছে।
এর ফলে এ বছর ঢাকায় লবণযুক্ত গরুর চামড়ার দাম প্রতি বর্গফুট নির্ধারণ করা হয়েছে ৫৫ থেকে ৬০ টাকা। ঢাকায় প্রতি পিস চামড়ার সর্বনিম্ন দাম হবে এক হাজার ২০০ টাকা। অন্য দিকে ঢাকার বাইরে লবণযুক্ত প্রতি বর্গফুট গরুর চামড়ার দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৫০ থেকে ৫৫ টাকা। গত বছর এ দাম ছিল ৪৫ থেকে ৪৮ টাকা। এ বছর লবণযুক্ত প্রতি পিস গরুর চামড়ার সর্বনিম্ন দাম হবে এক হাজার টাকা।
গতকাল সোমবার সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে গরুর চামড়ার দাম ঘোষণা দেন বাংলাদেশ ফিনিশড লেদার, লেদারগুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ। কাঁচা চামড়ার মূল্য নির্ধারণ ও সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত সভা শেষে তিনি এ ঘোষণা দেন।
এ সময় অন্যদের মধ্যে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু, বাণিজ্য সচিব সেলিম উদ্দিন, বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শাহীন আহমেদসহ সরকারের বিভিন্ন দফতরের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। উল্লেখ্য, প্রতি বছর বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কোরবানির গরুর চামড়ার দাম নির্ধারণ করে থাকে। তবে এবার সরকারের সাথে আলোচনা করে দাম নির্ধারণ করলেন ব্যবসায়ীরা। তবে এই দামে চামড়া কেনাবেচা হয় কি না তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। কারণ প্রতিবার সরকার নির্ধারিত দামে খুব কম সময় চামড়া বিক্রি হয়ে থাকে। কোরবানিকৃত পশু চামড়া নায্যমূল্য পাওয়া এখন দুরূহ হয়ে পড়েছে।
প্রতি পিস চামড়ার সর্বনিম্ন দাম নির্ধারণ করার বিষয়ে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রান্তিক, বিশেষ করে মফস্বল গ্রামে যারা কোরবানি দেন তারা চামড়ার দাম সম্পর্কে তেমন ভালো জানেন না। যারা ঢাকা, ঢাকার আশপাশে তাদের নলেজটা অনেক বেশি থাকে। তিনি বলেন, অনেকে স্কয়ার ফুট বোঝে না। ছোট যে গরু কোরবানি হয়, আমি উনাদের জিজ্ঞাসা করেছি ওনারা বলেছেন অনুমানিক ১৮ থেকে ২০ স্কয়ার ফুট চামড়া হয়। এবার আমরা প্রতি বর্গফুটের পাশাপাশি লবণযুক্ত ছোট প্রতি পিস চামড়ার সর্বনিম্ন দাম নির্ধারণ করতে বলেছি।

সংবাদ সম্মেলনে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, চামড়া যেহেতু ট্যানারি মালিকেরা কেনেন, তাই এবার দাম ঘোষণা করবেন অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা। এরপর গরু, খাসি ও বকরির চামড়ার দাম ঘোষণা করেন মহিউদ্দিন আহমেদ।
মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, সারা দেশে খাসির চামড়ার প্রতি বর্গফুটের দাম হবে ২০ থেকে ২৫ টাকা। এ ছাড়া বকরির চামড়ার দাম হবে প্রতি বর্গফুটে ১৮ থেকে ২০ টাকা। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্র বলছে, গত বছর খাসির চামড়ার দাম ছিল বর্গফুটে ১৮ থেকে ২০ টাকা, আর বকরির ১২ থেকে ১৪ টাকা।
সংবাদ সম্মেলনে বাণিজ্যসচিব বলেন, এ বছর এক কোটি ২৯ লাখ পশু কোরবানির জন্য প্রস্তুত আছে। গত বছর এক কোটি এক লাখ পশু কোরবানি হয়েছে। দেশের বাজার ও আন্তর্জাতিক বাজার পর্যালোচনা করে চামড়ার দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। এ সময় ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শাহীন আহমেদ লবণ সরবরাহ ব্যবস্থা যাতে সহজ হয়, সরকারের প্রতি সেই আহ্বান জানান।
প্রতি বছর সরকার চামড়ার দাম নির্ধারণ করলেও মানুষ সে দাম পায় না, সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, এবার ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদফতর নজরদারি করবে, সরকারের বিভিন্ন সংস্থা নজরদারি করবে। এখানে সরকারের ভাবমূর্তি নির্ভর করে। তাই কম দামে বিক্রি হবে না।
মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, পশু জবাইয়ের পর ৪ ঘণ্টার মধ্যে লবণ দিতে হবে। চামড়া বাঁচানো আমাদের সবার দায়িত্ব।

 

 


আরো সংবাদ



premium cement