চাকরি নিশ্চিত করে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার খুলবে : হাইকমিশনার
- কূটনৈতিক প্রতিবেদক
- ৩০ মে ২০২৪, ০০:৫৪
মালয়েশিয়ার হাইকমিশনার হাজনা হাশিম বলেছেন, জাতীয় নিরাপত্তা ও সীমান্ত সুরক্ষার জন্য মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার বন্ধ করা হয়েছে। অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি সামাল দিতে কিছু সময় লাগবে। ভবিষ্যতে চাকরি নিশ্চিত করে চাহিদার ভিত্তিতে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার আবারো খুলে দেয়া হবে।
তিনি বলেন, মালয়েশিয়ায় প্রচুর অবৈধ শ্রমিক রয়েছে। এ সব শ্রমিক জরিমানা দিয়ে নিজ দেশে ফিরতে পারেন। অনিয়মের মাধ্যমে শ্রমিক পাঠানোর সাথে জড়িত সিন্ডিকেট ভাঙতে বাংলাদেশ সরকারের সহায়তায় কাজ করছে মালয়েশিয়া।
গতকাল রাজধানীর এক হোটেলে বাংলাদেশ কূটনৈতিক সংবাদদাতা সমিতির (ডিকাব) সাথে মতবিনিময়ে এক প্রশ্নের জবাবে হাজনা হাশিম এ সব কথা বলেন। মালয়েশিয়ার বিশ্বমানের স্বাস্থ্যসেবা ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর আলোকপাত করতে হাইকমিশন এ মতবিনিময়ের আয়োজন করে।
বাংলাদেশীদের জন্য শ্রমবাজার বন্ধে পূর্ব ঘোষিত ৩১ মে’র পর সময়সীমা বাড়ানো হবে কি না জানতে চাইলে হাইকমিশনার বলেন, কাজের পরিবেশ ভালো করার জন্য মালয়েশিয়া সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। শুধু বাংলাদেশ নয়, ১৫টি দেশ থেকে মালয়েশিয়া শ্রমিক নেয়। বর্তমানে বৈধ-অবৈধ মিলিয়ে প্রায় ৩০ লাখ বিদেশী শ্রমিক মালয়েশিয়ায় রয়েছে। শ্রমবাজার বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয়ার পেছনে অবশ্যই মালয়েশিয়া সরকারের যথেষ্ট কারণ রয়েছে। ৩১ মে’র পর সময়সীমা বাড়ানো হবে কি না তা আমাদের সরকারের উচ্চ পর্যায়ের সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশের শ্রমিকরা মালয়েশিয়ার অর্থনীতিতে অবদান রাখছেন। শ্রমবাজারের ক্ষেত্রে যে চ্যালেঞ্জগুলো রয়েছে, তা উত্তরণের জন্য দুই দেশের সরকার সচেষ্ট।
মেডিক্যাল ট্যুরিজমের ওপর আলোকপাত করে হাজনা হাশিম বলেন, বাংলাদেশ থেকে অনেকেই চিকিৎসার জন্য আমাদের আশপাশের দেশে যান। বর্তমানে মালয়েশিয়া আন্তর্জাতিক মানের স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে থাকে, যা দামেও বেশ সাশ্রয়ী। স্বাস্থ্যসেবা দানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর সরকারের কঠোর নজরদারি রয়েছে। হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসার সফলতার হারও বেশ ভালো। মালয়েশিয়ায় মোট ৮৮টি হাসপাতাল রয়েছে। এর মধ্যে ২২টি হাসপাতাল বিশ্বমানের। চিকিৎসার জন্য রোগীদের সহায়তা করতে মালয়েশিয়ার কয়েকটি হাসপাতাল বাংলাদেশে অফিস খুলবে।
হাইকমিশনার বলেন, মালয়েশিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বাংলাদেশী শিক্ষার্থীদের কাছে অপরিচিত নয়। অপেক্ষাকৃত কম থাকা-খাওয়ার খরচ ও নিরাপদ পরিবেশে এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বাংলাদেশী শিক্ষার্থীরা পড়ালেখা করতে পারে। মালয়েশিয়ায় মোনাশসহ বেশ কয়েকটি বিদেশী বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস রয়েছে। আবার ইউসিএসআই নামের মালয়েশিয়ার একটি বিশ্ববিদ্যালয় রাজধানীর বনানীতে ক্যাম্পাস খুলেছে। বিশ্বে এই বিশ্ববিদ্যালয়টির র্যাংকিং ২৮৪।
হাজনা হাশিম বলেন, মালয়েশিয়ার ভিসা সহজীকরণের পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। বর্তমানে ওয়েবসাইটের মাধ্যমে দুই হাজার ৬০০ টাকা ব্যয়ে ইলেক্ট্রনিক পদ্ধতিতে মালয়েশিয়ার সিঙ্গেল এন্ট্রি ভিসার জন্য আবেদন করা যায়। ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে এই অর্থ পরিশোধ করতে হয়। অনেক সময় ট্রাভেল এজেন্টরা ভিসার জন্য বাড়তি টাকা নিয়ে থাকে। আবার অনেক ট্রাভেল এজেন্ট ভিসা হয়ে যাওয়ার পরও অতিরিক্ত সুবিধা আদায়ের জন্য নির্ধারিত সময়ে পাসপোর্ট ফেরত দেয় না। এই সমস্যা এড়াতে ইলেক্ট্রনিক ভিসা পদ্ধতি চালু করা হয়েছে। তবে শ্রমিকরা এই পদ্ধতিতে ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন না। মালয়েশিয়া এয়ারলাইন্সে ঢাকা-কুয়ালালামপুর রুটে রিটার্ন টিকিটের মূল্য চারগুণ বেড়ে যাওয়ার কারণ জানতে চাইলে হাইকমিশনার বলেন, টিকিটের মূল্য নির্ভর করে চাহিদা ও সরবরাহের ওপর। এ ছাড়া আমাদের এয়ারলাইন্সগুলো টিকিট বিক্রির অর্থ বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়ায় নিতে যথেষ্ট বেগ পাচ্ছে। এটাও টিকিটের মূল্য বৃদ্ধির একটি কারণ।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা