১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`
দুর্নীতির অভিযোগ

সরিয়ে দেয়া হলো কৃষি সম্প্রসারণের দুই প্রকল্প পরিচালককে

-

অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ মাথায় নিয়ে বিদায় নিতে হলো কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের (ডিএই) দুই প্রকল্প পরিচালককে (পিডি)। গতকাল মঙ্গলবার কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে ডিএইর গুরুত্বপূর্ণ দুই প্রকল্পের পিডিকে সরিয়ে নতুন দুই কর্মকর্তাকে নিয়োগ দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। সরিয়ে দেয়া পিডিরা হলেন- ‘সমন্বিত ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে কৃষি যান্ত্রিকীকরণ’ প্রকল্পের তারিক মাহমুদুল ইসলাম ও কেন্দ্রিয় প্যাকিং হাউজে স্থাপিত উদ্ভিদ সংগনিরোধ ল্যাবরেটরিকে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন ল্যাবরেটরিতে রূপান্তর (প্রথম সংশোধিত) প্রকল্পের ড. শামীম আহমেদ। উপপরিচালক মর্যাদার এই দুই পিডিকে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের সদর দফতর তথা খামারবাড়িতে এলআর হিসেবে পদায়ন করা হয়েছে। ডিএই সূত্রে জানা যায়, খামারবাড়িতে এলআর অর্থ ওএসডি।
প্রায় তিন হাজার ২০ কোটি টাকা ব্যয়ে বাস্তবায়নাধীন ‘সমন্বিত ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে কৃষি যান্ত্রিকীকরণ’ প্রকল্পের পরিচালক নিয়োগ পেয়েছেন মোহাম্মদ সফিউজ্জামান। তিনি ডিএই’র হর্টিকালচার উইংয়ে (কন্দাল ও মসলাজাতীয় ফসল) উপপরিচালক ছিলেন। অন্যদিকে, কেন্দ্রীয় প্যাকিং হাউজে স্থাপিত উদ্ভিদ সংগনিরোধ ল্যাবরেটরিকে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন ল্যাবরেটরিতে রূপান্তর (প্রথম সংশোধিত) প্রকল্পের পরিচালক নিযুক্ত হয়েছেন এস এম খালিদ সাইফুল্লাহ। তিনি রাজধানীর শ্যামপুরস্থ কেন্দ্রীয় প্যাকিং হাউজে উপপরিচালক ছিলেন। প্রায় ১৫৮ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হচ্ছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ থাকায় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের আরো কমপক্ষে তিনটি প্রকল্পের পিডির পরিবর্তন হচ্ছে বলে গুঞ্জন রয়েছে। ডিএই সূত্রে জানায়, ‘সমন্বিত ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে কৃষি যান্ত্রিকীকরণ’ ও ‘কেন্দ্রীয় প্যাকিং হাউজে স্থাপিত উদ্ভিদ সংগনিরোধ ল্যাবরেটরিকে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন ল্যাবরেটরিতে রূপান্তর (প্রথম সংশোধিত)’ প্রকল্পের পরিচালক এর আগে আরেকবার পরিবর্তন হয়েছে। শুরু থেকেই এ দুটি প্রকল্পে নানা অনিয়মের অভিযোগ ওঠে। বিশেষ করে কৃষির দ্বিতীয় বৃহৎ প্রকল্প ‘সমন্বিত ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে কৃষি যান্ত্রিকীকরণ’র হারভেস্টার সরবরাহসহ বিভিন্ন খাতে চরম দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে তৎকালীন পিডি বেনজীর আহমেদের বিরুদ্ধে। পরবর্তীতে তিনি ডিএই’র মহাপরিচালক হিসেবে অবসরে যান। পিডি হিসেবে নিয়োগ পান বিসিএস ১৮ম (কৃষি) ব্যাচের কর্মকর্তা তারিক মাহমুদুল ইসলাম। গত দুই বছরে তার আমলেও ব্যাপক অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। কৃষি মন্ত্রণালয় ও দুর্নীতি দমন কমিশন থেকে আলাদাভাবে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। সর্বশেষ হাওর জেলা নেত্রকোনায় হারভেস্টার বিতরণে চরম অনিয়মের অভিযোগ ওঠে। এই জেলায় কৃষকদের মধ্যে বিতরণকৃত হারভেস্টার তালিকায় ৭০ শতাংশই ভুয়া বলে অভিযোগ পাওয়া যায়। কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে এ নিয়ে আলাদা তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। জানা যায়, আগের অভিযোগের পাশাপাশি নেত্রকোনায় হারভেস্টার বিতরণ নিয়ে চরম অনিয়মের বিষয়টি গুরুত্ব পায় সংশ্লিষ্টদের কাছে। তাই তাকে সরিয়ে দেয়া হয় প্রকল্প থেকে।
অন্যদিকে, অনিয়মের অভিযোগ তুলে ‘কেন্দ্রীয় প্যাকিং হাউজে স্থাপিত উদ্ভিদ সংগনিরোধ ল্যাবরেটরিকে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন ল্যাবরেটরিতে রূপান্তর (প্রথম সংশোধিত)’ প্রকল্পের প্রথম পিডি ড. জগত চাঁদ মালাকারকে সরিয়ে দেয় কৃষি মন্ত্রণালয়। যদিও পরবর্তীতে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি বলে জানা যায়। ড. মালাকারকে সরিয়ে পিডি নিয়োগ দেয়া হয় বিসিএস ২৭ ব্যাচের (কৃষি) ড. শামীম আহমেদকে। শেষ পর্যন্ত তাকেও সরিয়ে দেয়া হলো টেন্ডারসহ বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগে।


আরো সংবাদ



premium cement