‘দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে সমানভাবে আইন প্রয়োগ করতে হবে’
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ২৬ মে ২০২৪, ০১:২৯
দুর্নীতি দমনে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) প্রেসিডেন্ট সিনিয়র অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ সংগঠনের পক্ষ থেকে ১৯ দফা সুপারিশ তুলে ধরেছেন। শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ (এইচআরপিবি) আয়োজিত ‘দুর্নীতি দমনে নাগরিকদের ভূমিকা’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এসব সুপারিশ তুলে ধরেন।
১৯ দফা সুপারিশে বলা হরয়েছে- দলমত, পেশা, এলাকা এবং ব্যক্তি পরিচিতির ঊর্ধ্বে উঠে দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে সমানভাবে আইন প্রয়োগ করার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। দুদকের প্রত্যেক মামলা তদন্তের ক্ষেত্রে দুদকের আইন ও বিধি সুনির্দিষ্টভাবে অনুসরণ করতে হবে, ব্যত্যয় ঘটলে কমিশন কর্তৃক তদন্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। উচ্চপদস্থ ও প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ হলে সে ক্ষেত্রে অনুসন্ধান, তদন্ত দ্রুত সময় শেষ করার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
বিদেশে অর্থ পাচার বা ব্যাংকের অর্থ আত্মসাতের সাথে জড়িতদের তথ্য দুদকের কাছে আসলে বা মিডিয়ায় প্রকাশিত হলে কমিশনকে গুরুত্বসহকারে ব্যবস্থা নিতে হবে এবং তাদের ভ্রমণ, গাড়ি ব্যবহার, ব্যাংকের লেনদেন বন্ধ রাখার জন্য প্রয়োজনীয় আইনি বিধান সংযোজন করার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। ইতঃপূর্বে অনেক দুর্নীতিবাজের বিরুদ্ধে সঠিকভাবে অনুসন্ধান না করায় ঢালাওভাবে অব্যাহতি পেয়েছেন এবং এ বিষয় মিডিয়ায়ও সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। মিডিয়ার তথ্য বিবেচনায় নিয়ে অব্যাহতিপ্রাপ্ত উচ্চপদস্থ ও প্রভাবশালীদের বিষয় নথি পুনরায় অনুসন্ধানের আওতায় আনার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
এইচআরপিবির প্রেসিডেন্ট সিনিয়র অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ, বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস ফোরাম বাংলাদেশ-এর প্রেসিডেন্ট হুমায়ুন রশিদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শেখ হাফিজুর রহমান কার্জন, সাবেক সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার শামিম হায়দার এবং এটিএন বাংলার প্রধান নির্বাহী সম্পাদক জ ই মামুন। যৌথভাবে সভা পরিচালনা করেন এইচআরপিবির সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট মো: ছারওয়ার আহাদ চৌধুরী ও ভাইস প্রেসিডেন্ট অ্যাডভোকেট একলাছ উদ্দিন ভুঁইয়া।
দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ বলেছেন, দুর্নীতি রেখে উন্নয়ন হলেও তা কখনো টেকসই হবে না। নাগরিকরা যদি দায়িত্ব পালনে সচেতন হন এবং পারিবারিক পর্যায়ে দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে ভূমিকা রাখেন তবে ফলাফল আশাপ্রদ হবে। তিনি বলেন, অধিকাংশ অভিযোগে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য থাকে না, যার কারণে কোনো প্রমাণ ছাড়া মামলা দায়ের সম্ভব হয় না। তিনি আরও বলেন, সরকারি প্রতিষ্ঠানে যদি সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন হয় তবে দুদকে অভিযোগই আসবে না। তিনি বলেন, নাগরিকরা সচেতন না হলে দুর্নীতি কমানো সম্ভব হবে না।
ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস ফোরাম বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট হুমায়ুন রশিদ বলেন, বর্তমানে কিছু নতুন ব্যবসায়ী যারা আগে কখনো ব্যবসা করেননি তারা প্রচুর অর্থের মালিক হয়েছেন। তিনি বলেন, মানিলন্ডারিংয়ের সাথে ব্যবসায়ী, সরকারি কর্মচারী, আমলা, রাজনীতিবিদ অনেকেই জড়িত।
সাবেক সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার শামিম হায়দার বলেন, দুর্নীতির ছোট ঘটনা তদন্ত না করে বড় ঘটনা তদন্ত করা প্রয়োজন। তিনি আরও বলেন, ব্যাংক লোনের মাধ্যমে হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট করে কিছু প্রভাবশালী সবচেয়ে বড় দর্নীতির ঘটনা সৃষ্টি করেছেন।