আজিজ ও বেনজীরের দুর্নীতির অংশীদার সরকারও : দুদু
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ২৫ মে ২০২৪, ০২:০৬
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল (অব:) আজিজ আহমেদ ও সাবেক পুলিশপ্রধান বেনজীর আহমেদের দুর্নীতির অংশীদার বর্তমান সরকারও। তিনি বলেন, ‘ডাইরেক্টলি না হলেও ইনডাইরেক্টলি এই সরকারও তাদের সাথে জড়িত।’
গতকাল শুক্রবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এক প্রতিবাদ অবস্থান কর্মসূচিতে এসব কথা বলেন তিনি।
বিএনপি চেয়ারপারসন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে সব মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং সুলতান সালাউদ্দিন টুকু ও ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেনসহ সব রাজবন্দীর মুক্তির দাবিতে এ অবস্থান কর্মসূচির আয়োজন করে গণতন্ত্র ফোরাম।
দুদু বলেন, ‘সাবেক সেনাপ্রধান আজিজ সপরিবারে মার্কিন নিষেধাজ্ঞার মুখোমুখি হয়েছেন। তার মাধ্যমে ২০১৮ সালে আওয়ামী লীগ সরকার নির্বাচনী নদী পার হয়েছিল। এক সময়ের পুলিশপ্রধান বেনজীর আহমেদের সম্পদ এবং ব্যাংক হিসাব জব্দ করার জন্য বলেছে কোর্ট। তিনি শুধু আওয়ামী লীগের সমর্থকই ছিলেন না, তার ঘাড়ে চেপে পুলিশের সমর্থনে সরকার গঠন করেছে তারা।’
তিনি আরো বলেন, ‘সরকার বড় বিপদে আছে। গতকাল প্রধানমন্ত্রী ‘সাদা চামড়া’ প্রসঙ্গে যে কথা বলেছেন সেটি অত্যন্ত মারাত্মক। প্রধানমন্ত্রীকে জাতির সামনে এ বিষয়টি স্পষ্ট করে বিবৃতি দেয়ার দাবি জানাচ্ছি। সাদা চামড়া বলতে তিনি কাদেরকে বুঝিয়েছেন?’
প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে বিএনপির এ নেতা বলেন, ‘আজকে আপনি বাংলাদেশের রাস্তা-ঘাট, বন্দর পার্শ্ববর্তী দেশকে ‘দিয়ে দিয়েছেন’। আপনি নিজেও স্বীকার করেছেন ভারতকে আপনি এমন কিছু দিয়েছেন যেটি ভারত কখনোই ভুলতে পারবে না। সাদা চামড়া বলতে আপনি কাদেরকে বুঝিয়েছেন? তারা নতুন রাষ্ট্র বানাতে চাচ্ছে- এই কথাটি আপনাকে পরিষ্কার করতে হবে। কারণ এই কথার মধ্যে আমাদের জাতীয় স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের প্রশ্ন আছে। স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব থাকবে কি না সেটার প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।’
ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার প্রসঙ্গ টেনে দুদু বলেন, ‘আনার স্বর্ণ চোরাচালানসহ অনেক অবৈধ কাজের সাথে জড়িত ছিল। এসব ব্যক্তি কিভাবে জাতীয় সংসদের সদস্য হয়?’
ছাত্রদলের সাবেক এই সভাপতি বলেন, ‘চারদিকের যে পরিস্থিতি এখন সরকারের অস্তিত্ব নিয়ে টান পড়েছে। সরকার থাকবে কি না, কবে যাবে, কত তারিখে পদত্যাগ করবে এই প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। এর পরেও আমি সরকারপ্রধানকে বলবো, বাংলাদেশকে রক্ষা করার জন্য আপনি পদত্যাগ করে বিরোধী দলের সাথে আলোচনা করে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের ক্ষমতা জনগণের হাতে দিয়ে দেন। তাহলে হয়তো রেহাই পেলে পেতেও পারেন।’
বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেন, ‘এ দেশে বেগম খালেদা জিয়াকে যারা মিথ্যা মামলায় তথাকথিত বিচারের নামে ছয়টি বছর জেলখানায় বন্দী রেখেছে, তাদের আগামী দিনে জনতার কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে। এ দেশের ব্যাংকগুলো লোপাট করে দেশটাকে ধ্বংস করে দেয়া হচ্ছে। তাদেরকে একদিন বিচারের মুখোমুখি হতে হবে। দেশকে রক্ষা করার জন্য হলেও সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে রাস্তায় নেমে আসতে হবে। ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে।’
এ সময় আরো বক্তব্য রাখেন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ইমরান সালেহ প্রিন্স, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাছের মোহাম্মদ রহমতুল্লাহ, ওলামা দলের সদস্যসচিব অ্যাডভোকেট মাওলানা আবুল হোসেন, তাঁতী দলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক কাজী মনিরুজ্জামান মনির, কৃষকদলের সহ-সাধারণ সম্পাদক এম জাহাঙ্গীর, মৎস্যজীবী দলের সদস্য ইসমাইল হোসেন সিরাজী, যুব জাগপার সভাপতি মীর আমির হোসেন আমু প্রমুখ।
ডামি সরকারের তথাকথিত সংসদ সদস্যরাও আজ নিরাপদ নয় : ডা: শাহাদাত
চট্টগ্রাম ব্যুরো জানায়, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক ডা: শাহাদাত হোসেন বলেছেন, ভারতের পশ্চিমবঙ্গে ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম নৃশংস হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন। তিনি সাধারণ কোনো নাগরিক নয়, আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য বিদেশে গিয়ে খুন হয়ে গেলেন। অথচ এখনো পর্যন্ত তার লাশ উদ্ধার করতে পারেনি সরকার। আজকে ডামি সরকারের তথাকথিত সংসদ সদস্যরাও নিরাপদ নয়। তা ছাড়া সেনাবাহিনীর সাবেক প্রধান জেনারেল (অব:) আজিজ আহমেদের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা ও সাবেক পুলিশ প্রধান বেনজীর আহমেদের সম্পত্তি ক্রোক এবং ব্যাংক হিসাব ফ্রিজ করার আদালতের আদেশ জাতির জন্য লজ্জার। এর জন্য সম্পূর্ণভাবে দায়ী এই সরকার। তারা প্রশাসনকে অন্যায়ভাবে ব্যবহার করার কারণে এ ঘটনা ঘটেছে। এভাবে দেশ ও জাতির মর্যাদা সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে। সেনাবাহিনী হচ্ছে সবচেয়ে ভরসার একটা প্রতিষ্ঠান। সেই সেনাবাহিনীকে আওয়ামী লীগের কারণে হেয়প্রতিপন্ন করা হলো। এটা কখনোই এ দেশের মানুষ মেনে নেবে না। দেশের সম্মানকে এভাবে কেড়ে নেয়ার অধিকার কারো নেই।
তিনি গতকাল শুক্রবার বিকেলে নাসিমন ভবনের দলীয় কার্যালয়ের মাঠে আগামী ৩০ মে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৪৩তম শাহাদতবার্ষিকীর কর্মসূচি সফল করার লক্ষ্যে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির প্রস্তুতি সভায় সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। এতে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় বিএনপির শ্রম সম্পাদক এ এম নাজিম উদ্দিন ও মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর।
সভায় শাহাদতবার্ষিকী উপলক্ষে দুই দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। এর মধ্যে ২৯ মে বুধবার বেলা ৩টায় কাজীর দেউরীর ভিআইপি ব্যাঙ্কুইট কমিউনিটি হলে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। এতে প্রধান অতিথি থাকবেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। তা ছাড়া দুপুর ১২টায় একই স্থানে জিয়া স্মৃতি পাঠাগারের উদ্যোগে বইমেলার উদ্বোধন করা হবে। এ ছাড়া ৩০ মে বৃহস্পতিবার ভোরে দলীয় কার্যালয়ে দলীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা ও কালো পতাকা উত্তোলন এবং বেলা ১১টায় ষোলশহর ২ নম্বর গেইটের বিপ্লব উদ্যানে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও ৪১টি ওয়ার্ডে শাহাদত বার্ষিকীর কর্মসূচি পালনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
এ সময় ডা: শাহাদাত হোসেন বলেন, জিয়াউর রহমানের ব্যক্তিগত সততা ও স্বাধীনতাযুদ্ধে ঐতিহাসিক ভূমিকায় তার একটি ইতিবাচক ভাব মর্যাদা তৈরি হয়েছিল জনগণের মধ্যে। ফলে ১৯৭৮ সালে তিনি যখন বিএনপি প্রতিষ্ঠা করেন, তখন তাতে সমাজের নানা শ্রেণিপেশার মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে যোগ দেন। তিনি প্রচলিত ধারার রাজনীতির বাইরে নতুন একটি রাজনৈতিক তত্ত্ব মানুষের সামনে হাজির করেন। জনগণ তার সে রাজনীতিকে গ্রহণ করেছিল। তার ১৯ দফা কর্মসূচিকে এ দেশের মানুষ তাদের সামাজিক ও অর্থনৈতিক মুক্তির পথনির্দেশক বলেই গ্রহণ করেছিল।
মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মো: কামরুল ইসলামের পরিচালনায় প্রস্তুতি সভায় উপস্থিত ছিলেন- মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মোহাম্মদ মিয়া ভোলা, অ্যাডভোকেট আবদুস সাত্তার, এস এম সাইফুল আলম, এস কে খোদা তোতন, নাজিমুর রহমান, শফিকুর রহমান স্বপন, ইয়াছিন চৌধুরী লিটন, মো: শাহ আলম, ইসকান্দর মির্জা, আবদুল মান্নান, আহ্বায়ক কমিটির সদস্য এরশাদ উল্লাহ, জয়নাল আবেদীন জিয়া, আর ইউ চৌধুরী শাহীন, আহমেদুল আলম চৌধুরী রাসেল, জাহাঙ্গীর আলম দুলাল, আবুল হাশেম, আনোয়ার হোসেন লিপু, মঞ্জুর আলম চৌধুরী মঞ্জু, বিভাগীয় শ্রমিকদলের সাধারণ সম্পাদক শেখ নুরুল্লাহ বাহার, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক বেলায়েত হোসেন বুলু, থানা বিএনপির সভাপতি মঞ্জুর রহমান চৌধুরী, মামুনুল ইসলাম হুমায়ুন প্রমুখ।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা