দুই জেলায় আগুনে সাড়ে ৭ কোটি টাকার ক্ষতি
- নয়া দিগন্ত ডেস্ক
- ১২ মে ২০২৪, ০০:০৫
নাটোরের বড়াইগ্রাম এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলায় পৃথক অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে। এতে পাঁচ কোটি টাকার পানের বরজসহ প্রায় সাড়ে সাত কোটি টাকার মালামালা পুড়ে গেছে।
আমাদের বড়াইগ্রাম (নাটোর) সংবাদদাতা জানান, শুকনো শিমগাছ পোড়াতে গিয়ে সৃষ্ট অগ্নিকাণ্ডে বড়াইগ্রামে ৫০ বিঘা জমির পানের বরজ পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। শনিবার (১১ মে) দুপুরে উপজেলার বড়াইগ্রাম ইউনিয়নের বাগডোব মণ্ডলপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এতে অন্তত পাঁচ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেছেন ক্ষতিগ্রস্ত চাষিরা।
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মমিন আলী ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, বাগডোব মণ্ডলপাড়া এলাকায় জমিতে শুকনো শিমগাছ জড়ো করে পোড়াচ্ছিলেন কৃষক নিজাম উদ্দিন। এ সময় আগুন বেড়ে গিয়ে ওই জমি সংলগ্ন পান বরজে ছড়িয়ে পড়ে। শুকনো আবহাওয়ার কারণে আগুন দ্রুত পাশের বরজগুলোতেও ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে আশপাশের কয়েক গ্রামের শত শত মানুষ ছুটে এলেও কাছাকাছি কোনো জলাশয় না থাকায় আগুন নেভানো যাচ্ছিল না। পরে বনপাড়া ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এসে স্থানীয়দের সহায়তায় প্রায় দেড় ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। ততক্ষণে কুমারখালী গ্রামের আবদুল হামিদ, আতাউর রহমান, জমিন আলী, আরশেদ আলী, লুৎফর রহমান, আবদুল লতিফ, আনারুল, আবু সাঈদ, মোক্তার হোসেন, আবেদ আলী, মোস্তাক, খতিব আলী ও রাজাসহ অন্তত ৩০ জন কৃষকের প্রায় ৫০ বিঘা জমির পান বরজ পুড়ে ছাই হয়ে যায়।
বরজ মালিক খতিব আলী জানান, তার তিন বিঘা বরজ পুড়ে গেছে। এতে প্রতি বিঘায় অন্তত ১০-১২ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) লায়লা জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, আমি খবর পেয়েছি। বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্তদের যতটুকু পারি সহায়তা করা হবে।
সরাইল (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) সংবাদদাতা জানান, সরাইলে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে লাগা আগুনে ১৫টি দোকান পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এতে প্রায় দুই কোটি ৫০ লাখ টাকার মালামাল পুড়ে গেছে বলে জানিয়েছেন ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা। জানা যায়, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৩টার দিকে উপজেলার শাহবাজপুর ইউনিয়নের শাহবাজপুর দ্বিতীয় গেট এলাকায় টিনশেডের মার্কেটে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত্র হয়। মুহূর্তের মধ্যেই আগুনের লেলিহান শিখা চার দিকে ছড়িয়ে পড়ে। এতে বার্জার পেইন্টস ও আরএফএল কোম্পানির ডিলার মন্টু স্টোর, বাবুল ভ্যারাইটিজ স্টোর, সায়মা মোবাইল সার্ভিসিং, আরশ আলী টেইলার্স, হরিপদ টেইলার্স, আলী টেইলার্স ও সীতারাম চৌধুরীর সুবর্ণা জুয়েলার্সসহ প্রায় ১৫টি দোকান পুড়ে যায়। খবর পেয়ে সরাইল ফায়ার সার্ভিসের দু’টি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
স্থানীয় ব্যবসায়ী বার্জার পেইন্টস ও আরএফএল কোম্পানির ডিলার মন্টু মিয়া বলেন, আমাদের সারাজীবনের সম্বল এক রাতের আগুনে পুড়ে শেষ হয়ে গেছে। দোকানে থাকা ইলেকট্রনিক, মেশিনারিজ ও পেইন্টসসহ প্রায় আড়াই কোটি টাকার মালামাল পুড়ে গেছে।
বাবুল ভ্যারাইটিজ স্টোরের মলিক মনির হোসেন জানান ইলেকট্রনিক, মেশিনারিজ যন্ত্রপাতি, গ্যাসের সিলিন্ডারসহ বিভিন্ন মালামাল পুড়ে তার অর্ধকোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। সরাইল উপজেলা পরিষদের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান মো: শের আলম মিয়া, উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: মেজবাউল আলম ভূঁইয়া ও জেলা পরিষদ সদস্য পায়েল হোসেন মৃধা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
সরাইল ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের স্টেশন লিডার রিয়াজ আহমেদ বলেন, বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। খবর পাওয়ার সাথে সাথে দ্রুত ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে প্রায় পৌনে ২ ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেতে সক্ষম হয়। তবে তার আগেই ১১টি দোকানের সব মালামাল পুড়ে যায়।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা