মিল্টন সমাদ্দারের বিরুদ্ধে কিডনি ও মানবপাচারের তথ্য পাওয়া যায়নি : ডিবি
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ১০ মে ২০২৪, ০০:০০
বহুল আলোচিত চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এজ কেয়ারের চেয়ারম্যান মিল্টন সমাদ্দারের বিরুদ্ধে অসহায় মানুষের কিডনি পাচার ও মানবপাচারের কোনো তথ্য এখনো পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে মিন্টু রোডে ডিবি অফিসে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
হারুন অর রশীদ বলেন, মানবপাচার, জাল মৃত্যু সনদ ও মারধরের অভিযোগে মিল্টন সামাদ্দারের বিরুদ্ধে তিনটি মামলা হয়েছে। দুই মামলায় তাকে সাত দিন রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। কিডনি ও মানবপাচারের তথ্য পাওয়া না গেলেও মিল্টনের বিরুদ্ধে ওঠা অন্য অভিযোগ ও গণমাধ্যমে প্রকাশিত অভিযোগগুলো বেশির ভাগই সে স্বীকার করেছে। তার আশ্রমে অপারেশন থিয়েটারে চিকিৎসক না থাকার অভিযোগ স্বীকার করেছে। মাদক সেবন করে সে তার আশ্রমের অসুস্থদের নির্যাতন করত। তবে আরো কিছু তথ্য জানার বাকি আছে। প্রয়োজনে আরো জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আবারো মিল্টনকে রিমান্ডে আনা হতে পারে।
ডিবি প্রধান বলেন, কথিত মানবতার ফেরিওয়ালা মিল্টন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের বিভিন্ন ভিডিওতে ৯০০ মানুষের লাশ দাফনের তথ্য দিয়েছে। অথচ বাস্তবে সে দাফন করেছে মাত্র ১৩৫ জনের লাশ। ভিডিওর মাধ্যমে এমন তথ্য ছড়িয়ে সমাজের মানবিক মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে অর্থ সংগ্রহ করত মিল্টন।
তিনি বলেন, মিল্টন কাউকে পরোয়া করত না। কারণ অনেক বিশেষ ব্যক্তিদের সাথে তার যোগাযোগ ছিল। তাই সে মনে করত তাকে কেউ কিছু করতে পারবে না। যারা মিল্টনের আশ্রমে শিশু ও অসুস্থ মানুষ দিয়ে আসত, পরে তারা মিল্টনের আশ্রমে অসহায় মানুষদের খোঁজখবর নিতে গেলে, তাদের সাথে খারাপ ব্যবহার ও মারধর করত।
গোয়েন্দা কর্মকর্তা আরো বলেন, আমাদের সমাজে যারা মানবতার ফেরিওয়ালা সেজে প্রতারণা করছে, এমন মানুষদের বিষয়েও আমরা খোঁজখবর নিচ্ছি। যারা মানবতার ফেরিওয়ালা সেজে টাকা হাতিয়ে নিয়ে কিন্তু মানুষকে সেবা দিচ্ছে না, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। কারা তাকে সহায়তা করেছে, কারা তাকে ভিডিও বানানোর পরামর্শ দিয়েছে তাদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। মিল্টনের স্ত্রীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তাকে একবার জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। প্রয়োজনে আবারো জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
এ দিকে মিল্টন সমাদ্দারকে রিমান্ড শেষে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। রাজধানীর মিরপুর থানায় দায়ের করা মানবপাচার আইনের মামলায় গ্রেফতারের পর তাকে রিমান্ডের আদেশ দিয়েছিল আদালত।
গতকাল বৃহস্পতিবার চার দিনের রিমান্ড শেষে মিল্টন সমাদ্দারকে আদালতে হাজির করে তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা মিরপুর জোনাল টিমের এসআই মোহাম্মদ কামাল হোসেন। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ফারজানা শাকিলা সুমু চৌধুরীর আদালত জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
গত ২ মে মিল্টনের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন ঢাকার সিএমএম আদালত। তিন দিনের রিমান্ড শেষে গত ৫ মে তাকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয়। তখন এ মামলায় তাকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা মিরপুর জোনাল টিমের এসআই মোহাম্মদ কামাল হোসেন। এ ছাড়া মানবপাচার আইনের আরেক মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখানোসহ সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করে ডিবি পুলিশ। ওই দিন শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বেগম শান্তা আক্তারের আদালত আসামির ফের চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
প্রতারণা ও জালিয়াতির অভিযোগে গত ১ মে রাতে রাজধানীর মিরপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে মিল্টন সমাদ্দারকে গ্রেফতার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। এরপর তার বিরুদ্ধে মিরপুর মডেল থানায় তিনটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা