রাজশাহীতে ডিবি পরিচয়ে তরুণকে তুলে নিয়ে চাঁদা দাবি, পুলিশ অবরুদ্ধ
- রাজশাহী ব্যুরো
- ০৬ মে ২০২৪, ০০:০৫
রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলায় পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) সদস্য পরিচয়ে এক তরুণকে তুলে নিয়ে দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগ উঠেছে। শনিবার (৪ মে) রাতে উপজেলার গোগ্রাম বাজার থেকে ওই তরুণকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। এ ঘটনায় গোদাগাড়ীর প্রেমতলী তদন্ত কেন্দ্রের সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) আনোয়ার হোসেনকে অবরুদ্ধ করে রাখেন স্থানীয়রা। তাকে উদ্ধারে পুলিশের একটি গাড়ি সেখানে গেলে ইটপাটকেল মেরে গাড়িটি ভাঙচুর করা হয়। এ সময় পুলিশের লাঠিপেটায় কয়েকজন আহত হন।
অপহৃত সোহান গোগ্রামের কাপড় ব্যবসায়ী মুর্তজার ছেলে। ক্রিকেট খেলা নিয়ে জুয়া পরিচালনা করতেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
তবে সোহানের অভিযোগ, রাত ৮টার দিকে দোকান বন্ধ করে বন্ধুর সাথে দেখা করতে যাচ্ছিলেন। এ সময় দু’টি মোটরসাইকেলে চারজন এসে নিজেরা ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে মোবাইল ফোন কেড়ে নেয়। এরপর নাম জিজ্ঞাসা করে। নাম-ঠিকানা বলার পর তাকে জোর করে মোটরসাইকেলে তুলে নেয়া হয়। কিছু দূর যাওয়ার পর হ্যান্ডকাপ পরানো হয়। এরপর সোহানকে প্রেমতলী পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের পাশে পদ্মা নদীর পাড়ে নিয়ে দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করা হয়। তারা সোহানকে বলেন, ‘তার বাপকে ফোন দিয়ে টাকা আনতে বল। তা না হলে মাদক মামলায় চালান দিয়ে দিবো।’ টাকা না দিলে রাত সাড়ে ১১টার দিকে বসন্তপুর-খেতুরধামের রাস্তায় ফাঁকা জায়গায় নামিয়ে দেয়। সেখান থেকে তিনি একা গোগ্রাম বাজারে চলে যান।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান গণমাধ্যমকে জানান, সোহানকে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে অপহরণের পর এএসআই আনোয়ার সাদা পোশাকে গোগ্রাম বাজারে যান। এ সময় স্থানীয় লোকজন তাকে অবরুদ্ধ করে রাখেন। পরে প্রেমতলী তদন্তকেন্দ্রের ইনচার্জ ওসমান গণি অতিরিক্ত পুলিশ নিয়ে সেখানে পৌঁছে স্থানীয় জনতাকে লাঠিপেটা করে। এতে অন্তত সাত-আটজন আহত হন। পুলিশের এই আচরণে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেন স্থানীয়রা। একপর্যায়ে পুলিশের গাড়ি লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করেন তারা। এতে পুলিশের গাড়িটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পরে গোদাগাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল মতিন ও গোদাগাড়ী সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার সোহেল রানা গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
ইউপি চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান আরো জানান, ‘ক্ষুব্ধ জনতা পুলিশের কাছে সোহানকে ফেরত চান। এ সময় সোহানের মোবাইল ফোনে অপহরণকারীদের সাথে কথা বলেন ওসি আবদুল মতিন। এরপর তারা সোহানকে ছেড়ে দেয়। তবে পুলিশই সোহানকে অপহরণ করেছিল কি না তা জানি না।
গোদাগাড়ী মডেল থানার ওসি আবদুল মতিন গণমাধ্যমকে জানান, কারা সোহানকে তুলে নিয়ে গিয়ে চাঁদা দাবি করেছে, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।