দেশে সুশাসন না থাকায় অপরাধের মাত্রা বেড়েছে : জামায়াত
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ০৩ মে ২০২৪, ০১:২৭
দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। দলটির কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের এক বৈঠকে এ উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। জামায়াতের আমির ডা: শফিকুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে গৃহীত প্রস্তাবে বলা হয়, দেশব্যাপী আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি ঘটেছে। মানুষের জানমালের কোনো নিরাপত্তা নেই। প্রশাসনের ছত্রছায়ায় আওয়ামী দলীয় লোকেরা হত্যা, গুম-খুন, ধর্ষণ, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, জমি ও ঘরবাড়ি দখল, ছিনতাই, ঘুষ-দুর্নীতিসহ হেন কোনো অপরাধ নেই, যা তারা সংঘটিত করছে না। দেশের নাগরিকরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্রের জন্য এটি খুবই দুঃখজনক। সরকার পুলিশ প্রশাসনকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করার কারণে পুলিশ অপরাধ নিয়ন্ত্রণের পরিবর্তে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ছে।
কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ গভীর উদ্বেগের সাথে আরো লক্ষ করছে, দেশে সুশাসন না থাকায় এবং অপরাধের বিচার না হওয়ায় অপরাধের মাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে। সম্প্রতি ফরিদপুরের মধুখালীতে একটি মন্দিরে আগুন লাগাকে কেন্দ্র করে কোনো রকম তদন্ত ও প্রমাণ ছাড়াই দুই মুসলিম যুবককে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের শনাক্ত করে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। ঘটনার প্রতিবাদে ফরিদপুরে সর্বস্তরের মানুষ মানববন্ধন কর্মসূচি পালনকালে পুলিশ তাদের ওপর গুলিবর্ষণ করে। ফলে বহু লোক আহত হয়।
বৈঠকে বলা হয়, সরকার ৭ জানুয়ারি প্রহসনের নির্বাচনের মাধ্যমে আবার ক্ষমতা দখল করে নতুন স্টাইলে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার ও হয়রানি করছে। গত এপ্রিল মাসে রাজধানী ঢাকা, গাজীপুর মহানগরী, নীলফামারী ও রাজশাহী মহানগরীসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের ৩৫ জন নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়। রাজশাহীর আদালতে জামায়াত নেতারা হাজিরা দিতে গেলে রাজশাহী মহানগরী জামায়াতের সেক্রেটারিসহ ১০ জন নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়। আদালত অঙ্গন থেকে এ ধরনের গ্রেফতার নজিরবিহীন, ন্যক্কারজনক ও আদালত অবমাননার শামিল।
নির্বাহী পরিষদ আরো লক্ষ করছে, রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় বেপরোয়া কিশোর গ্যাং তথা কিশোর অপরাধীদের দৌরাত্ম্য সমাজের শান্তি-শৃঙ্খলা বিঘিœত করছে। রাজধানী ঢাকা থেকে শুরু করে সারা দেশের গ্রাম পর্যন্ত কিশোর গ্যাং খুন, ধর্ষণ, মাদক চোরাচালান, মাদক সেবনসহ নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়েছে। সরকার ও সরকারি দলের লোকদের পৃষ্ঠপোষকতার কারণেই দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির মারাত্মক অবনতি ঘটেছে এবং সমাজজীবনে চরম অস্থিরতা বিরাজ করছে।
কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সমুন্নত রেখে মানুষের জানমাল, ইজ্জত-আব্রুর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং গ্রেফতারকৃতদের অবিলম্বে মুক্তি প্রদান এবং ফরিদপুরের মধুখালীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে নৈরাজ্য সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে।
রাজধানীর ২০ স্পটে জামায়াতের পানি, ক্যাপ, ছাতা বিতরণ : ইহকালীন কল্যাণ ও পরকালীন মুক্তির জন্য সবাইকে ইসলামের পতাকাতলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আর্তমানবতার কল্যাণে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমির মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন।
গতকাল রাজধানীর মিলনায়তনে কেন্দ্র ঘোষিত গণসংযোগ কর্মসূচির অংশ হিসেবে জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তরের গুলশান পূর্ব থানার আয়োজিত এক দাওয়াতি পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। থানা আমির আবু জুনাইদের সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন, ঢাকা মহানগরীর কর্মপরিষদ সদস্য ও গুলশান জোনের পরিচালক ইয়াছিন আরাফাত। উপস্থিত ছিলেন থানা সেক্রেটারি ফাহিম আবদুল্লাহ, থানা কর্মপরিষদ সদস্য আবদুল মোতালেব মঈন, আবু দুয়া, আবদুল মুত্তালিব, হাসনাইন, আবদুর মান্নান মিয়া, আবদুল মান্নান প্রামাণিক, মিজানুর রহমান ও হানিফ প্রমুখ। দাওয়াতি পথসভা শেষে শ্রমিকদের মাঝে ছাতা বিতরণ করা হয়।
এ ছাড়া মোহাম্মদপুরে রিকশা শ্রুমিকদের মাঝে ক্যাপ ও পানি বিতরণ, কাওরানবাজারে ক্যাপ ও পানি বিতরণ, উত্তরায় ভ্যান ও বাস চালকদের মাঝে পানি ও স্যালাইন বিতরণ, হাতিরঝিলের মীরবাগে পানি ও স্যালাইন বিতরণ, দক্ষিণ খানে পানি বিতরণ, বাড্ডায় শরবত বিতরণ, শিল্পাঞ্চলে খাবার স্যালাইন ও বিশুদ্ধ পানি বিতরণ, মগবাজারে জামায়াতের পানি ও স্যালাইন বিতরণ, দক্ষিণখান উত্তর থানায় পানি বিতরণ করেন নেতাকর্মীরা।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা