যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে হাজতিদের দুই গ্রুপের ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া
- যশোর অফিস
- ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ০১:১১
যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে হাজতিদের দু’গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কারাগারের নিউ জেল এলাকায় এ ঘটনা ঘটলেও জানাজানি হয় বিকেলের পরে। এ ঘটনায় চার-পাঁচজন হাজতি আহত হয়েছেন। তাদের সংঘর্ষ ঠেকাতে গিয়ে দুই কারারক্ষীও জখম হয়েছেন। পরবর্তী সময়ে হুইসেল বাজিয়ে কারারক্ষীরা ভেতরে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন খুলনা কারা উপ মহাপরিদর্শক অসীম কান্ত পাল। জড়িতদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার প্রক্রিয়া চলছে বলে সূত্র জানিয়েছে। সংঘর্ষের সূত্রপাতের বিষয়ে কারা কর্তৃপক্ষ পূর্ব কোন্দলের কথা জানিয়েছে। তবে কারাগারের অপর একটি সূত্র বলছে, মোবাইল ফোন ব্যবহার করাকে কেন্দ্র করে এ সংঘর্ষ হয়েছে।
শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টায় যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে অসংখ্য দর্শনার্থী দেখা করার ঘরের সামনে অপেক্ষায় ছিলেন। হঠাৎ হুইসেল বেজে ওঠে। মুহূর্তেই মানুষ দিগি¦দিক ছোটাছুটি শুরু করে। দর্শনার্থীদের দ্রুত বাইরে বের করে দেয়া হয়। অন্য দিকে সব কারারক্ষী যে যে অবস্থায় ছিলেন তাড়াহুড়ো করে লাঠি নিয়ে কারাগারের ভেতরে প্রবেশ করেন। কারা কর্তৃপক্ষের এ ধরনের কার্যক্রম দেখে এলাকায় আতঙ্ক তৈরি হয়। কেউ কেউ বলতে থাকে আসামি পালিয়েছে। প্রায় দেড় ঘণ্টা পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
পরে কারাগারের ভেতরে যাওয়া কারারক্ষী ও সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জানা যায়, কারাগারের নিউ জেল এলাকার সামনে সন্ত্রাসী ভাইপো রাকিব ও সন্ত্রাসী সম্রাটের মধ্যে কথাকাটাকাটির একপর্যায়ে হাতাহাতি হয়। এ সময় দু’গ্রুপের সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া শুরু হয়। শেষমেশ তা সংঘর্ষে রূপ নেয়। সাথে সাথে হুইসেল বাজানো হয়। পরে যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার সুরাইয়া আক্তার ও জেলার শরিফুল আলম ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। একপর্যায়ে দ্রুতই তারা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। এরপর খুলনা কারা উপ মহাপরিদর্শক অসীম কান্ত পাল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
এ দিকে কারাগারের অপর একটি সূত্র জানিয়েছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গিয়ে দুই কারারক্ষী জখম হয়েছেন। তাদেরকে কারা হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া আহত হাজতিদেরও সেখানে চিকৎসা দেয়া হয়েছে। সূত্র আরো জানায়, তাৎক্ষণিক কারা কর্তৃপক্ষ সংঘর্ষে জড়িত সাত-আটজনকে চিহ্নিত করেছেন। এদের মধ্যে কয়েকজনকে পৃথক স্থানে বিশেষ নজরদারিতে রাখা হয়েছে। কারাগারে মোবাইল ফোনে কথা বলা নিয়ে এ ঘটনার সূত্রপাত।
এ দিকে এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বন্দীদের স্বজনদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়। ঘটনার সাথে কারা জড়িত তা নিয়ে তারা চিন্তিত।
এ বিষয়ে যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারের সহকারী সার্জন সাজ্জাদ হোসেন বলেন, দুই কারারক্ষী ও ছয়-সাতজন হাজতিকে কারা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তারা আশঙ্কামুক্ত ও সুস্থ রয়েছেন।
যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার সুরাইয়া আক্তার বলেন, ঘটনাটি সামান্য। তবে আকস্মিকভাবে তাদের একজন কারারক্ষী অ্যালার্ট হুইসেল বাজিয়ে ফেলেন। এতে করে বিষয়টি বড় আকারে রূপ নেয়। তিনি বলেন, মূলত যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে বর্তমানে শহরের দাগি কয়েকজন সন্ত্রাসী রয়েছে। তাদের মধ্যে ভাইপো রাকিব অন্যতম। এদের দু’টি গ্রুপের সদস্যদের বাইরেই কোন্দল ছিল। এ ঘটনার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে কারাবিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে। তিনি বলেন, কারারক্ষীদের ওপর হামলা হয়নি। মূলত তাড়াহুড়ো করে কারাগারের ভেতরে প্রবেশ করতে গিয়ে আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছেন।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা