ভারতের লোকসভা নির্বাচনে ভোট শুরু: নাগাল্যান্ডে ভোটার উপস্থিতি প্রায় শূন্য
- নয়া দিগন্ত ডেস্ক
- ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৪:২২
ভারতের লোকসভা নির্বাচনের প্রথম দফার ভোটগ্রহণ করা হয়েছে। গতকাল স্থানীয় সময় সকাল ৭টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়ে বিকেল ৪টা পর্যন্ত তা চালু থাকে। প্রথম দফায় ১০২ আসনে ভোটগ্রহণ করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গের তিন আসন- জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার এবং কোচবিহার লোকসভা কেন্দ্র। এনডিটিভি।
এ ছাড়াও অরুনাচল প্রদেশ, মনিপুর এবং মেঘালয়ের দু'টি করে আসনে ভোটগ্রহণ করা হয়েছে। একটি করে আসনে ভোটগ্রহণ করা হয়েছে ছত্তীশগড়, মিজোরাম, নাগাল্যান্ড, সিকিম, ত্রিপুরা, উত্তরাখন্ড, আন্দামান ও নিকোবর, জম্মু ও কাশ্মির, লাক্ষ্যাদ্বীপ এবং পন্ডিচেরিতে। বিহারের চার আসনেও ভোটগ্রহণ করা হয়েছে।
মনিপুরে মোট দু'টি লোকসভা আসন। ইনার মনিপুর এবং আউটার মনিপুর। তবে নির্বাচন কমিশন আউটার মনিপুরকে ভাগ করে দু'দফায় ভোট করানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। শুক্রবার তাই আউটার মনিপুরের একাংশে ভোটগ্রহণ করা হয়েছে। বাকি অংশে ভোটগ্রহণ হবে ২৬ এপ্রিল। পাশাপাশি উত্তরাখন্ড এবং মহারাষ্ট্রের ছয় আসন, উত্তরপ্রদেশের আট আসন, রাজস্থানের ১২ আসনে ভোটগ্রহণ করা হয়েছে। দক্ষিণ ভারতের এই রাজ্যে ৩৯টি আসনে ভোটগ্রহণ করা হয়েছে।
ভোট শুরুর ঠিক আগে এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে পোস্ট করে দেশবাসীকে রেকর্ড সংখ্যক ভোটগ্রহণের আবেদন জানান ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ইংরেজি, হিন্দি, তামিল, মারাঠি, বাংলা এবং অসমিয়া, মোট ছয় ভাষায় পোস্ট করেন তিনি। মোদি তার পোস্টে লেখেন, ভোটারদের প্রতি আমার আবেদন রেকর্ড সংখ্যক ভোটদানের। বিশেষ করে তরুণ ও প্রথমবারের ভোটদাতাদের আমি বিপুল সংখ্যায় ভোটদানের আহ্বান জানাই। সর্বোপরি, প্রত্যেকটি ভোটের গুরুত্ব আছে, আর প্রতিটি কণ্ঠস্বরই গুরুত্বপূর্ণ!
প্রথম দফার ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন নরেন্দ্র মোদি মন্ত্রিসভার আট মন্ত্রী। বেশ কয়েকজন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীও রয়েছেন ভোটযুদ্ধে। ২০১৯ সালে উত্তরবঙ্গের তিন কেন্দ্রসহ ১০২টি আসনের মধ্যে মোট ৪৫টিতে জিতেছিল বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ। উত্তর-পূর্বাঞ্চলের আটটি রাজ্যে বিপুল জয় পেয়েছিল তারা। এবার কয়েকটি আসনে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা হতে পারে।
নাগাল্যান্ডে ভোটার উপস্থিতি প্রায় শূন্য। লোকসভা নির্বাচনের প্রথম ধাপে গতকাল শুক্রবার নাগাল্যান্ডের ছয়টি জেলায় বিকেল পর্যন্ত প্রায় শূন্য শতাংশ ভোট পড়েছে। সেখানকার ইস্টার্ন নাগাল্যান্ড পিপলস অর্গানাইজেশন (ইএনপিও) আরো আর্থিক স্বায়ত্তশাসনের পাশাপাশি একটি পৃথক প্রশাসনের দাবি জানিয়ে আসছে। সংগঠনটির পক্ষ থেকে 'জাতীয় জরুরি অবস্থা' ঘোষণা এবং স্থানীয়দের নির্বাচন বয়কটের আহ্বানের পর লোকসভা ভোটে এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
এনডিটিভির খবরে বলা হয়েছে, উত্তর-পূর্ব ভারতের এই রাজ্যের প্রধান নির্বাচন কর্মকর্তা নির্বাচনী প্রক্রিয়া ব্যাহত করার জন্য এনপিওর বিরুদ্ধে নোটিশ জারি করেছেন। এক বিবৃতিতে শীর্ষ নির্বাচন কর্মকর্তা বলেছেন, গোষ্ঠীটি 'সাধারণ নির্বাচনে ভোট দেয়ার জন্য পূর্ব নাগাল্যান্ড অঞ্চলে বসবাসকারীদের অবাধ অংশগ্রহণের হস্তক্ষেপ করেছে তারা অযাচিত প্রভাব খাটানোর চেষ্টা করেছে।'
কারণ দর্শানোর নোটিশে কেন ভারতীয় দণ্ডবিধির ধারা ১৭১ সি-এর উপধারার অধীনে পদক্ষেপ নেয়া হবে না, তার জবাব চাওয়া হয়েছে। প্রাসঙ্গিক উপধারায় বলা হয়েছে, নির্বাচনে ভোট দেয়ার অধিকারে কেউ হস্তক্ষেপ করার চেষ্টা করে নির্বাচনে অযাচিত প্রভাব খাটানো অপরাধ বলে গণ্য হবে।
প্রতিক্রিয়ায় ইএনপিও জানিয়েছে, জনগণের প্রতি ভোট বয়কটের আহ্বানের মূল্য লক্ষ্য তাদের এখতিয়ারের অধীনে পূর্ব নাগাল্যান্ড অঞ্চলে বিশৃঙ্খলার আশঙ্কা এবং নিরাপত্তা ঝুঁকি হ্রাস করা। সংগঠনটি 'পূর্ব নাগাল্যান্ড অঞ্চলটি বর্তমানে জাতীয় জরুরি অবস্থার অধীনে' এই বিষয়টিও উল্লেখ করেছে। তারা বলেছে, সংশ্লিষ্টদের সাথে আলোচনা করেই এই ঘোষণা দেয়া হয়েছে।
এনপিওর দাবি, ভোট বয়কট জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত সিদ্ধান্ত। সুতরাং এ ক্ষেত্রে ১৭১ সি-এর অধীনে পদক্ষেপ প্রযোজ্য হবে না। যদি কোনো ভুল বোঝাবুঝি বা এর ভুল ব্যাখ্যা হয়ে থাকে তাহলে তারা এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনকে সহযোগিতা করতে ইচ্ছুক।
গত ৩০ মার্চ ইএনপিওর ২০ জন বিধায়ক অন্যান্য সংগঠনের সাথে একটি দীর্ঘ রুদ্ধদ্বার বৈঠক করে। বৈঠকে লোকসভা নির্বাচন থেকে সম্পূর্ণভাবে বিরত থাকার সিদ্ধান্ত হয়। তবে ইস্টার্ন নাগাল্যান্ড লেজিসলেটরস ইউনিয়ন এই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করার আহবান জানিয়েছিল। বৈঠকের পরদিন ইএনপিও ভারতের নির্বাচন কমিশনকে তাদের ভোটে অংশ না নেয়ার পদক্ষেপের কথা জানায়। গত ৮ মার্চ পূর্ব নাগাল্যান্ডে 'জাতীয় জরুরি অবস্থা' ঘোষণা করা হয়। এ সময়ে ইএনপিও এই অঞ্চলের সাতটি নাগা উপজাতির শীর্ষ সংগঠন- তারা স্থানীয় সংগঠনগুলো ভোটের প্রচারে নামার অনুমতি দেয়নি।
ইএনপিও গত বছরের বিধানসভা নির্বাচনের আগেও ভোট বয়কটের আহ্বান জানিয়েছিল। কিন্তু কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের আশ্বাসের পর তা প্রত্যাহার করা হয়। নাগাল্যান্ডে একটি লোকসভা আসন রয়েছে। ২০১৮ সালের উপনির্বাচনে জিতেছেন ন্যাশনালিস্ট ডেমোক্র্যাটিক প্রগ্রেসিভ পার্টির (এনডিপিপি) তোখেহো ইয়েপথোমি। এনডিপিপি বিজেপির মিত্র।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা