১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

নৌকা নিয়ে এখন মানুষের কাছে যাওয়ার সাহস নেই সরকারের : আমির খসরু

-

নৌকা নিয়ে সরকারের এখন মানুষের কাছে যাওয়ার সাহস নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী। গতকাল (১৭ এপ্রিল) জাতীয় প্রেস ক্লাবে দ্বিতীয় মুক্তিযুদ্ধের পটভূমিতে সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রের আলোকে ১০ এপ্রিলকে ‘প্রজাতন্ত্র দিবস’ ঘোষণার দাবিতে আয়োজিত আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি। জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি) এই সভার আয়োজন করে।
আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, সরকার উপজেলা নির্বাচন করতে যাচ্ছে। তারা (আওয়ামী লীগ) চিন্তা করছে বাংলাদেশের মানুষ তো নৌকাকে ভয় পায়, নৌকার কথা শুনলে ভোটকেন্দ্রে যাবে না। তাই এবার তারা নৌকাকে বাদ দিয়ে দিয়েছে। মানে তাদের নৌকা নিয়ে এখন মানুষের কাছে যাবারো সাহস নেই। নৌকাকে কিন্তু এখন তারা বাদ দিয়েছে। অথচ তারাই কিন্তু আইন করেছে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দলীয় মার্কা দিয়ে ভোট করার জন্য। তারা আইন কিন্তু বাতিল করেনি, আইন রেখেছে। এই আইন রেখেই কিন্তু তারা নৌকা নিয়ে জনগণের কাছে যাচ্ছে না। কারণ ওরা (আওয়ামী লীগ) দেখছে বাংলাদেশের জনগণ নৌকা যেখানে আছে সেখানে তারা (জনগণ) নেই। জনগণ নৌকাকে বয়কট করেছে। তারা এখন নৌকাকে ডুবিয়ে দিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে যে, এখনতো নৌকা নেই আপনারা আসতে পারেন। তারা আরেকটি ভাঁওতাবাজির নির্বাচন করতে যাচ্ছে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, আজকে যারা ক্ষমতা দখল করে বসে আছে তারা ইতিহাস দখল করার চেষ্টা করছে। আমাদের দেশের সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে রাজনীতিবিদরা আজকে ইতিহাসবিদ হয়ে গিয়েছে। মধ্যে আজকে যারা ক্ষমতায় আছে তারা সবচেয়ে বড় ইতিহাসবিদ। তাদের ইতিহাসকে প্রমাণ করার জন্য আবার রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহারের ব্যবস্থা করা আছে। এমনকি বিচার বিভাগকেও ব্যবহার করা হচ্ছে। রাজনীতিবিদ যখন ইতিহাসবিদ হয়ে যায় তখন সেটা আর ইতিহাস থাকে না, সেটা হয়ে যায় প্রোপাগান্ডা। সেই প্রোপাগান্ডাকে ইতিহাসে পরিণত করার জন্য আমাদেরকে ইতিহাসে রিভিজিট করতে হবে। সেটা ছাড়া আমাদের কোনো উপায় নেই ইতিহাস কিন্তু রিভিজিট হবে। রাজনীতিবিদরা চাক বা না চাক প্রত্যেকটা দেশের ইতিহাস রিভিজিট করতে বাধ্য।
তিনি আরো বলেন, এখন বাংলাদেশে মানুষের জীবনের নিরাপত্তা বলতে আর কিছু নাই। একটা স্বাধীন সার্বভৌম দেশে মানুষের ভয়ের কিন্তু কিছু নাই। তারা তো দেশের মালিক, মালিক কী ভয় পেতে পারে? কিন্তু আজকে তো বাংলাদেশ সেই অবস্থায় নেই। যারা ক্ষমতায় আছে তাদের ক্ষমতায় টিকে থাকার একমাত্র অস্ত্র হচ্ছে ভয়-ভীতির পরিবেশ সৃষ্টি করা।

জেএসডি সভাপতি আ স ম আব্দুর রব বলেন, যেই দেশে অন্যায়-জুলুমের প্রতিবাদ করতে পারব না, সেই দেশে থাকবও না। জন্মগ্রহণ করেছি মানুষের জন্য কথা বলতে। এখন মানুষের জন্য যদি কথা বলতে না পারি তাহলে আমার জন্ম বৃথা। ২০৪১ সাল পর্যন্ত নাকি এই সরকার ক্ষমতায় থাকবে। এদের নাকি মৃত্যু নেই। এ সময় সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই জোরদার করার, জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করার আহ্বান জানান তিনি।
নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, আমাদের বুদ্ধিজীবীরা কেবল ঘরের মধ্যেই বসে থাকেন। বেশির ভাগ বুদ্ধিজীবী আজকে পা চাটতেই পছন্দ করছেন। কেউ বাধ্য হয়ে, কেউ মনে করছেন টিকে থাকার জন্য এটাই করা দরকার। সামগ্রিকভাবে সমাজের মধ্যে এই যে নৈতিকতার অবক্ষয় শুরু হয়েছে এখান থেকে বাঁচাতে পারে কেবলমাত্র রাজনীতি। আমি মনে করি গণতন্ত্রকে রক্ষা করতে আমাদের গঠনমূলকভাবে ঘুরে দাঁড়াতে হবে। এখন যত দেরি হবে তত আমাদের ক্ষতি হবে।
জেএসডি সভাপতি আ স ম আব্দুর রবের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপনের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য রাখেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট হাসনাত কাইয়ুম, জেএসডির সিনিয়র সহসভাপতি তানিয়া রব প্রমুখ।

 


আরো সংবাদ



premium cement