১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`
রাজপথে মৃত্যুর হানা

৪ শিক্ষার্থীসহ নিহত ৬

-


রংপুর মহানগরীতে কুরআনে হাফেজসহ তিনজন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে দুইজন শিক্ষার্থী। কুষ্টিয়ায় নিহত হয়েছে দশম শ্রেণীর এক শিক্ষার্থী। এ ছাড়া চুয়াডাঙ্গায় পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় শিশু শিক্ষার্থীসহ দুইজন নিহত হয়েছেন।
রংপুর অফিস জানায়, রংপুর মহানগরীর নব্দীগঞ্জে ঢাকার একটি কোচ ও অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে কুরআনে হাফেজসহ তিনজন নিহত হয়েছেন। হাফেজসহ নিহত দুইজন ফুফাতো-মামাতো ভাই। ঈদের কেনাকাটা শেষে বাড়ি ফিরছিলেন তারা।
রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের মাহিগঞ্জ থানার ওসি রওশন কবির জানান, বুধবার রাত ১১টায় রংপুর কুড়িগ্রাম আঞ্চলিক মহাসড়কের নব্দীগঞ্জের ব্রিজের কাছে নাবিল পরিবহনের ঢাকাগামী একটি বাস ও কাউনিয়াগামী অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে অটোরিকশাটি দুমড়ে মুচড়ে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস উদ্ধার তৎপরতা চালায়। ঘটনাস্থলেই অটোরিকশার আরোহী স্কুলছাত্র নাহিদ (১৭) নিহত হয়। তিনি কাউনিয়ার উপজেলার পূর্ব চানপাড়া গ্রামের ফয়জুল ইসলামের ছেলে। গুরুতর আহত অবস্থায় পাঁচজনকে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান একই এলাকার আব্দুল খালেকের পুত্র কুরআনের হাফেজ জুনায়েদ ইসলাম জয় (১৭) ও খোপাতি এলাকার আব্দুল কাদেরের পুত্র অটোরিকশাচালক রবিউল ইসলাম মানিক (৩২)। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন চান্দঘাট এলাকার আব্দুল আলিমের ছেলে রোকন, হলদিবাড়ি এলাকার মনসুর আলীর পুত্র আল আমীন, সাহাবাজ এলাকার বাবুল চন্দ্রের ছেলে সঞ্জিত রায়। এর মধ্যে রোকনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছে পুলিশ। আহত ও নিহতরা সবাই রংপুর শহর থেকে ঈদের কেনাকাটা করে বাড়ি ফিরছিলেন। বাসটি আটক করে পুলিশ জিম্মায় নিয়েছে। তবে বাসের চালক ও হেলপার পালিয়ে গেছে। এ ঘটনায় নাহিদের চাচা খলিলুর রহমান বাদি হয়ে একটি মামলা করেছেন।
কুমারখালী (কুষ্টিয়া) সংবাদদাতা জানান, কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে দশম শ্রেণীর এক শিক্ষার্থী নিহত হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে কুষ্টিয়া রাজবাড়ী আঞ্চলিক মহাসড়কের পুঁটিয়া গ্রামে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত বিপ্লব হোসেন (১৭) নন্দলালুর ইউনিয়নের চড়াইকোল (বোর্ড অফিস) এলাকার বিল্লাল হোসেনের ছেলে। তিনি আলাউদ্দিন আহমেদ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থী। গতকাল সকালে বিপ্লব হোসেন চড়াইকোল আলাউদ্দিন নগর থেকে মোটরসাইকেল যোগে বাড়ি ফেরার সময় কুষ্টিয়া রাজবাড়ী আঞ্চলিক মহাসড়কের পুঁটিয়া নামক স্থানে পৌঁছালে বিপরীতমুখী মোটরসাইকেলের সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এ সময় বিপ্লবকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়। কুমারখালীর চড়াইকোল রেলগেট এলাকাতে প্রায়ই এমন সড়ক দূর্ঘটনা ঘটছে। গত ১০ বছরে প্রায় অর্ধশত নানা বয়সী মানুষের প্রান ঝড়েছে এই সড়কে। কুমারখালী থানার ওসি মো: আকিবুল ইসলাম জানান, সড়ক দুর্ঘটনায় একজন শিক্ষার্থী নিহত হয়েছে। ইতোমধ্যে লাশ হাইওয়ে পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়েছে। হাইওয়ে পুলিশ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।

চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি জানান, চুয়াডাঙ্গা পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় শিশুসহ দু’জন নিহত হয়েছেন। গতকাল বৃস্পতিবার দামুড়হুদা উপজেলার বিষ্ণুপুর ও দর্শনা পৌরএলাকায় পৃথক এ দুর্ঘটনায় তাদের মৃত্যু হয়।
নিহতরা হলেন- চুয়াডাঙ্গা দামুড়হুদা উপজেলার জুড়ানপুর ইউনিয়নের বিষ্ণুপুর গ্রামের আব্দুল বারেকের ছেলে ইব্রাহিম (১০) ও সিরাজগঞ্জ জেলার উল্লাপাড়ার শ্রীবাড়ি হাড়িভাঙ্গা গ্রামের মোতালেব হোসেনের ছেলে ইমরান হোসেন (২৮)।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বৃহস্পতিবার সকালে দামুড়হুদার বিষ্ণুপুর গ্রামে রাস্তা পারাপারের সময় একটি দ্রুতগতির ইজিবাইক ইব্রাহিমকে ধাক্কা দেয়। পরে স্থানীয় ও পরিবারের সদস্যরা শিশু ইব্রাহিমকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
অপর দিকে, একই সময় দামুড়হুদা উপজেলার দর্শনা পুরাতন বাজার এলাকায় মোটরসাইকেলের সাথে একটি ট্র্যাক্টরের সংঘর্ষ হয়। এতে মোটরসাইকেলে থাকা চালক ইমরান ছিটকে পড়ে গুরুতর আহত হন। স্থানীয়রা ইমরানকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নিয়ে আসলে চিকিৎক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা: গোলাম মোর্শেদ বলেন, দু’জনের মাথায় খুব বেশি আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। হাসপাতালে আসার আগেই তাদের মৃত্যু হয়েছে।
এ বিষয়ে দামুড়হুদা মডেল থানার (ওসি) আলমগীর কোবির ও দর্শনা থানার (ওসি) বিপ্লব কুমার সাহা সড়ক দুর্ঘটনার দু’জনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

 


আরো সংবাদ



premium cement