১৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১ পৌষ ১৪৩০, ১৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

মায়ের সাথে ঈদ করতে পারবে না শিশু নূরী

-


নাশকতার অভিযোগে মামলায় কারাবন্দী শিশু নুরজাহান নূরীর ও আকলিমার মা হাফসা আক্তার ঈদের আগে মুক্তি পাচ্ছেন না। বুধবার হাইকোর্টের দেয়া জামিন স্থগিতাদেশ তুলে নিতে আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত তার আবেদনে সাড়া দেননি। বুধবার শুনানি শেষে আপিল বিভাগের অবকাশকালীন চেম্বার বিচারপতি মো: আশফাকুল ইসলামের আদালত জামিন স্থগিতাদেশ তুলে নিতে তার আবেদনের ওপর আগামী ২২ এপ্রিল আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য ধার্য করেছেন।

এতে শিশু নুরজাহান নূরীর ও আকলিমার মা হাফসা আক্তার ঈদের আগে মুক্তি পচ্ছেন না বলে জানিয়েছেন ব্যারিস্টার কায়সার কামাল। তিনি বলেন, এই দুই শিশু তার মা’র সাথে ঈদ করতে পারবে না। তিনি আরো বলেন, রাষ্ট্র এখন সাধারণের পাশাপশি নারী ও শিশু নিপীড়কের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে। এই শিশু নূরীর মা হাফসা আক্তার ৩০ বা ৩২ বছরের একজন নারী। তার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ নেই। তার শিশু নূরী ও তাদেরকে নিপীড়ন করছে এই রাষ্ট্র। হাইকোর্ট হাফসাকে জামিন দিয়েছিল। রাষ্ট্রপক্ষে আবেদন জামিন স্থগিত করা হয়েছিল। জামিন স্থগিতাদেশ তুলে নেয়ার আবেদন রাষ্ট্রপক্ষের বিরোধিতার কারণে আবার পিছিয়েছে। আমাদের সিনিয়র কাউন্সেল আদালতে বলেছেন, এই নারীটাকে চার মাস ধরে আটক রাখা হয়েছে। অথচ তার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ নেই। তাকে আটক রেখে রাষ্ট্রের কী লাভ।
শুনানিতে সিনিয়র আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী ঈদের আগে দুই শিশুর মা হাফসাকে জামিন দেয়ার আবেদন জানান। তিনি বলেন, আরো এক মাস তাকে জেলে রেখে রাষ্ট্রের কী লাভ হবে।

তখন চেম্বার আদালত বলেন, গত ১০ মার্চ আমরা যে আদেশ দিয়েছিলাম তা দেখে শুনে দেয়া হয়। আগামী ২২ এপ্রিল আপিল বিভাগে শুনানির তারিখ দিয়ে দিই। এ সময় আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী হাফসার দুই শিশুকেও জেলে দেয়ার কথা বলেন।
এরপর আদালত বলেন, আগে আট সপ্তাহ স্থাগিতাদেশ ছিল। ২২ এপ্রিল আপিল বিভাগে শুনানির জন্য নির্ধারণ করে দিলাম।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন সিনিয়র আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী ও ব্যারিস্টার কায়সার কামাল। সাথে ছিলেন আইনজীবী মো: মাকসুদ উল্লাহ। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এস এম মুনির।
এর আগে গত ১০ মার্চ শিশু নুরজাহান নূরীর মা হাফসা আক্তারকে হাইকোর্টের দেয়া জামিন আদেশ স্থগিত করেছেন চেম্বার আদালত।
গত ৬ মার্চ বিচারপতি মো: রুহুল কুদ্দুস ও বিচারপতি এ কে এম রবিউল হাসানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ হাফসার জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন।

ওই দিন আদালতে তার চার বছর বয়সী মেয়ে নুরজাহান নূরী ও সাত বছর বয়সী আকলিমা উপস্থিত ছিল।
গত ২৯ নভেম্বর রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে একটি মানববন্ধন হয়েছিল। সে দিন নুরজাহান ও আকলিমার মতো মানববন্ধনে এসেছিল আরো কিছু শিশু। মানববন্ধনের ব্যানারে আয়োজক হিসেবে লেখা ছিল, ‘রাজবন্দীদের স্বজন’।
দুই শিশুর বাবা আবদুল হামিদ ভূঁইয়া বিএনপির রাজনীতির সাথে যুক্ত। দুই শিশুর দাদা আবদুল হাই ভূঁইয়া ২৯ নভেম্বরের মানববন্ধনে অভিযোগ করে বলেছিলেন, তার বড় ছেলে হামিদকে পুলিশ খুঁজছে। তাকে না পেয়ে ছেলের স্ত্রী হাফসাকে তুলে নিয়ে যায় পুলিশ। তাকে গ্রেফতার দেখিয়ে তিন দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়। অথচ হাফসা রাজনীতির সাথে জড়িত নন।

 


আরো সংবাদ



premium cement