০৮ জুলাই ২০২৪, ২৪ আষাঢ় ১৪৩১, ১ মহররম ১৪৪৬
`

এবার ডেঙ্গুতে ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ২২৪২ ভর্তি : মৃত্যু ১১

এখন জ্বর হলেই পরীক্ষা আবশ্যক। তাই ব্লাড পরীক্ষা সেন্টারগুলোতে উপচে পড়া ভিড় লক্ষণীয়। ছবিটি রাজধানীর মুগদা হাসপাতাল থেকে তোলা : আবদুল্লাহ আল বাপ্পী -


এবার গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে সর্বোচ্চ ডেঙ্গু আক্রান্ত হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এর আগে এতো বেশি ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হতে আসেনি। ঢাকার ৭১ সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে এবং ঢাকার বাইরে দেশের অন্যান্য হাসপাতালে ২ হাজার ২৪২ জন ভর্তি হয়েছে এবং একই সময়ে সারা দেশে ডেঙ্গু রোগে ভোগে মৃত্যু হয়েছে ১১ জনের। এখন ডেঙ্গু রোগীতে দেশের হাসপাতালগুলো ভর্তি, নতুন রোগী ভর্তি করার মতো যথেষ্ট বেড নেই। ভর্তি রোগীদের মধ্যে যাদের অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়ে থাকে তাদের ছেড়ে দিয়ে নতুন রোগী ভর্তি করতে হচ্ছে। শুধু সরকারি হাসপাতাল নয়, বেসরকারি হাসপাতালগুলোতেও জায়গা দিতে পারছে না।
চিকিৎসকরা বলছেন, বিপজ্জনক অবস্থার দিকে মোড় দিচ্ছে ডেঙ্গু সংক্রমণ। এভাবে প্রতিদিনই ডেঙ্গু আক্রান্তদের সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে থাকলে চিকিৎসা ব্যবস্থা ভেঙে পড়বে। ডেঙ্গুর কারণে এখন অন্যান্য রোগে আক্রান্তরা চিকিৎসকদের মনোযোগের বাইরে থেকে যাচ্ছে। বিশেষ করে মেডিসিনের চিকিৎসকদের উপর চাপ বাড়ছে। সাধারণত খুব খারাপ অবস্থা না হলে ডেঙ্গু আক্রান্তদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয় না যথেষ্ট বেড নেই বলে। ডেঙ্গু ওয়ার্ডের চিকিৎসকরা কোভিডের অবস্থার মতো সারাক্ষণ ব্যস্ত থাকছেন। এই অবস্থায় ডেঙ্গু ওয়ার্ডের সাধারণ চিকিৎসকরাই বলছেন, শিগগিরই ব্যাপকভাবে মশক নিধন অভিযান শুরু করতে হবে। তা নাহলে রোগীরা হাসপাতালের বাইরে পড়ে থাকবেন সিট পাওয়ার জন্য কিন্তু হাসপাতালে ঢুকতে পারবেন না রোগীর চাপে। অপরদিকে চিকিৎসক ও নার্সদের বিশ্রাম দরকার। সীমিত সংখ্যক চিকিৎসক ও নার্স ক্লান্ত হয়ে গেলে পুরো চিকিৎসা ব্যবস্থাই ভেঙে পড়বে, জনরোষ বৃদ্ধি পাবে।

রাজধানীতে যেমন বেশি ডেঙ্গু সংক্রমণের শিকার হচ্ছে মানুষ তেমনি দেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি রোগী এখানেই। গতকাল যারা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে তাদের মধ্যে এক হাজার ২৩৯ জন ঢাকায় এবং এক হাজার ৩ জন ঢাকার বাইরে দেশের অন্যান্য স্থানে।
গতকাল শনিবার সকাল পর্যন্ত শুধু ঢাকার সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে ডেঙ্গু চিকিৎসাধীন রোগী ছিল ৩ হাজার ৮৩৯ জন। গতকাল ঢাকার ২০ সরকারি হাসপাতালে রোগী ভর্তি ছিল ২ হাজার ৩১ জন এবং ঢাকার বেসরকারি ৫১ হাসপাতালে রোগী ভর্তি ছিল এক হাজার ৮০৮ জন। অপরদিকে ঢাকার বাইরের ঢাকা বিভাগের বাকি হাসপাতালসহ দেশের ৭ বিভাগীয় হাসপাতালে রোগী ভর্তি ছিল ২ হাজার ৮১৭ জন ভর্তি আছে।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার অ্যান্ড কনট্রোল রুমের তথ্য অনুযায়ী, গতকাল শনিবার সকাল পর্যন্ত জুলাই মাসের ২২ দিনেই সারা দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ২২ হাজার ৭০৭ জন। এই ২২ দিনেই ডেঙ্গুতে মৃত্যু হয়েছে ১২০ জনের অর্থাৎ দৈনিক ৫ জনের বেশি (৫.৪৫ জন) মৃত্যু হয়েছে। এর আগের ৬ মাসে অর্থাৎ জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত ৬ মাসে মারা গেছে ৪৭ জন। বেশি মৃত্যু হয়েছে ঢাকা শহরে। নিম্ন ও নিম্ন মধ্যবিত্ত আয়ের এলাকাগুলোতে বেশি ডেঙ্গু সংক্রমণ হচ্ছে। কারণ তাদের মধ্যে রোগটি সম্বন্ধে সচেতনতা কম।


আরো সংবাদ



premium cement