২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১, ১৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরি
`
বায়রার সাথে বৈঠকে মালয়েশীয় মন্ত্রী

লাইসেন্সে বৈষম্য হবে না

-

কর্মী প্রেরণে সব লাইসেন্সপ্রাপ্ত রিক্রুটিং এজেন্সির অংশগ্রহণের বিষয়ে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছেন সফররত মালয়েশিয়ার প্লান্টেশন ইন্ডাস্ট্রি অ্যান্ড কমোডিটিস মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী দাতুক হাজাহ যুরাইদা বিনতি কামারুদ্দিন। তিনি বলেন, সরকার অনুমোদিত লাইসেন্স নিয়ে কোনো ধরনের বৈষম্যমূলক নীতিকে তিনি সমর্থন করেন না। এ ছাড়া অভিবাসন নিয়ে যেকোনো ধরনের সিন্ডিকেশনের বিরুদ্ধে দৃঢ় অবস্থানের কথা জানিয়েছেন। গতকাল বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সিসের (বায়রা) সাবেক নেতৃবৃন্দের সাথে বৈঠকে মালয়েশিয়ার মন্ত্রী সিন্ডিকেশনের বিরুদ্ধে তার এই অবস্থান তুলে ধরেন। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বায়রার উপদেষ্টা ও সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ নূর আলী, সাবেক মহাসচিব শামিম আহমেদ চৌধুরী নোমান, সাবেক অর্থসচিব ফখরুল ইসলাম ও সাবেক যুগ্ম মহাসচিব মিজানুর রহমান।
বৈঠকে বায়রা নেতৃবৃন্দ মালয়েশিয়ার মন্ত্রীকে বলেন, সব বৈধ লাইসেন্সকে কাজের সমান সুযোগ দিতে হবে। সব লাইসেন্স কাজের সুযোগ পেলে অভিবাসন নিয়ে দুর্নীতির সুযোগ থাকবে না। গেটওয়ে বেশি হওয়ায় প্রতিযোগিতামূলক বাজারে অধিক কর্মী অনেক কম খরচে মালয়েশিয়া যেতে পারবে।
নেতৃবৃন্দ বলেন, গত ১৯ ডিসেম্বর দুই দেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত সমঝতা স্মারকে উল্লেখ না থাকা সত্ত্বেও মালয়েশিয়ার মানবসম্পদ মন্ত্রী সারাভানান মুরুগান গত ১৪ জানুয়ারি প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী ইমরান আহমেদকে ২৫ রিক্রুটিং এজেন্সির অনুমোদনের জন্য চিঠি দেন। যা দুই দেশেই ব্যাপক সমালোচিত হয়। মালয়েশিয়ার মানবসম্পদ মন্ত্রীর ২৫ এজেন্সির সিন্ডিকেটের প্রস্তাব বাংলাদেশের আইন বহির্ভূত হওয়ায় সে বিষয়ে আপত্তি জানিয়ে চিঠি দেয় বাংলাদেশ। চিঠির সাথে বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক অনুমোদিত ও নবায়নকৃত ১৫৩০ লাইসেন্সের তালিকা পাঠানো হয়েছে।
বায়রা নেতৃবৃন্দ বলেন, ২০১৭-১৮ সালে সিন্ডিকেটের দুর্নীতির কারণে কোর্ট কর্তৃক সব এজেন্সির কাজ করার ব্যাপারে রেফারেন্স রয়েছে। সে ক্ষেত্রে আবারো যদি একই মনোপলি ফর্মুলায় কর্মী প্রেরণের ব্যবস্থা হয় তবে যেকোনো সময় প্রতিযোগিতা আইনে মামলা হতে পারে। ফলে কর্মী প্রেরণ আবারো অনির্দিষ্টকালের জন্য অনিশ্চয়তায় পড়বে। সমঝোতা স্মারকে ২৫ রিক্রুটিং এজেন্সির বিষয়ে কোনো কথা উল্লেখ নেই। লাইসেন্স নিয়ে বৈষম্য করা যাবে না। বাংলাদেশের সব লাইসেন্সের স্ট্যাটাস একই।
বায়রা নেতারা আরো বলেন, মালয়েশিয়ায় কর্মী প্রেরণের জন্য বাংলাদেশ সরকার ও বায়রা সম্পূর্ণভাবে প্রস্তুত রয়েছে। কিন্তু মালয়েশিয়ার মানবসম্পদ মন্ত্রীর ২৫ এজেন্সির সিন্ডিকেটের প্রস্তাব নীতিগতভাবে গ্রহণযোগ্য নয় বিধায় বিষয়টি ঝুলে আছে। শ্রমবাজার নিয়ে যেকোনো প্রকার সিন্ডিকেশনের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ সরকারের অবস্থানের সাথে একমত পোষণ করেন বায়রা নেতৃবৃন্দ। নেতৃবৃন্দ বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত ও নবায়নকৃত যে ১৫৩০ রিক্রুটিং এজেন্সির তালিকা পাঠানো হয়েছে তা মালয়েশিয়া সরকার গ্রহণ করলেই যেকোনো সময় কর্মী প্রেরণ সম্ভব বলে জানান।
বৈঠকে মালয়েশীয় মন্ত্রী এ ব্যাপারে তার অবস্থান তুলে ধরে বলেন, সরকার অনুমোদিত এজেন্সিদের নিয়ে কোনো ধরনের বৈষম্যমূলক নীতিকে তিনি সমর্থন করেন না। এ ছাড়া রিক্রুটিং এজেন্সি নিয়ে যেকোনো ধরনের বৈষম্যমূলক নীতির বিপক্ষে তার অবস্থান। তিনি বলেন, দুই দেশকে অবশ্যই স্বাক্ষরিত সমঝেতা স্মারক অনুযায়ী কর্মী প্রেরণ করতে হবে। সমঝোতা স্মারক বহির্ভূত কোনো প্রক্রিয়াই অনুসরণ করা যাবে না।
বৈঠকে মালয়েশিয়ার প্লান্টেশন সেক্টরে বাংলাদেশী কর্মীদের দীর্ঘ কয়েক যুগের অবদানের কথা স্বীকার করে মন্ত্রী কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। এবং বাংলাদেশী কর্মিনির্ভর এই সেক্টরের জন্য বাংলাদেশী কর্মীদের প্রতি তার সরকারের আগ্রহের কথা তুলে ধরেন।


আরো সংবাদ



premium cement