২১ নভেম্বর ২০২৪, ৬ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ১৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`
নাগরিক সম্মেলনে অধ্যাপক রেহমান সোবহান

জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে ভোটে নির্বাচিতদের

-

স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান যেন অকার্যকর প্রতিষ্ঠানে পরিণত না হয়, সে বিষয়ে নজর রাখতে হবে। নাগরিকদের ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করতে ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে। এর পাশাপাশি জনপ্রতিনিধিরা প্রতিশ্রুতির প্রতি অঙ্গীকারাবদ্ধ থেকে যাতে নাগরিকদের যথাযথ সেবা দেন সেটি নিশ্চিত করা দরকার বলে মন্তব্য করেছেন অর্থনীতিবিদ ও সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. রেহমান সোবহান। আর স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো: তাজুল ইসলাম বলেছেন, ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সঠিক পারফর্ম করলে বাংলাদেশের চেহারা বদলে যাবে। শুধু সরকার নয়, জনগণের সম্পৃক্ততা বাড়াতে হবে।
রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) গতকাল আয়োজিত ‘গণতান্ত্রিক সুশাসন ও উন্নয়ন : তৃণমূল প্রতিষ্ঠানের অভিজ্ঞতা’ শীর্ষক নাগরিক সম্মেলনে এসব কথা বলেন তারা। সিপিডির সম্মানীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যের সভাপতিত্বে উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো: তাজুল ইসলাম। বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের (ইইউ) রাষ্ট্রদূত রেন্সজে তেরিঙ্ক, নেত্রকোনা জেলা প্রশাসক কাজি মো: আবদুর রহমান, সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন, অক্সফার্ম বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ড. দীপঙ্কর দত্ত, স্থানীয় পর্যায়ের নীলফামারীর ফরিদা বেগম, কিশোরগঞ্জের এ এস এম সামাদ, চট্টগ্রামের ফাতেমা বেগম। ওয়েবিনারে যোগ দেন সিপিডির চেয়ারম্যান ড. রেহমান সোবহান ও অক্সফার্ম এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক লিলিয়ান মারকাদো। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিপিডির ফেলো অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রী তাজুল ইসলাম বলেন, আমাদের ইউনিয়ন পরিষদকে আরো পারফর্ম দেখাতে হবে। যদি সঠিক পারফর্ম করে, সঠিক ডেলিভারি দেয় তাহলে পাল্টে যাবে বাংলাদেশ। এ জন্য ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, মেম্বাররা তাদের সঠিক ডেলিভারি দিচ্ছে কি না সেটি নিশ্চিত করতে হবে। শুধু তাই নয় সব ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা থাকতে হবে।
রেহমান সোবহান বলেন, সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান যেসব সেবা সরবরাহ করে সেগুলোতে স্থানীয় পর্যায়ের জনগোষ্ঠীর প্রাপ্যতা নিশ্চিত করতে নাগরিকদের ক্ষমতায়ন প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এ জন্য স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালী করতে হবে। তিনি বলেন, সরকারি স্বাস্থ্য, শিক্ষা, পয়ঃনিষ্কাশন ও অবকাঠামো সুবিধা ব্যবহারে সকল নাগরিকের সমধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
অধ্যাপক রেহমান সোবহান বলেন, স্থানীয় সরকার যেন অকার্যকর প্রতিষ্ঠানে পরিণত না হয়, সে বিষয়ে নজর রাখতে হবে। সরকার এসডিজি বিষয়ে যেসব নীতি কাঠামো প্রণয়ন করছে, সেগুলোর বিষয়ে স্থানীয় পর্যায়ে নাগরিকদের মধ্যে যাতে যথাযথ উপলব্ধি সৃষ্টি হয় সেজন্য সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে।
রাষ্ট্রদূত রেন্সজে তেরিঙ্ক বলেন, এসডিজি উন্নয়নের জন্য সরকার, নাগরিক, স্থানীয় সংগঠনকে কার্যকর ভূমিকা রাখতে হবে। বাংলাদেশ সরকার করোনার মধ্যেও সঠিক পথেই এগিয়ে যাচ্ছে। তবে এসডিজির বাস্তবায়নে সুশীল সমাজকে অন্তর্ভুক্ত করা ও সব পর্যায়ে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে। ইইউ বাংলাদেশকে সব সময়ই সব ধরনের সহায়তা দিয়ে যাবে বলেন তিনি।
সিপিডির ড. ফাহমিদা খাতুন বলেন, এখনো সব ক্ষেত্রেই বৈষম্য আছে। টেকসই উন্নয়নের ক্ষেত্রে এসব বৈষম্য থাকলে হবে না। প্রবৃদ্ধি যদি কর্মসংস্থানের সৃষ্টি করতে না পারে তাহলে তা টেকসই হতে পারে না এবং কল্যাণ বয়ে আনতে পারে না।
ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আমাদের গড় দারিদ্র্য ২০ শতাংশ। কিন্তু এমনও এলাকা আছে, যেখানে দারিদ্র্য হার ৫০ শতাংশেরও বেশি। এসডিজির লক্ষ্য অর্জন করতে হলে ওই সব পিছিয়ে পড়া এলাকায় বিশেষ নজর দিতে হবে। তিনি বলেন, সেবার কার্যক্রম সবার সমন্বয়ে করতে হবে।

 


আরো সংবাদ



premium cement