২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

১০ হাজার রোহিঙ্গা ভলান্টিয়ার নিয়ে সেনাবাহিনীর মহড়া

-

করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যেই তৈরি হয়েছে আরেক দুর্যোগের আশঙ্কা। বঙ্গোপসাগরে তৈরি হওয়া ঘূর্ণিঝড় আমফান’ এখন অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে। ধীরগতিতে এগোলেও বেশ শক্তিশালী হয়ে উঠছে ঘূর্ণিঝড় ‘আমফান’।
তবে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব আমাদের দেশে আসুক কিংবা না আসুক সতর্কতামূলক প্রস্তুতিতে বিন্দুমাত্র ছাড় দিচ্ছে না দেশপ্রেমিক বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। এ লক্ষ্যে ঘূর্ণিঝড় ‘আমফান’ মোকাবেলায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ১০ম পদাতিক ডিভিশন আগাম প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। গতকাল সোমবার উখিয়া-টেকনাফ এলাকায় ১১ লাখ রোহিঙ্গাদের ৩৪টি জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমার নাগরিকদের ক্যাম্পগুলোতে সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে দুর্যোগ মোকাবেলার লক্ষ্যে দিনব্যাপী সেনাবাহিনী ও ভলান্টিয়ারদের যৌথ মহড়া অনুষ্ঠিত হয়েছে। পাশাপাশি সেনাক্যাম্পগুলোর তত্ত্বাবধানে প্রায় দশ হাজার রোহিঙ্গা ভলান্টিয়ার প্রস্তুত রাখা হয়েছে। প্রতিটি ক্যাম্পে সেনাসদস্যদের নেতৃত্বে মাঝি, সাবমাঝি ও স্বেচ্ছাসেবকদের আপৎকালীন দায়িত্ব সম্পর্কে অবহিত করা হয়েছে। প্রস্তুত রাখা হয়েছে জরুরি প্রয়োজনে উদ্ধার যানসমূহ ও প্রয়োজনীয় উদ্ধারসামগ্রী। এ ছাড়া জেলা ও স্থানীয় প্রশাসনের পাশাপাশি এনজিও ও আইএনজিও সংস্থাগুলোর সাথে করোনা ভাইরাস সংক্রমণের প্রাক্কালে স্বাস্থ্যবিধি মেনে মাঠ পর্যায়ে আপৎকালীন সময়ের কর্মপরিকল্পনা নিয়ে আর্মি ক্যাম্পগুলোতে দফায় দফায় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিনিময় করা হয়েছে নিজেদের প্রস্তুতির সর্বশেষ অবস্থা। জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমার নাগরিকদের ঘূর্ণিঝড় ‘আমফান’ থেকে সুরক্ষায় দ্রুততার সাথে উদ্ধার অভিযান পরিচালনা, ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কমানো ও উদ্ধার কার্যক্রমে দেশী, বিদেশী সব সংস্থার সমন্বিত উদ্যোগ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে গতকাল এ মহড়া অনুষ্ঠিত হয়। মহড়ায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, স্থানীয় প্রশাসন, আরআরসি, এনজিও, জাতিসঙ্ঘের বিভিন্ন সংস্থার সদস্য ও ক্যাম্পে বসবাসরত প্রশিক্ষিত রোহিঙ্গারা স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে অংশগ্রহণ করে।
রামু সেনানিবাসের সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে আপৎকালীন সময়ের জন্য আগাম প্রস্তুতি হিসেবে পর্যাপ্ত পরিমাণে শুকনো খাবার যেমন মুড়ি, চিঁড়া, গুড় ইত্যাদি প্যাকেটজাত করে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। প্রশাসনকে সহযোগিতার লক্ষ্যে ইতোমধ্যে চিহ্নিত করে রাখা হয়েছে আশ্রয় কেন্দ্রগুলো। সেনানিবাস কর্তৃক জেলা প্রশাসন ও অন্যান্য সংস্থার সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ অব্যাহত রাখার পাশাপাশি নিয়মিত সংবাদ সংগ্রহ ও বিভিন্ন তথ্যের জন্য রামু সেনানিবাসে সেনাবাহিনীর নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় কন্ট্রোলরুম স্থাপন করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের গত ২৫ আগস্ট থেকে ১১ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা মিয়ানমারের রাখাইন থেকে পালিয়ে এসে কক্সবাজার জেলার উখিয়া ও টেকনাফ উপজেলায় পাহাড়ের ওপরে, ঢালে ও সমতলে অস্থায়ীভাবে তৈরি ক্যাম্পগুলোতে অবস্থান করছে। সংশ্লিষ্ট এলাকায় আসন্ন বর্ষা মৌসুমে বন্যা, ঘূর্ণিঝড়, ভূমিধস বা পাহাড় ধসের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

 


আরো সংবাদ



premium cement