শেখ হাসিনার নেতৃত্বে পিলখানায় হত্যাকাণ্ড চলে : মির্জা ফখরুল
- বিশেষ সংবাদদাতা
- ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০০:০০
কিছু মানুষ অন্যায়ভাবে জনগণকে বিক্ষুব্ধ করে দেশকে নৈরাজ্যের দিকে নিয়ে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। গতকাল রমনায় আইইবি মিলনায়তনে পিলখানায় শহীদ সেনা কর্মকর্তাদের স্মরণে বিএনপি আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
এর আগে বনানীতে শহীদ সেনা কর্মকর্তাদের কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে পিলখানায় দুই দিন ধরে হত্যাযজ্ঞ চলে। এ হত্যাযজ্ঞ জাতির জন্য দুর্ভাগ্যজনক উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে ঘটনাগুলো করতে দিয়েছে। যে কারণে দুই দিন ধরে পিলখানায় হত্যাযজ্ঞ চলতে থাকে।’
জাতীয় শহীদ সেনা দিবস উপলক্ষে গতকাল বেলা ১১টায় বনানীতে সামরিক কবরস্থানে শায়িত পিলখানায় শহীদ সামরিক কর্মকর্তা ও সদস্যদের উদ্দেশে পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে সাংবাদিকদের করা প্রশ্নের জবাবে বিএনপির মহাসচিব এসব কথা বলেন।
দিনটি সেনাবাহিনীর জন্য কালো দিন উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, সেনাবাহিনীর শত্রুরা সে দিন ৫৭ জন চৌকস সেনাকে হত্যা করে। তাদের উদ্দেশ্য ছিল দেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নষ্ট করে দেয়া।
এ দিকে আলোচনা সভায় মির্জা ফখরুল বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানের কাছে এই আহ্বান জানাতে চাই, আপনি শক্ত হাতে সরকারকে পরিচালিত করুন। এ কথা কেউ যেন না বলে যে, আপনি পক্ষপাতিত্ব করছেন। সেটা আমরা শুনতে চাই না। কারণ আপনি প্রতিষ্ঠিত একজন বিখ্যাত মানুষ, সারা বিশ্বে আপনার নাম আছে। সেটা রাখবেন আপনি, সেটাই আমরা আশা করি আপনার কাছ থেকে।’ তিনি বলেন, ‘আমরা আশা করব যে সম্পূর্ণ নিরপেক্ষতা বজায় রেখে যত দ্রুত সম্ভব সংস্কার যেটা ন্যূনতম প্রয়োজন, সেটাকে সম্পন্ন করে নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যান এবং সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে দেশের স্থিতিশীলতা, শান্তি ও ভবিষ্যতের জন্য সমৃদ্ধি আনবেন।’
দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘কাদা ছোড়াছুড়ি বন্ধ করে তর্ক বন্ধ করে সবাই ঐক্যবদ্ধ থাকুন, যেন ঐক্যবদ্ধ থাকার মধ্য দিয়ে আমরা একটা গণতান্ত্রিক জায়গায় পৌঁছাতে পারি। আজ আমাদের বাংলাদেশে যে পরিবর্তন হয়েছে, ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে তাড়িয়ে দেয়া হয়েছে এবং নতুন একটা সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে বাংলাদেশকে নতুন করে গড়ে তুলবার।’ তিনি বলেন, ‘সেই সুযোগকে আজ আবার ধ্বংস করে দেয়ার চক্রান্ত চলছে। শেখ হাসিনা আশ্রয় নিয়েছেন দিল্লিতে। সেখান থেকে তিনি চক্রান্ত করছেন, পরিকল্পনা করছেন কী করে এই গণ-অভ্যুত্থানের বিজয়ের সব ফলাফলকে নস্যাৎ করে দেয়া যায়। সেখান থেকে চক্রান্ত করছেন বাংলাদেশে কী করে আবার নৈরাজ্য সৃষ্টি করা যায়, একটা অস্থিতিশীল অবস্থা সৃষ্টি করা যায়। তারই চক্রান্ত হিসেবে আমরা দেখছি আজ বিভিন্নভাবে বিভিন্ন পক্ষ থেকে একটা অস্থির অবস্থা সৃষ্টি করা হচ্ছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, এই অন্তর্বর্তী সরকার ছাত্র-জনতার বিপ্লবের মধ্য দিয়ে আসা একটি সরকার। প্রায় দুই হাজার ছাত্র-জনতার রক্তের ওপর দিয়ে সরকার গঠিত হয়েছে। আমাদের প্রত্যেকের আশা, এই সরকার জনগণের আশা পূরণ করবে। আমরা বারবার এ কথা বলে আসছি যে দেশে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা না করলে কোনোমতেই আমরা একটি স্থিতিশীল অবস্থা পাবো না। সেই প্রথম থেকেই বলে আসছি যে, প্রকৃতপক্ষে একটি নিরপেক্ষ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটার জন্যই আমরা আন্দোলন করেছি দীর্ঘদিন ধরে।
মির্জা ফখরুল বলেন, আজ সেই জায়গায় বিভিন্ন রকম প্রশ্ন তুলে একটা নৈরাজ্যের দিকে দেশকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। কিছু সংখ্যক মানুষ অন্যায়ভাবে দেশকে, দেশের মানুষকে বিক্ষুব্ধ করে তোলার চেষ্টা করছেন। বিভিন্নভাবে সবাইকে রাস্তায় নিয়ে জড়ো করার চেষ্টা করছেন এবং একটা নৈরাজ্য সৃষ্টির চেষ্টা করছেন। এটা কোনোভাবেই বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য শুভ নয়। এটা কোনোভাবেই বাংলাদেশের গণতন্ত্রের জন্য, স্থিতিশীলতার জন্য শুভ নয়। আজ আমি অনুরোধ করব, যারা শহীদ জিয়ার আদর্শে বিশ্বাস করেন, যারা দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার আদর্শে বিশ্বাস করেন, তারেক রহমানের নেতৃত্বে বিশ্বাস করেন, আপনারা ধৈর্য ধরবেন। আপনারা সবাই ঐক্যবদ্ধ থাকবেন।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, অনেকে আমাদের সমালোচনা করে বলার চেষ্টা করছে আমরা নাকি শুধু নির্বাচন নির্বাচন করছি। আমরা সংস্কার করতে চাই না। এত বড় মিথ্যা কথা মিথ্যা প্রচারণা তারা চালাচ্ছে বিভিন্নভাবে, বিশেষ করে সোসাল মিডিয়াতে। কয়েকজন মানুষ টার্গেট করেছে বিএনপিকে। তারা মিথ্যা প্রচারণা অপপ্রচার চালিয়ে বিএনপিকে হেয় প্রতিপন্ন করতে চায়। কারণ বিএনপি হচ্ছে সেই দল যারা এই দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষা করেছে অতীতে এবং এখনো করবে।
আলোচনা সভায় অন্যান্যের মধ্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান, মেজর (অব:) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা