বাংলাদেশের বাজারে সুতা ও কাপড় ডাম্পিং করছে ভারত : বিটিএমএ
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৩:০৬
ভারতীয় টেক্সটাইল মিলগুলো বাংলাদেশের বাজারে সুতা ও কাপড় ডাম্পিং করছে বলে অভিযোগ করেছে বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএমএ)। ভারতীয় সরকার বিভিন্ন ধরনের ভর্তুকি ও সহায়তার আড়ালে বাংলাদেশে টেক্সটাইল খাতকে ধ্বংস করার ষড়যন্ত্র করছে বলে প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
গতকাল গুলশান ক্লাবে আয়োজিত বিশেষ সংবাদ সম্মেলনে বিটিএমএর প্রেসিডেন্ট শওকত আজিজ রাসেল এসব অভিযোগ করেন।
তিনি বলেন, উৎপাদন ব্যয়ের চেয়ে কম দামে সুতা ও কাপড় চোরাই পথে বিক্রি করা হচ্ছে। এজন্য ব্যবহার করা হচ্ছে স্থলবন্দরগুলো। এভাবে ভারতীয় মিলগুলো বাংলাদেশের শিল্পের জন্য হুমকি হিসেবে দেখা দিয়েছে। এমন অবস্থা চলতে থাকলে দেশের টেক্সটাইল খাতও পাটকলগুলোর পরিণতির শিকার হবে।
বিটিএমএ সভাপতি বলেন, ‘আমারা ইতোমধ্যে সরকারের কাছে আবেদন করেছি স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানি বন্ধ করতে। এবং ভারতীয় সুতায় এন্টি ডাম্পিং শুল্কারোপ করার জন্য। দেশের পাটশিল্প তারা (ভারত) নিয়ে গেছে। এখন টেক্সটাইল ও তৈরী পোশাক নিয়ে টানাটানি শুরু করেছে।
তিনি বলেন, অন্য দেশ যত তাড়াতাড়ি সিদ্ধান্ত নিতে পারে আমাদের সরকার তা পারে না। শিল্প ধ্বংস হওয়ার পর আমাদের সরকারের টনক নড়ে। সুতার মিথ্যা ঘোষণা ঠেকাতে দেশের স্থলবন্দরগুলোর সক্ষমতা তৈরি না হওয়া পর্যন্ত স্থলবন্দরের মাধ্যমে আমদানি বন্ধ রাখার জন্য তিনি অনুরোধ জানান। একই সাথে ভারতীয় মিলগুলোর ডাম্পিং তদন্তে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উদ্যোগ নেয়ারও তিনি দাবি জানান।
খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন বিগত সরকারের আমলে স্থলবন্দরের মাধ্যমে সুতা আমদানি বন্ধ ছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এসে তা পুনরায় চালু করে। এজন্য অবৈধ বাণিজ্য ঠেকাতে স্থলবন্দর বন্ধ করে সমুদ্রবন্দরের মাধ্যমে সুতা ও কাপড় আমদানি করার জন্য ব্যবসায়ীরা দাবি জানান।
বিটিএমএ সভাপতি বলেন, যারা ভারতকে রক্তের বন্ধু বলে তারা এমন অনেক সিদ্ধান্ত নিয়েছে যা আমাদের স্বার্থের পরিপন্থী। ভারতীয় বাজারের চেয়ে কম দামে রফতানি করছে বলে স্থানীয় মিলগুলোতে ৮-১০ হাজার কোটি টাকার সুতা মজুদ হয়ে আছে বলে জানান বিটিএমএ সভাপতি।
রোডট্যাপের নামে ভারত প্রতি কেজি সুতায় ১১ রুপি ভর্তুকি দিয়ে ডাম্পিংকে রাষ্ট্রীয়ভাবে সহায়তা করছে বলে অভিযোগ করেন বিটিএমএর সহসভাপতি সালেউদ জামান খান জিতু। তিনি বলেন, কম দামে সুতা কেনার সুবিধা বাংলাদেশের তৈরী পোশাক কারখানাগুলো পাচ্ছে না, যা দিন শেষে ক্রেতার কাছে চলে যাচ্ছে।
গ্যাসের দাম ২০ টাকায় নামিয়ে আনার দাবি : সংবাদ সম্মেলনে টেক্সটাইল মিল মালিকরা বলেন, গ্যাস সঙ্কটে তাদের মিলগুলো সক্ষমতার ৫০-৬০ শতাংশ ব্যবহার করতে পারছে। এজন্য তারা গ্যাসের বর্ধিত দাম প্রত্যাহার করে ওয়েট অ্যান্ড এভারেজ কস্ট করে গ্যাসের দাম ২০ টাকার নিচে নামিয়ে আনার দাবি জানান।
প্রকৌশলী রাজীব হায়দার মুন্না বলেন, মাটির নিচে গ্যাস মজুদ রেখে কার স্বার্থে এলএনজি আমদানিকে উৎসাহিত করা হচ্ছে। এলএনজি আমদানি করে টেক্সটাইল ও তৈরী পোশাক শিল্প টিকে থাকতে পারে না বলে উল্লেখ করেন তিনি। বিইআরসির শুনানিতে কারখানার চাবি জমাদানের হুমকি দিয়ে তিনি বলেন, ৭০ টাকা দিয়ে কারখানা চালানো সম্ভব হবে না। তাই শুনানির দিন আমরা কারখানার চাবি জমা দিবো।
এ দিকে বিনিয়োগকে উৎসাহিত করতে ব্যাংক সুদের হার সিঙ্গেল ডিজিটে এনে আগামী তিন বছরের জন্য ফিক্সড করার দাবি জানান বিটিএমএর সহসভাপতি মো: আবুল কালাম।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা