২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২ ফাল্গুন ১৪৩১, ২৫ শাবান ১৪৪৬
`
২৮ বছর পর হতে যাচ্ছে বর্ধিতসভা

নির্বাচনী চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার বার্তা দেবে বিএনপি

-

দীর্ঘ সময় পর কাউন্সিলের আদলে দলের বর্ধিত সভা করতে যাচ্ছে বিএনপি। আগামী ২৭ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় এই সভা অনুষ্ঠিত হবে। নতুন এই সাংগঠনিক সিদ্ধান্তকে জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে দলকে সাংগঠনিক মজবুত ভিত্তির ওপর দাঁড় করানোর পাশাপাশি নেতাদের ‘বিশেষ বার্তা’ দেয়ার প্লাটফর্ম হিসেবে দেখা হচ্ছে।
২৮ বছর পর দলের এমন বৃহৎ আয়োজনে ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত একাদশ সংসদ নির্বাচনে যারা দলের প্রার্থী হয়েছিলেন তারা থাকবেন, পাশাপাশি সম্ভাব্য যারা প্রার্থী এবং তৃণমূল পর্যায়ের নেতারাও অংশ নেবেন। সব মিলিয়ে সারা দেশের চার হাজার নেতার সমাগম ঘটবে এই সভায়।
বিএনপির সর্বশেষ ষষ্ঠ জাতীয় কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়েছিল ২০১৬ সালের ১৯ মার্চ। এর প্রায় ৯ বছর পরে দলের এত বড় একটা সাংগঠনিক আয়োজন বা পুনর্মিলন হতে যাচ্ছে। এর আগে ২০১৮ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি দলের জাতীয় নির্বাহী কমিটির সভা করেছিল বিএনপি। রাজধানীর লা মেরিডিয়ান হোটেলে তখন গ্রেফতার আতঙ্কের মধ্যেই দলটির নির্বাহী কমিটির প্রায় ৮০ ভাগ সদস্য উপস্থিত হয়েছিলেন। ওই সভায় নেতাদের যেকোনো প্রতিকূল পরিস্থিতিতে ঐক্যবদ্ধভাবে থাকা এবং বিএনপির পতাকাতলে থাকার জন্য নির্দেশনা দিয়েছিলেন চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। এর চার দিন পরে ৮ ফেব্রুয়ারি দুদকের একটি মামলায় তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
এদিকে বর্ধিত সভা সফলে ব্যাপক প্রস্তুতি নিচ্ছে বিএনপি। গতকাল জাতীয় সংসদ এলাকায় এই অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি পরিদর্শন করেন নেতারা। এ সময় দলের যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী বলেন, আগামী দিনের জাতির প্রত্যাশা একটা সুষ্ঠু, স্বাভাবিক ও সাধারণ নির্বাচন। যেটি গণতন্ত্রের ভিতকে শক্তিশালী করার জন্য বেশি দরকার। সেই দিকে আমরা বেশি নজর দিচ্ছি। আমাদের বিশ্বাস, দেশে যদি একটি গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত থাকে, জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়, তাহলে সব ষড়যন্ত্রকে মোকাবেলা করে আমরা আমাদের লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারব।
এ্যানী জানান, ২৭ তারিখের বর্ধিত সভায় চার হাজারের মতো নেতাকর্মী উপস্থিত থাকবেন। বর্ধিত সভা রাত পর্যন্ত চলবে। আগত নেতাকর্মীদের জন্য সকালের নাশতা, দুপুরের খাবার, সন্ধ্যার নাশতার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। ফ্যাসিবাদের দুঃশাসনের কারণে আমরা গত ১৫-১৬ বছর সাংগঠনিক তৎপরতা ও গোছানোর কাজটি আমরা ঠিক মতে করতে পারিনি। ৫ আগস্টের পর তৃণমূলে আমরা আমাদের সাংগঠনিক তৎপরতা শুরু করেছি। যার কারণে ২৭ ফেব্রুয়ারির বর্ধিত সভা আমাদের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

সভায় দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দেবেন জানিয়ে এ্যানী বলেন, সভায় সারা দেশের তৃণমূলের, বিশেষ করে থানা, পৌরসভা, জেলা, উপজেলা পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত হবেন। সাড়ে তিন থেকে চার হাজারের মতো নেতাকর্মী বর্ধিত সভায় থাকবেন। সেখানে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রাখবেন, নেতাকর্মীদের প্রয়োজনীয় বার্তা দেবেন। যা নেতাকর্মীদের মধ্যে ঐক্য তৈরি করবে।
বিএনপির মিডিয়া সেলের প্রধান ডা: মওদুদ হোসেন আহমেদ পাভেল বলেন, ১৯৯৭ সালের পর এই প্রথম দলের প্রথম নির্বাহী কমিটির বর্ধিত সভা আহ্বান করেছেন আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। সেখান থেকে মাঠ পর্যায়ের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি, সামাজিক ও অর্থনীতির অবস্থা বিরাজ করছে, সে সম্পর্কে সবার কাছ থেকে একটি ধারণা নিতে চান। ষড়যন্ত্র থেমে নেই। বাংলাদেশ যাতে গণতান্ত্রিক ধারণা সফল হতে না পারে তার জন্য দেশী-আন্তর্জাতিক বিভিন্ন পর্যায়ের ষড়যন্ত্র চলছে। এই অবস্থায় করণীয় কী, তা নিয়ে বর্ধিত সভায় দলের শীর্ষ পর্যায় থেকে দলের সব পর্যায়ের নেতাকর্মীদের একটি নির্দেশনা দেয়া হবে।
বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান জানান, বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে ১৯৯৭ সালে দলের বর্ধিত সভা হয়েছিল রাজধানীর সুন্দরবন হোটেলে। দীর্ঘ সময় পর এবার বর্ধিত সভা হতে যাচ্ছে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে, যিনি মূলত ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্নদ্রষ্টা। তিনি এই সভার মধ্য দিয়ে দলের সর্বস্তরে গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দেবেন বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।
ভেনু পরিদর্শনকালে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা রশিদুজ্জামান মিল্লাত, সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, ডা: রফিকুল ইসলাম, শাম্মী আখতার আমিরুল ইসলাম শিমুল, ডা: মাহবুব লিটন, শেখ ফরিদ আহমেদ মানিক, আব্দুস সাত্তার পাটোয়ারী, হাবিবুর রশীদ হাবিব প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন ।

 


আরো সংবাদ



premium cement