২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২ ফাল্গুন ১৪৩১, ২৫ শাবান ১৪৪৬
`
আত্মপ্রকাশ ২৮ ফেব্রুয়ারি

নতুন দলের নাম ও প্রতীকে প্রত্যাশার প্রতিফলন ঘটবে : জাতীয় নাগরিক কমিটি

-


জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্যসচিব আখতার হোসেন বলেছেন, আত্মপ্রকাশ ঘটতে যাওয়া নতুন দলের নাম নিয়ে আমরা অনেক প্রত্যাশার কথা পেয়েছি। জনমত জরিপে অনেকগুলো প্রস্তাবনা এসেছে, সেই প্রস্তাবগুলোর ক্ষেত্রে জুলাই বিপ্লবকে প্রাধান্য দিয়ে রাজনৈতিক দলের নামের ব্যাপারে মানুষের প্রত্যাশা পূরণে আমরা খেয়াল রাখছি। বাংলাদেশের ইতিহাস ও সংস্কৃতির সাথে সম্পৃক্ত, গণতন্ত্র, ন্যায়বিচার ও স্বাধীনতা ও জনগণের আশা-আকাক্সক্ষার প্রতিফলন হবে এমন নামই নতুন দলের হবে।
গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় রাজধানীর বাংলামোটর রূপায়ন টাওয়ারে নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে নতুন দলের আত্মপ্রকাশ উপলক্ষে আয়োজিত একটি সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন আখতার। সংবাদ সম্মেলনটি জাতীয় নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের যৌথ আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয়। এতে নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসিরউদ্দীন পাটোয়ারী, যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব, মুখপাত্র সামান্তা শারমিন, মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, সদস্য আকরাম হোসাইন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্যসচিব আরিফ সোহেল, মুখ্য সংগঠক আব্দ্লু হান্নান মাসউদ, আইন ও মানবাধিকার সেল সম্পাদক তারিকুল ইসলামসহ দুই সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় নতুন দল ঘোষণার তারিখ ও স্থান ঘোষণা করে মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেন, আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি বিকেল ৩টায় জাতীয় সংসদ ভবন সংলগ্ন মানিক মিয়া এভিনিউতে আমরা আমাদের নতুন রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশ করতে যাচ্ছি। আমরা আশা করি আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি নবদিগন্ত উন্মোচন হতে যাচ্ছে।

দেশব্যাপী পরিচালিত হওয়া ‘আপনার চোখে বাংলাদেশ’ শীর্ষক জনমত জরিপের বিষয়ে আখতার হোসেন বলেন, সারা দেশের দুই লাখের বেশি মানুষ আমাদের ক্যাম্পেইনে অংশগ্রহণ করেছেন এবং তাদের মতামত আমাদের জানিয়েছেন। দেশের সর্বস্তরের, সব জায়গার মানুষের সম্মিলিত মতামতের একটা বহিঃপ্রকাশ আমরা আমাদের এই উদ্যোগে দেখতে পেয়েছি। যে তিনটি কাজ করলে বাংলাদেশ বদলে যাবে এবং নতুন রাজনৈতিক দলের কাছে মানুষের প্রত্যাশার জায়গা, রাজনৈতিক দলের নাম, প্রতীক কি হতে পারে সেগুলো জানতে চেয়েছিলাম। প্রায় দুই লাখ মানুষ অনলাইনে এবং অফলাইনে আমাদের জরিপে অংশগ্রহণ করে তাদের মতামত ব্যক্ত করেছে।
তিনি বলেন, জনগণের হয়ে তাদের মতামতের ভিত্তিতে এবং সম্পৃক্ততা নিয়ে আমরা যে নতুন রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশের কথা বলছি সেখানে জনগণের মতামতের ভিত্তিতে বিষয়গুলো চিহ্নিত করা হয়েছে। মানুষ প্রথমেই বলেছে, দেশকে দুর্নীতিমুক্ত করতে হবে, দুর্নীতির বিরুদ্ধে সদা জাগ্রত থাকতে হবে এবং দুর্নীতিবাজদের আইনের আওতায় নিয়ে আসতে হবে। সারা দেশে সরকারি-বেসরকারি কোনো বিষয়েই যেন দুর্নীতি সংঘটিত হতে না পারে সেটি নিশ্চিত করতে হবে। ক্ষমতার অপব্যবহার রোধ করে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে। সামাজিক ন্যায়বিচার এবং সবার জন্য সমান সুযোগ তৈরির বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি, সকল বৈষম্য হ্রাস করতে হবে।

নতুন রাজনৈতিক দলের কাঠামো কেমন হওয়া উচিত সেটির ব্যাপারে জরিপের ফলাফল উল্লেখ করে আখতার বলেন, মানুষ চায় যাতে নেতৃত্ব নির্বাচনে সততা ও আদর্শের প্রতিফলন হয়। দল যাতে এক নায়কতান্ত্রিক না হয়ে যায় এবং পরিবারতন্ত্রের খপ্পরে না পড়ে, এমন নতুন ধারার একটি রাজনৈতিক দলের প্রত্যাশা মানুষ করেছেন। দলীয় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্র চর্চার কথা মানুষ সর্বাধিক জোর দিয়ে বলেছেন। আমাদের রাজনৈতিক দলে নারী, তরুণদের অংশগ্রহণ, প্রান্তিক জনগোষ্ঠী, সমাজের নানা শ্রেণী পেশার মানুষ, নানা মতামতের মানুষের অংশগ্রহণ যাতে আমরা নিশ্চিত করতে পারি এরকম দাবি এসেছে।
দলের নামের ব্যাপারে নাগরিক কমিটির সদস্যসচিব বলেন, দলের নাম নিয়ে অনেকগুলো প্রস্তাবনা এসেছে, সেই প্রস্তাবগুলোর ক্ষেত্রে জুলাই বিপ্লবকে প্রাধান্য দিয়ে রাজনৈতিক দলের নামের ব্যাপারে মানুষের প্রত্যাশা আমরা খেয়াল করেছি। বাংলাদেশের ইতিহাস ও সংস্কৃতির সাথে সম্পৃক্ত, গণতন্ত্র, ন্যায়বিচার ও স্বাধীনতার প্রতিফলন হবে এমন নামের কথা এসেছে। আমরা অনেকগুলো নামের পরামর্শ পেয়েছি। এর মধ্যে ‘জনতার দল’, ‘নতুন বাংলাদেশ পার্টি’, ‘বিপ্লবী দল’, ‘নাগরিক শক্তি’, ‘ছাত্র জনতা পার্টি’, ‘বাংলাদেশ বিপ্লবী পার্টি ’, ‘জাতীয় শক্তি’সহ প্রায় ৩০টির মতো নাম ঘুরেফিরে এসেছে। আমরা এই নামগুলো পর্যালোচনা করেছি এবং আমরা আশাবাদী যে আত্মপ্রকাশের আগেই আমরা সেটি চূড়ান্ত করতে পারব।

 


আরো সংবাদ



premium cement