ভাই-বোন নানা-নাতিসহ বিভিন্ন স্থানে নিহত ১০
- নয়া দিগন্ত ডেস্ক
- ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০০:০০
দেশের বিভিন্ন স্থানে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় গতকাল ভাই-বোন ও নানা-নাতিসহ ১০ জন নিহত হয়েছেন।
নোয়াখালী অফিস জানায়, নোয়াখালীর সদর ও কোম্পানীগনজ উপজেলায় পৃথক ২টি সড়ক ট্রাক চাপায় দুই শিশুর ও একনারীর মৃত্যু হয়েছে। নিহত শিশু তারা সম্পর্কে আপন মামাতো ফুফাতো ভাই-বোন। এ ঘটনায় নিহত শিশু আরাফাতের বাবা আবুল কালামকে গুরুত্বর আহত অবস্থায় ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে সদর উপজেলার চরমটুয়া ইউনিয়নের ইসলামীয়া সড়কের বৈকন্ঠপুর বাজারের পশ্চিম পাশে ভূঞা বাড়ির সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন, একই ইউনিয়নের ন্যার্যার ভাঙতি গ্রামের সাদ্দাম হোসেনের মেয়ে আসমা বেগম (৬) ও ফরিদাবাদ গ্রামের আবুল কালামের ছেলে মো.আরাফাত (৫)। তারা স্থানীয় কোয়ালিটি এডুকেশন স্কুলের দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল।
স্থানীয়রা জানান, সকাল সোয়া ৮টার দিকে আবুল কালাম শ্বশুর বাড়িতে যায়। সেখান থেকে সাইকেল যোগে তার ছেলে আরাফাত ও শ্যালকের মেয়ে আসমাকে নিয়ে স্কুলে যাচ্ছিলেন। সাইকেলটি উপজেলার চরমটুয়া ইউনিয়নের ইসলামীয়া সড়কের বৈকন্ঠপুর বাজারের পশ্চিম পাশে ভূঞা বাড়ির দরজায় পৌঁছালে স্থানীয় নতুনহাট বাজার গ্রামী একটি ট্রাক সেটিকে চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই দুই শিশুর মৃত্যু হয়। স্থানীয়রা আহত অবস্থায় আবুল কালামকে উদ্ধার করে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে।
এদিকে কোম্পানীগঞ্জে ট্রাকের ধাক্কায় এক মানসিক প্রতিবন্ধী নারী নিহত হয়েছেন। মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি সকাল সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার সিরাজপুর ইউনিয়নের হাবীবপুর গ্রামের কোম্পানীগঞ্জ - দুধমুখা সড়কের মোল্লা বাড়ির সামনে এ দূর্ঘটনা ঘটে। পুলিশ দুপুরে লাশ ময়না তদন্তের জন্য ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।
আমতলী (বরগুনা) সংবাদদাতা জানান, নাতি আদিবকে নিয়ে মেয়ের বাড়ি যাওয়া হলো না নানা আতাহার গাজীর। পথে ইউনিক পরিবহন বাসের চাপায় মাহেন্দ্র গাড়ির দুই যাত্রী নানা আতাহার গাজী (৬০) ও তার নাতি আদিব (৭) এবং মোটরসাইকেল চালক শহীদুল ইসলাম হাজী (৫৫) নিহত হয়েছেন। পুলিশ ঘাতক বাসটি জব্দ করেছে। ঘটনা ঘটেছে মঙ্গলবার দুপুর পৌনে ২টার দিকে আমতলী-পটুয়াখালী মহাসড়কের আমড়াগাছিয়া রহমান ফিলিং স্টেশনের সামনে।
জানা গেছে, ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা কুয়াকাটাগামী ইউনিক পরিবহন বাসটি (ঢাকা মোট্রো-ব-১৪-৮৭৮১) আমতলী-পটুয়াখালী মহাসড়কের আমড়াগাছিয়া রহমান ফিলিং স্টেশনের সামনে বিপরীত দিক থেকে আসা যাত্রীবাহী মাহেন্দ্র গাড়ির মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে মাহেন্দ্র গাড়িটি সড়কের পাশে পড়ে যায়। ওই মাহেন্দ্র গাড়ির পেছনে থাকা মোটরসাইকেলের ওপর বাসটি তুলে দেয়। এতে ঘটনাস্থলে মোটরসাইকেল চালক শহীদুল হাজী (৬০) নিহত হন বলে জানান প্রত্যক্ষদর্শী মো: মিজানুর রহমান ও মো: রাহাত তালুকদার। তাৎক্ষণিক স্থানীয়রা মাহেন্দ্র গাড়ির যাত্রী আতাহার গাজী ও তার নাতি আদিবসহ আহতদের উদ্ধার করে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। ওই হাসপাতালে চিকিৎসক রাশেদ মাহমুদ রোকনুজ্জামান শিশু আদিবকে মৃত ঘোষণা করেছেন। অপর আহত মনির সিকদার (৪০) ও নানা আতাহার গাজীকে চিকিৎসা শেষে বরিশালে পাঠানো হয়েছে। বরিশালে নেয়ার পথে বেলা সাড়ে ৩টার দিকে নানা আতাহার গাজী লেবুখালী নামকস্থানে মারা যান। পুলিশ ঘাতক বাসটি ডাক্তারবাড়ী স্ট্যান্ড থেকে আটক করেছে। কিন্তু চালক ও হেল্পার পালিয়েছে। নিহত শহীদুল হাজীর বাড়ি গুলিশাখালী ইউনিয়নের ডালাচালা গ্রামে। তার বাবার নাম রফিক হাজী। নিহত শিশু আদিবের বাড়ি চাওড়া লোদা গ্রামে। তার বাবার নাম হিমু আকন। নানা আতাহার গাজীর বাড়ি বাইনবুনিয়া গ্রামে। নানা-নাতিসহ তিনজন নিহতের ঘটনার এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
ঈশ্বরদী (পাবনা) সংবাদদাতা জানান, পাবনার ঈশ্বরদীতে যাত্রীবাহী সিএনজি চালিত অটোরিকশার সাথে গরু বোঝাই তিন চাকার করিমনের মুখোমুখি সংঘর্ষে একজন নিহত ও চারজন আহত হয়েছেন। মঙ্গলবার সকালে উপজেলার আলহাজ মোড়ে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত আকমাল হোসেন (৩৭) উপজেলার দাশুড়িয়া নওদাপাড়া এলাকার সাবেদ আলীর ছেলে। আহতরা হলেন- পাকশী রূপপুর গ্রামের মজিবুল হকের ছেলে লকিবুল হক (৪০), পৌরসভার পাতিলাখালি গ্রামের আব্দুল মজিদের স্ত্রী রেনু বেগম (৫০), সিএনজি চালক মো: ইসরাফিল হোসেন (৪০), আহত অপরজনের নাম জানা যায়নি।
সিএনজি চালক ও ঈশ্বরদী ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের সদস্যরা জানান, ঘটনার সময় অটোরিকশাটি দাশুড়িয়া থেকে যাত্রী নিয়ে ঈশ্বরদী শহরের দিকে আসছিল। এ সময় গরু বোঝাই শ্যালো ইঞ্জিন চালিত তিন চাকার করিমন গাড়িটি অরণকোলা হাটে যাচ্ছিল। ঘটনাস্থলে সিএনজি চালিত অটোরিকশা ও নসিমনের মুখোমুখি সংঘর্ষ বাধে। এ সময় অটোরিকশার যাত্রীরা গুরুতর আহত হন।
আহতদের উদ্ধার করে ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক আকমাল হোসেনকে মৃত ঘোষণা করেন।
খুলনা ব্যুরো জানায়, খুলনায় সড়ক দুর্ঘটনায় তপন সাহা (৫৫) নামে এক মুড়ি বিক্রেতা নিহত হয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার নগরীর আড়ংঘাটা থানার লতা বাইপাস রোডের এ দুর্ঘটনায় নিহত তপন ডুমুরিয়া উপজেলার মধুগ্রামের বাসিন্দা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকাল সাড়ে ৭টার দিকে মুড়ি বিক্রেতা তপন নগরীর আড়ংঘাটা থানার লতা বাইপাস সড়ক দিয়ে যাচ্ছিলেন। এ সময় একটি দ্রুতগামী ট্রাক তাকে ধাক্কা দিলে তিনি রাস্তার উপর পড়ে মাথায় আঘাত পান। স্থানীয়রা তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডাক্তার মৃত ঘোষণা করেন।
আড়ংঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো: তুহিনুজ্জামান বলেন, প্রাণ গ্রুপের একটি দ্রুতগামী ট্রাকের ধাক্কায় তপন সাহা নিহত হয়েছেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি জানান, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে মোটরসাইকেল ও সিএনজির সংঘর্ষে বেবী দেবনাথ (৩৩) নামের এক নারী নিহত ও দুইজন আহত হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার শিবপুর-রাধিকা সড়কের সাহারপাড় নামক স্থানে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত বেবী দেবনাথ বাঞ্ছারামপুর উপজেলার দশানি গ্রামের তাপস দাসের স্ত্রী।
তাপস দাস জানান, তারা সিএনজি চালিত অটোরিকশায় বাঞ্ছারামপুর থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার দিকে যাচ্ছিলেন। এ সময় উল্টো দিক থেকে আসা একটি মোটরসাইকেলের সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষে তার স্ত্রী মারা যান।
সিংড়া (নাটোর) সংবাদদাতা জানান, সিংড়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় মোজাফ্ফর হোসেন (৬৫) নামের এক ভ্যানযাত্রী নিহত হয়েছেন। মঙ্গলবার সকাল ৯টায় উপজেলার হাতিয়ান্দহ ইউনিয়নের বড় সাঐল লাল স্কুল নামক স্থানে এই দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত ব্যক্তি উপজেলার কুশাবাড়ি গ্রামের মৃত ময়নাল প্রামাণিকের ছেলে।
নিহতের পরিবার ও থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, কৃষক মোজাফ্ফল হোসেন অটোভ্যানে তার মেয়ের বাড়িতে বেড়াতে যাচ্ছিলেন। পথ্যে বড় সাঐল লাল স্কুল নামক স্থানে অপর দিক থেকে আসা আরেকটি ভ্যানগাড়ির সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষে তার মৃত্যু হয়। খবর পেয়ে স্বজনরা লাশ উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে আসেন।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা