বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে প্রচলিত জ্ঞানকে চ্যালেঞ্জ করার জায়গা
- পাবনা ও পাবিপ্রবি প্রতিনিধি
- ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০০:০০
‘বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে প্রচলিত জ্ঞানকে চ্যালেঞ্জ করার জায়গা। শিক্ষকরা সূত্র ধরিয়ে দেবেন, কিন্তু আপনাদের শিখতে হবে চার দেয়ালের বাইরের সমাজ, বন্ধু, স্বজন ও বাস্তব জীবন থেকে।’ শিক্ষার্থীদের এভাবেই নতুন চিন্তা ও অনুসন্ধিৎসু মানসিকতা গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান ও যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিষ্টিংগুইশড প্রফেসর আলী রীয়াজ।
তিনি বলেন, প্রথমেই কোনো ধারণা অন্ধভাবে গ্রহণ বা নাকচ করবেন না। প্রচলিত জ্ঞান অর্জনের পাশাপাশি শিখতে হবে পরিবেশ থেকে, সমাজ থেকে, বঞ্চিত মানুষের অভিজ্ঞতা থেকে। এই বহুমুখী শিক্ষাই আপনাদের সমৃদ্ধ করবে।
গতকাল (১১ ফেব্রুয়ারি) তিনি পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পাবিপ্রবি) ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের ওরিয়েন্টেশন প্রোগ্রামে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, দশকের পর দশক ধরে যে বৈষম্য চলে আসছে সেই বৈষম্য শুধু প্রাণের বিনিময়ে দূর হবে না। আজকে আমরা যে বৈষম্যের কথা বলছি- যেই আন্দোলনের জন্য মানুষ জীবন দিলো, যে দাবিতে যে তাগিদে মানুষ প্রাণ দিয়েছে সেটা আগামীকাল অর্জিত হবে এটি মনে করার কোনো কারণ নেই। অনেকেই আশাহত হচ্ছেন- এত প্রাণ গেল, এত কিছু হলো কই বৈষম্য তো কমছে না। যেই বৈষম্য তৈরি হয়েছে বছরের পর বছর, যুগের পর যুগ কাঠামোগতভাবে তৈরি করা হয়েছে, প্রতিষ্ঠান দিয়ে যাকে স্থায়ীকরণ করা হয়েছে, তা কেবল প্রাণের বিনিময়ে সবগুলো অবিলম্বে অর্জন করতে পারব এটি মনে করার কোনো কারণ নেই। কিন্তু আমরা প্রত্যেকে দায়িত্ববোধের দিক থেকে আমার আচরণ দিয়ে জ্ঞান দিয়ে চর্চা দিয়ে একটু একটু করে গ্রাস করতে পারব।
ভিন্নমতের প্রতি সহনশীলতার গুরুত্ব তুলে ধরে তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের বড় সৌন্দর্য হচ্ছে ভিন্নমতকে সহ্য করা। ভিন্নমত ধারণ, ভিন্নমতকে শ্রদ্ধা ও ভিন্নমতের অধিকারকে রক্ষা করা জীবনের বড় অর্জন। ভিন্নমত সহ্য করতে পারলে মুক্তভাবে চিন্তা করা যায়। তা না হলে সমাজে বৈষম্য তৈরি হয়।
তিনি বলেন, এ দেশের মানুষ বহু বছর ধরে ভিন্ন ভিন্ন পরিচয়ে সহাবস্থান করছে। আমাদের সমাজ বহুত্ববাদী এবং এ বহুত্ববাদকে গ্রহণ করাই হবে সভ্যতার অগ্রগতি। ভিন্নমত সহ্য করতে পারলে আমরা মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত হতে পারব।
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনার জ্ঞান যেন প্রযুক্তিগত এবং প্রায়োগিক হয়। সুবিধাভোগীদের দায়িত্ব হবে সুবিধাবঞ্চিতদের জন্য কাজ করা এবং সমাজে বৈষম্য কমিয়ে সবার প্রতি সহমর্মিতা গড়ে তোলা। অন্যায়ের বিরুদ্ধে স্পষ্ট কণ্ঠস্বর থাকা উচিত, কারণ ছোট অন্যায়ও এক দিন বড় হয়ে সমাজকে ধ্বংস করে দিতে পারে।
পাবিপ্রবি ভিসি প্রফেসর ড. এস এস আবদুল আওয়ালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেন মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. মো: আনোয়ারুল আজিম আখন্দ, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ এবং রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. এস এ আব্দুর রাজ্জাক। শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন পাবিপ্রবির প্রোভিসি মো: নজরুল ইসলাম।
প্রফেসর আলী রীয়াজ বলেন, আপনার সাফল্যের পেছনে পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের অবদান রয়েছে। সেই অবদানকে স্বীকার করে আপনাদের জ্ঞান দিয়ে সমাজকে এগিয়ে নিতে হবে। সৃজনশীলতা, সহমর্মিতা ও ন্যায়বোধ আপনাদের জীবনের মৌলিক অংশ হতে হবে।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন বাংলা বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড: মীর হুমায়ুন কবীর এবং নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের শিক্ষিকা সাইমন নাহার রিতু।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা