হজযাত্রায় এজেন্সির গাফিলতি থাকলে লাইসেন্স বাতিল : ধর্ম উপদেষ্টা
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০০:০৫
ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেছেন, হজ সেবাদানকারী কোম্পানির সাথে ১৪ ফেব্রুয়ারির মধ্যেই সব চুক্তি স্বাক্ষর করতে হবে। সৌদি সরকারের পক্ষ থেকে চুক্তির এ সময় আর বৃদ্ধি করা হবে না। বাংলাদেশ থেকে নিবন্ধিত কোনো ব্যক্তি এজেন্সির অবহেলায় হজ পালন করতে না পারলে তার দায় সংশ্লিষ্ট এজেন্সিকে নিতে হবে।
গতকাল ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে ২০২৫ সালের হজ ব্যবস্থাপনার সর্বশেষ অগ্রগতির বিষয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, হজের জন্য এবার ৮৭ হাজার ১০০ জন নিবন্ধন করেছেন। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় পাঁচ হাজার ২০০ জন এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৮১ হাজার ৯০০ জন। সরকারি ব্যবস্থাপনায় যারা নিবন্ধন করেছেন তাদের সবার চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে। বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় যারা নিবন্ধন করেছেন, তাদের ক্ষেত্রে অনেক এজেন্সিকে চুক্তি সম্পন্ন করতে ধীরগতি দেখা যাচ্ছে। সময় আর চার দিন বাকি থাকলেও নিবন্ধন করা প্রায় অর্ধেক হজযাত্রীর চুক্তি এখনো সম্পন্ন হয়নি। বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় মাত্র ৪৫ হাজার হজযাত্রীর চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে।
আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেন, ১৪ ফেব্রুয়ারির মধ্যে সব চুক্তি সম্পন্ন করতে হবে। কোনো পরিস্থিতিতেই চুক্তি সম্পন্ন করার সময় বাড়ানো হবে না। যদি কারো চুক্তি সম্পন্ন না হয় তার দায় সৌদি সরকার নেবে না, বাংলাদেশ সরকারও নেবে না। সব দায় এজেন্সিকে নিতে হবে। এজেন্সির অবহেলায় কোনো হজযাত্রী হজ করতে না পারলে এজেন্সির বিরুদ্ধে কী ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হবে, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, এজেন্সির লাইসেন্স বাতিল তো হবেই। আর্থিক জরিমানাও করা হবে।
উপদেষ্টা বলেন, এ বছর সরকারি মাধ্যমে সাধারণ হজ প্যাকেজ-১ এ নিবন্ধিত হজযাত্রীদের জন্য মক্কায় হারাম শরিফের বহির্চত্বর থেকে সর্বোচ্চ এক দশমিক ৬ কিলোমিটারের মধ্যে বাড়িভাড়া করা হয়েছে। এ জন্য এই প্যাকেজের বাড়িভাড়া ও পরিবহনসেবা খাতের টাকা সমন্বয় করা হয়েছে। অন্যদিকে, সাধারণ হজ প্যাকেজ-২ এর হজযাত্রীদের জন্য মক্কায় যেসব হোটেল ভাড়া করেছি সেগুলোর সর্বোচ্চ দূরত্ব হবে এক দশমিক দুই কিলোমিটার। এ ছাড়া মদিনায় হজ প্যাকেজ-১ এর হজযাত্রীদের জন্য সর্বোচ্চ এক কিলোমিটারের মধ্যে এবং হজ প্যাকেজ-২ এর হজযাত্রীদের জন্য ৩০০-৬০০ মিটারের মধ্যে হোটেল ভাড়া করা হয়েছে।
ড. খালিদ বলেন, হজ প্যাকেজ-১ এর হজযাত্রীরা মিনায় জোন-৫ এর তাঁবুতে অবস্থান করবেন এবং হজ প্যাকেজ-২ এর হজযাত্রীরা মিনায় জোন-২ এর তাঁবুতে অবস্থান করবেন। তিনি আরো বলেন, অতীত অভিজ্ঞতার আলোকে বিশ্বস্ত হজ সেবা প্রদানকারী কোম্পানিগুলোর সাথে চুক্তি সম্পাদন করা হয়েছে। এ বছর সরকারি মাধ্যমে হাজীরা সন্তোষজনক সেবা পাবেন বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
ড. খালিদ আরো বলেন, হজ সার্ভিস কোম্পানির সাথে ১৪ ফেব্রুয়ারির মধ্যে চুক্তি সম্পাদনের বিষয়টি গত বছরের ২৩ অক্টোবর সৌদি হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয় হতে জানানো হয়। পরবর্তীতে আরো কয়েকবার চিঠি দিয়ে আমাদেরকে এ বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে এবং সে অনুসারে ধর্ম মন্ত্রণালয় হতে সংশ্লিষ্ট এজেন্সিগুলোকে জানানো হয়েছে। তিনি সৌদি সরকারের বেঁধে দেয়া সময় ১৪ ফেব্রুয়ারির মধ্যেই সব হজ এজেন্সিকে হজ সেবাদানকারী কোম্পানির সাথে সব ধরনের চুক্তি সম্পাদন করার অনুরোধ জানান।
এ সময় ধর্মসচিব এ কে এম আফতাব হোসেন প্রামাণিক, হজ অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো: মতিউল ইসলাম, যুগ্মসচিব ড. মো: মঞ্জুরুল হক, উপদেষ্টার একান্ত সচিব ছাদেক আহমদসহ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ বিশ্বে কুরআন চর্চার উর্বর ভূমি : ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেছেন, বাংলাদেশ গোটা বিশ্বে কুরআন চর্চার উর্বর ভূমি। এদেশের কুরআনের হাফেজরা বহু বছর ধরে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে দেশের সুনাম বৃদ্ধি করে চলেছেন। তারা প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে প্রথম, দ্বিতীয় কিংবা তৃতীয় পুরস্কার অর্জন করছেন। গতকাল রাজধানীর সার্কিট হাউস রোডে তথ্য ভবনে নুরুত তাহফিজ ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের আয়োজনে প্রথম জাতীয় কুরআন প্রতিযোগিতার গ্র্যান্ড ফিনালে ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, মাতৃভাষা বাংলা হওয়ার পরও আমাদের দেশের প্রতিযোগীরা আরবি ভাষাভাষী মিসর, সৌদি আরব, কুয়েত, কাতার প্রভৃতি দেশের প্রতিযোগীদের হারিয়ে পুরস্কার নিয়ে আসছে। এ অর্জনে আমাদের বুক গর্বে স্ফীত হয়ে ওঠে। বাংলাদেশের কুরআনের হাফেজরা যাতে আন্তর্জাতিকমানের আলেম কিংবা ইসলামী বুদ্ধিজীবী হতে পারে সে ব্যাপারেও তিনি সংশ্লিষ্টদের সোচ্চার হওয়ার অনুরোধ জানান।
পরে উপদেষ্টা এ প্রতিযোগিতায় বিজয়ী কুরআনের হাফেজদের হাতে সম্মাননা স্মারক ও নগদ অর্থ তুলে দেন।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা