কর সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত বাজেটের মাধ্যমে আসা উচিত
- বিশেষ সংবাদদাতা
- ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৩:১৭
![](https://www.dailynayadiganta.com/resources/img/article/202502/19691302_186.jpg)
কর সংক্রান্ত যেকোনো সিদ্ধান্ত বাজেটের মাধ্যমে আইনগতভাবে আসা উচিত বলে মনে করে বিশ^ব্যাংক। বিশ^ব্যাংক থেকে আরো বলা হয়েছে, কয়েক সপ্তাহ বা মাসের মধ্যে অবশ্যই করপ্রশাসন থেকে করনীতি পৃথক করা উচিত।
গতকাল বাংলাদেশ সফররত বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের ভাইস প্রেসিডেন্ট মার্টিন রাইজার অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সাথে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের কাছে এ কথা বলেন।
উল্লেখ্য, গত মাসে সরকার হঠাৎ করে শতাধিক পণ্যের ওপর ভ্যাটহার বৃদ্ধি করে। পরে আবার কয়েকটি পণ্যের ওপর থেকে বর্ধিত ভ্যাটহার প্রত্যাহার করে নেয়া হয়।
এ বিষয়ে অর্থ উপদেষ্টা সাংবাদিকদের বলেন, কর প্রশাসন থেকে করনীতি আমরা আলাদা করব, রাজস্ব আদায় বাড়ানোর জন্যও আমরা চেষ্টা করছি।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) তাদের ঋণের কিস্তি দেয়ার বিষয়টি কি পিছিয়ে দিয়েছে কিনা এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, আমি শুনেছি তারা মার্চ মাসে বোর্ড মিটিং করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে। একটি পত্রিকা লিখেছে এই বৈঠক পিছিয়ে জুনে নিয়ে যাওয়া হয়েছে এই প্রশ্নের জবাবে সালেহউদ্দিন বলেন, আমাকে এ বিষয়ে অবহিত করা হয়নি। তবে আমাদের দিক থেকে হলো-এখন কিন্তু আমাদের লেনদেনের ভারসাম্য পরিস্থিতি মোটামুটি ভালো, ফাইন্যান্সিয়াল অ্যাকউন্টও ভালো, আমরা এখন মরিয়া হয়ে উঠিনি, তাদের সাথে একটি চুক্তি হয়েছে, টাকা দিলে দেবে, না দিলে- আমারও কোনো সিদ্ধান্ত নেইনি, তারাও কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি।
এ দিকে, রাইজার সাংবাদিকদের বলেন, আমরা চলমান সংস্কার নিয়ে আলোচনা করেছি। বিশেষ কর প্রশাসন ও ক্রয়নীতি উন্নয়নের আরো স্বচ্ছতার কথা বলেছি। একই সাথে সুশাসন, নীতি এবং তথ্য প্রবেশ্যতা এবং পরিসংখ্যান বুরোর (বিবিএস) উন্নয়নের কথা বলেছি। স্বচ্ছতার ওপর আমরা গুরুত্ব দিয়েছি যাতে জনগণ দেখতে পারে সরকার আসলে কী করছে।
অনেক দিন ধরে বিশ^ব্যাংকের পক্ষ থেকে কর প্রশাসনকে বাস্তবায়ন থেকে পৃথক করার কথা বলা হচ্ছে- এ বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে কিনা-এ প্রশ্নের জবাবে রাইজার বলেন, অবশ্যই এ বিষয়ে নিয়ে আমাদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। অর্থ উপদেষ্টা আমাদের জানিয়েছেন, ইতোমধ্যে উপদেষ্টা পরিষদ সভায় সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে কর প্রশাসন থেকে করনীতি পৃথক করা হবে। আমরা অবশ্যই তার বাস্তবায়ন করব। এখন দেখা যাক তারা এ বিষয়ে কী করে।
এ বিষয়ে কোনো সময় নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা চাই বিষয়টি কয়েক সপ্তাহ বা কয়েক মাসের মধ্যে বাস্তবায়ন করা হোক। কিন্তু আমরা এটি বুঝি এ জন্য কিছু অভ্যন্তরীণ নিয়ম রয়েছে। রাইজার আরো বলেন, আমরা বলেছি, যেকোনো কর সংক্রান্ত বিষয় বাজেটের মাধ্যমে আইনিভাবে আরোপ করা প্রয়োজন।
দেশের বর্তমান সামষ্টিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি হেসে বলেন, দেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি কেমন তা তোমরাই বুঝতে পারছো। এ বিষয়ে আমি কিছু বলতে চাইনা। তারপরে অর্থনীতিতে বিভিন্ন ধরনের চ্যালেঞ্জ রয়েছে, তবে বাংলাদেশ এমন একটি দেশ যার অপার সম্ভাবনা রয়েছে। এই সম্ভাবনাকে বাস্তবায়ন করতে আমরা সহায়তা দিতে চাই।
উল্লেখ্য বিশ^ব্যাংকের দক্ষিণ এশীয় বিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট রাইজার চার দিনের সফরে গত শনিবার বাংলাদেশে এসেছেন।
সফরকালে মার্টিন রাইজার অন্তর্র্বতী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস, জ্বালানিবিষয়ক উপদেষ্টা এম ফাওজুল কবির খান, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুরসহ সরকারি কর্মকর্তা, সুশীল সমাজ, বেসরকারি খাতের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। তাঁর সঙ্গে আরও রয়েছেন বিশ্বব্যাংকের সমৃদ্ধিবিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট পাবলো সাভেদ্রা। স্বাধীনতার পর থেকে বাংলাদেশের উন্নয়নের অন্যতম অংশীদার বিশ্বব্যাংক। বাংলাদেশকে সম্প্রতি ৪ হাজার ৪০০ কোটি মার্কিন ডলার দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বিশ্বব্যাংক।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা