সমুদ্রের জীবন্ত ইতিহাস ভ্যাকিটা
- নয়া দিগন্ত ডেস্ক
- ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০২:০৬
সমুদ্রের অপরূপ সৌন্দর্যমণ্ডিত জীববৈচিত্র্য শুধুই আমাদের কল্পনার রাজ্য নয়, এর পেছনে আছে গভীর রহস্য। এটি এমন একটি পৃথিবী, যেখানে প্রতিটি প্রাণী তার অস্তিত্বের মাধ্যমে তার অবদান রাখে। কিন্তু এই জগতের কিছু বাসিন্দা আজ বিপন্ন। তাদের হারিয়ে যাওয়ার হুমকি ছড়িয়ে পড়েছে সমুদ্রের সীমানায়। এর মধ্যে অন্যতম একটি প্রাণী হলো ভ্যাকিটা। এ প্রাণীটি একসময় প্রাচীন সাগরের মিষ্টি ছায়ায় জীবনযাপন করত, কিন্তু এখন এক কঠিন সঙ্কটে।
ভ্যাকিটা বৈজ্ঞানিক ভাষায় ‘ফোকোইনা সাইনাস’ নামে পরিচিত। একটি ছোট ধরনের ডলফিন, যা মূলত মেক্সিকোর ক্যালিফোর্নিয়া উপসাগরের সীমিত অঞ্চলে বাস করে। এ প্রাণীটির আকার অত্যন্ত ছোট। এরা গড়ে ৪-৫ ফুট লম্বা এবং প্রাপ্তবয়স্ক ভ্যাকিটার ওজন প্রায় ৪০-৫৫ কেজি হয়ে থাকে। এদের শরীরে কালো বৃত্তাকার চোখের আশপাশে সাদা রেখা থাকে, যা তাদের আলাদা পরিচিতি দেয়। নরম ত্বক, ছোট মুখ ও স্নিগ্ধ আচরণ এ প্রাণীটিকে সাগরের শান্তিপূর্ণ সত্তা হিসেবে পরিচিতি দিয়েছে।
ভ্যাকিটা পৃথিবীজুড়ে শুধু মেক্সিকোর ক্যালিফোর্নিয়া উপসাগরের খুব সীমিত অঞ্চলে দেখা যায়। এ অঞ্চলটি মেক্সিকোর গুলফ অব ক্যালিফোর্নিয়া বা বাক্যাল সি। যেখানে প্রায়ই সমুদ্রের গভীরে বাস করা এই বিরল প্রাণীটি দেখা যায়। এটি শুধু এই নির্দিষ্ট জায়গার সাগরে বাস করে এবং তার বাসস্থান বাঁচানোর জন্য এখন নানা উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। তবে কিছু বছর আগেও যেই সমুদ্র ছিল তাদের অভয়ারণ্য, সেই সমুদ্রই আজ তাদের জন্য বিপদের কারণ। বর্তমান সময়ে ভ্যাকিটার সংখ্যা প্রায় ১০ থেকে ১৫টি, যা একসময় ছিল কয়েক হাজার। এর কারণ খুঁজলে আমরা দেখতে পাই মানুষের ক্রমবর্ধমান কার্যক্রম। বিশেষ করে অবৈধ মাছ ধরা এবং সাঁতারি থলি চুরির জন্য ব্যবহৃত জালগুলো, যার ফলে ভ্যাকিটা অনেক সময় এর ফাঁদে আটকে পড়ে। এটি শুধু তাদের জীবনসংগ্রামের অংশ নয়, সমুদ্রের জীববৈচিত্র্যকে বিপন্ন করার একটি বিপজ্জনক দিক। ভ্যাকিটা প্রধানত সমুদ্রের গভীরে বিচরণ করে, যেখানে তারা খাবারের জন্য ছোট মাছ ও শামুক খায়। এর জীবনযাত্রা বেশ শান্ত, তবে এখন তাদের অস্তিত্ব সঙ্কটে। মেক্সিকো সরকার ও আন্তর্জাতিক পরিবেশবাদী সংস্থাগুলো এর সংরক্ষণে একযোগে কাজ করে আসছে। ‘ভ্যাকিটা সিপিআর’ প্রকল্পের মাধ্যমে বৈজ্ঞানিক দলগুলো ভ্যাকিটাদের রক্ষা করতে বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে, তবে তা সত্ত্বেও অবৈধ শিকার এবং সমুদ্রের দূষণের ফলে তাদের সংখ্যা কমতে কমতে ক্রমেই প্রায় বিলুপ্তির দিকে চলে যাচ্ছে। ইন্টারনেট।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা