যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে পাল্টা শুল্ক আরোপ কানাডা-মেক্সিকোর
পাল্টা ব্যবস্থা নেবে চীনও- নয়া দিগন্ত ডেস্ক
- ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০২:২৪
যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক আরোপের বিরুদ্ধে পাল্টা ব্যবস্থার ঘোষণা দিয়েছে কানাডা, মেক্সিকো ও চীন। কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো ও মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট ক্লাউদিয়া শেনবাউম পৃথকভাবে পাল্টা ব্যবস্থার ঘোষণা দিয়েছেন। এ ছাড়া চীনের দিক থেকেও একই ধরনের ঘোষণা এসেছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত শনিবার কানাডা ও মেক্সিকোর পণ্য আমদানিতে ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের আদেশ দিয়েছেন। এএফপি।
এ ছাড়া চীনের পণ্য আমদানিতে ১০ শুল্ক আরোপের আদেশ দিয়েছেন তিনি। গত শনিবার এ সংক্রান্ত তিনটি পৃথক নির্বাহী আদেশে সই করেছেন ট্রাম্প। এ আদেশ আগামীকাল মঙ্গলবার থেকে কার্যকর হবে। মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট ক্লাউদিয়া শেনবাউম গত শনিবার ঘোষণা দেন, যুক্তরাষ্ট্রের এ শুল্ক আরোপের বিরুদ্ধে পাল্টা ব্যবস্থা নেবে তার দেশ। শুল্ক আরোপসহ নিজস্ব অন্যান্য পদক্ষেপের মাধ্যমে এ পাল্টা ব্যবস্থা নেয়া হবে। মাদক পাচারকারী গোষ্ঠীগুলোর সাথে মেক্সিকো সরকারের মৈত্রী রয়েছে বলে ওয়াশিংটনের অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন ক্লাউদিয়া শেনবাউম। তিনি এ অভিযোগকে ‘অপবাদ’ হিসেবে অভিহিত করেছেন।
কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো বলেন, ১৫৫ বিলিয়ন ডলার মূল্যের মার্কিন পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করবে তার সরকার। মঙ্গলবার থেকে ৩০ বিলিয়ন ডলার মূল্যের মার্কিন পণ্যের ওপর এ শুল্ক কার্যকর হবে। আর বাকি ১২৫ বিলিয়ন ডলার মূল্যের মার্কিন পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপ কার্যকর হবে ২১ দিনের মধ্যে। অন্য দিকে চীনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তারা যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অনুরূপ পাল্টা ব্যবস্থা নেবে। চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এ কথা বলেছে।
চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক আরোপের পদক্ষেপে চীন ভীষণ অসন্তুষ্ট। তারা দৃঢ়ভাবে এর বিরোধিতা করে। এটি বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) নিয়মনীতির গুরুতর লঙ্ঘন। যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অনুরূপ পাল্টা ব্যবস্থা নেবে চীন। এ দিকে যেসব পণ্য আমদানিতে কানাডা শুল্ক আরোপ করছে, তার মধ্যে আছে আমেরিকান বিয়ার, ওয়াইন, বরবন উইস্কি, ফল, কমলার রস-সহ ফলের জুস, সবজি, পারফিউম, পোশাক, জুতোর মতো পণ্য।
এ ছাড়া গৃহস্থালিসামগ্রী, ক্রীড়াসামগ্রী, আসবাবপত্র, কাঠ ও প্লাস্টিকের মতো কাঁচামালও নতুন হারে শুল্কের আওতায় পড়বে। এর বাইরে গুরুত্বপূর্ণ কিছু খনিজ আমদানি এবং যুক্তরাষ্ট্র থেকে কেনাকাটার ক্ষেত্রে শুল্ক বহির্ভূত বিধিনিষেধ আরোপ করবে কানাডা। তবে ট্রুডো সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে বিস্তারিত বলেননি। সংবাদ সম্মেলনের শুরুতেই ট্রুডো সরাসরি আমেরিকার জনগণকে উদ্দেশ করে বলেন, এ পাল্টাপাল্টি শুল্কের ধাক্কা বাজার দর আর যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতির ওপর সরাসরি প্রভাব ফেলবে।
দুই দেশের মধ্যে গভীর ঐতিহাসিক সম্পর্কের কথা মনে করিয়ে দিয়ে কানাডার প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ এমন এক বন্ধুত্ব, যা নিয়ে বিশ্বের অনেক দেশ হিংসা করে। ট্রুডোকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, তিনি শুল্ক আরোপের বিষয়টি নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সাথে কথা বলেছেন কি না। উত্তরে কানাডার প্রধানমন্ত্রী বলেন, জানুয়ারিতে ট্রাম্পের অভিষেকের পর তিনি কথা বলার চেষ্টা করেছিলেন, এরপর আর করেননি।
শুল্ক নিয়ে এ লড়াই এড়াতে গত ডিসেম্বরে ফ্লোরিডায় ট্রাম্পের রিসোর্টে গিয়ে তার সাথে বৈঠক করেছিলেন ট্রুডো। তিনি বলেছেন, মার্কিন নেতার সাথে আলোচার জন্য তার দরজা খোলা আছে। প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার আগে থেকেই শুল্ক বাড়ানোর হুমকি দিয়ে আসছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। জানুয়ারিতে হোয়াইট হাউজে বসার পর তিনি ধীরে ধীরে তার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন শুরু করেছেন।
এ দিকে মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট ক্লাউদিয়া শেইনবাউম বলেছেন, তার সরকার উত্তর আমেরিকায় মেক্সিকোর শীর্ষ বাণিজ্য অংশীদারের সাথে সঙ্ঘাত নয়, আলোচনাই চেয়েছিল, কিন্তু মেক্সিকোকে পাল্টা ব্যবস্থা নিতে বাধ্য করা হয়েছে। মেক্সিকোর স্বার্থ সুরক্ষায় শুল্ক এবং শুল্ক বহির্ভূত নানান পদক্ষেপ মিলিয়ে যে প্ল্যান বি নিয়ে আমরা কাজ করছিলাম, তা বাস্তবায়নে আমি অর্থনীতিবিষয়ক মন্ত্রীকে নির্দেশনা দিয়েছি, পোস্টে এমনটাই বলেছেন তিনি।
মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট অবশ্য তার পাল্টা ব্যবস্থার খড়্গ কোন কোন মার্কিন পণ্যের ওপর পড়বে তা খোলাসা করেননি। তবে এ বিষয়ে অবগত একাধিক সূত্র রয়টার্সকে বলেছে, শূকরের মাংস, চিজ, টাটকা ফল-সবজি, প্রক্রিয়াজাত ইস্পাত, অ্যালুমিনিয়ামসহ যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা পণ্যে ৫ থেকে ২০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপের প্রস্তুতি নিচ্ছে মেক্সিকো। প্রাথমিকভাবে মোটরগাড়ি শিল্পকে এ তালিকার বাইরে রাখা হতে পারে, বলেছে তারা।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা