সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নেই কুরআন শিক্ষার ব্যবস্থা ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগ জরুরি
- নয়া দিগন্ত ডেস্ক
- ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০২:২৬
দেশের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে মৌলিক শিক্ষার অংশ হিসেবে প্রতিটি শিশুকে অন্যান্য ভাষা শিখানোর পাশাপাশি কুরআন শিক্ষার ব্যবস্থা নেই। অথচ আলেম সমাজ ও অভিভাবকদের পক্ষ থেকে দীর্ঘদিন ধরে প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগ না দেয়ায় কুরআান শিক্ষা দেয়া সম্ভব হচ্ছে না বলে জানানো হয়েছে যা রাষ্ট্রের অন্যতম দায়িত্ব।
দেশের অধিকাংশ শিশু যে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করছে সেখানে কুরআন শিক্ষার কোনো পাঠও নেই শিক্ষকও নেই। প্রাথমিকে ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা বিষয়ে শিক্ষার্থীরা কেবল নির্ধারিত সূরাগুলো মুখস্থ করার সুযোগ পায় যা তারা বাড়ি থেকে করে আসে। ধর্মীয় শিক্ষক না থাকায় কুরআন শিক্ষা সহি শুদ্ধভাবে করতে তাদের সক্ষমতা গড়ে ওঠে না। পরবর্তীতে এসব কোমল শিক্ষার্থী উপরের ক্লাসে গিয়ে কুরআনের সাথে সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।
প্রাথমিক স্তরে তৃতীয় থেকে পঞ্চম শ্রেণীর জন্য ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা বিষয়ে নির্ধারিত পাঠ্য বই থাকলেও কোনো বইয়েই ধারাবাহিক কুরআন শিক্ষার কোনো ব্যবস্থা নেই। তৃতীয় শ্রেণীর পাঠ্য বইয়ে আরবি বর্ণমালা এবং কিছু চিহ্নের ব্যবহার রয়েছে। ঠিক একইভাবে চতুর্থ শ্রেণীতে কারচিহ্ন এবং বানান করে পড়ার জন্য কিছু শব্দ ও বাক্য সন্নিবেশ করা হলেও কুরআন শিক্ষার আনুষ্ঠানিক কোনো আয়োজন নেই। একই কথা পঞ্চম শ্রেণীর বেলায়ও প্রযোজ্য। তাহলে শিক্ষার্থীরা প্রতিদিন কুরআন মাজিদ সহিহ উচ্চারণে পড়ার সুযোগ না পাওয়ায় ভবিষ্যতে কুরআন অর্থসহ বুঝে পড়া এবং তাদের জীবনে তা অনুসরণ করার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এর ফলে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম ধর্মীয় শিক্ষায় নীতি ও নৈতিকতা যথাযথভাবে অনুসরণ করতে পারে না। অপসংস্কৃতির ছোবলে পড়ে তারা নিজেদের পারিবারিক ও সামাজিকভাবে সুরক্ষা করতে পারে না। পরিণামে জাতীয়ভাবে দুর্নীতি প্রতিরোধ, অসৎ ও অন্যায় কাজ থেকে তাদের নিজেদের দূরে রাখা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে।
এসব বিষয় বিবেচনা করে তাদের শিক্ষার মান নিশ্চিত করতে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগ করা প্রয়োজন। অন্যান্য ধর্মাবলম্বী শিশুদের জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক অন্য ধর্মের শিক্ষক নিয়োগ দেয়া প্রয়োজন। মুসলিম দেশ হিসেবে শিশুকাল থেকেই কুরান শিক্ষা ফরজ আর এটি সাংবিধানিকভাবে রাষ্ট্রের দায়িত্ব। কিন্তু যারা প্রাথমিক শিক্ষার সিলেবাস তৈরি করেন তারা কখনো এসব বিষয় ভেবে দেখেননি বা কুরান শিক্ষার ব্যবস্থা না থাকায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রসংখ্যা ব্যাপকহারে কমে যাচ্ছে। একই সঙ্গে ধর্মীয় ও নৈতিক শিক্ষার অভাবে সমাজে অন্যায়, অনাচার, অনিয়ম এবং দুর্নীতি আইয়ামে জাহেলিয়াতকে হার মানিয়েছে।
প্রাথমিক বিদালয়ে ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগ দিলে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে, যা জুলাই বিপ্লবের সুফল ভোগের সুযোগ তৈরি করবে। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ছাত্রসংখ্যা বৃদ্ধি পাবে। সরকারের প্রতিশ্রুতি মোতাবেক মাদরাসার গ্র্যাজুয়েটদের সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বাড়তি সুযোগ সৃষ্টি হবে। অথচ মাঠ পর্যায় থেকে এ দাবি বারবার তোলা হলেও প্রাথমিক শিক্ষা সংস্কারে গঠিত কমিটি তা আমলে নিচ্ছে না। অভিযোগ উঠেছে কমিটিতে বাম ও নাস্তিক ঘরানার সদস্যরা ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগে বাধার সৃষ্টি করছে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা