০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৮ মাঘ ১৪৩১, ১ শাবান ১৪৪৬
`

চট্টগ্রামে ছাত্রলীগকর্মীকে ছাড়িয়ে নিলেন যুবদল নেতা

-


চট্টগ্রাম নগরে নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগের প্রকাশ্যে মিছিল নিয়ে তোলপাড় চলছে। নড়েচড়ে বসেছে পুলিশও। এরই মধ্যে সংগঠনটির এক সক্রিয় কর্মীকে হাতেনাতে ধরেন বিএনপির সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। এরপর পুলিশে দিলেও তাকে ছাড়াতে ‘ঢাল’ হয়ে দাঁড়ান যুবদলের এক নেতা। পুলিশ ছাত্রলীগের ওই কর্মীকে গাড়িতে তুললেও যুবদল নেতার বাধা আর ‘কড়া আল্টিমেটামে’ ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়।
পুলিশের দাবি, ছাত্রলীগের সক্রিয় ওই কর্মীকে ‘সন্দেহভাজন’ হিসেবে আটক করতে গিয়েছিলেন তারা। সেখানে গিয়ে এলাকাবাসীর প্রশ্নের মুখে পড়েন। আটক করে থানায় নেয়ার সময় লোকজন জড়ো হলে তাকে ছেড়ে দিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন পুলিশ সদস্যরা।
অন্য দিকে, হাতেনাতে পেয়েও নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠনের কর্মীকে নিজ দলের লোকেরা ছাড়িয়ে নেয়ায় ক্ষোভে ফুঁসছেন তৃণমূলের নেতাকর্মীরা। তারা বলছেন, যাদের কারণে আওয়ামী সরকারের আমলে হামলা-মামলা, জেল-জুলুমের শিকার হয়েছেন, তাদের হয়ে নিজ দলের নেতা এগিয়ে এসেছেন এটা লজ্জার বিষয়।

জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টার দিকে নগরের খুলশী থানার আমবাগান শহীদ মিনার এলাকায় মোশারফ হোসেন অভি নামে ছাত্রলীগের ওই কর্মীকে ধরে ফেলেন ছাত্রদল-যুবদলের নেতাকর্মীরা। এরপর তারা পুলিশে খবর দিলে তাকে গাড়িতে বসিয়ে থানার দিকে রওয়ানা দেয় পুলিশ। ওই সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন নগর যুবদলের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক আব্দুল হামিদ পিন্টু। ছাত্রলীগের ওই কর্মীকে আটক করে থানায় নিতে বাধা দেন তিনি। এ সময় সেখানে স্থানীয়রাও জড়ো হন। একপর্যায়ে পুলিশ অভিকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়। ছাত্রলীগকর্মী মোশারফ হোসেন অভি ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলের ও নগর যুবলীগের সহসভাপতি মোহাম্মদ ওয়াসিম উদ্দিন চৌধুরীর অনুসারী হিসেবে পরিচিত।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত যুবদলের এক নেতা বলেন, অভি সকালেও জিইসিতে মিছিল করেছে। সে দীর্ঘদিন ধরেই এলাকাতে ছিল না। আজ এসেছে এলাকায়। আমাদের কর্মীরা খবর পেয়ে তাকে পুলিশে দেয়। কিন্তু পিন্টু ভাই এসে ওসিকে ফোন দেন। তিনি ওসিকে বলেন, ‘আমি পিন্টুকে নিয়ে যেতে হবে অভিকে নিতে হলে’। একজন নিষিদ্ধঘোষিত কর্মীর জন্যে ওনার এত প্রেম কিসের?’

অভিযানে যাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে খুলশী থানার ওসি মোহাম্মদ মজিবর রহমান, ‘নিয়মিত অভিযানের অংশ হিসেবে আমাদের টিম আমবাগান এলাকায় গিয়েছিল সন্দেহভাজন একজনকে আটক করতে। পরে লোকজন সেখানে জড়ো হয়ে কেন বা কি কারণে আটক করছে তা জানতে চেয়েছে হয়তো। এরপর তাকে ছেড়ে দিয়ে তারা চলে আসে।’ এ বিষয়ে জানতে নগর যুবদলের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক আব্দুল হামিদ পিন্টুর মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
প্রসঙ্গত বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে নগরের প্রাণকেন্দ্র জিইসি মোড়ে প্রকাশ্যে মিছিল করেন নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। তবে ওই মিছিলের ঘটনায় কাউকে আটক করতে পারেনি পুলিশ। জানা গেছে, মিছিলটির নেতৃত্বে ছিলেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি মিজানুর রহমান মিজান। মিছিলটিতে অংশ নেয়াদের কয়েকজন ছাত্রলীগকর্মী হলেন হানিফ, ইরফান, আতিফ, নেছার, এরশাদ, নাঈম, রনি, তুষার, রানা, মিজান, ঈমন, আসিফ, হুজ্জাত, দেলোয়ার, রায়হান, অভি প্রমুখ।

 


আরো সংবাদ



premium cement

সকল