দারিদ্র্যবিমোচন ও সমাজে সাম্য প্রতিষ্ঠায় জাকাত মোক্ষম ব্যবস্থা : ধর্ম উপদেষ্টা
- নিজস্ব প্রতিবেদক ও চট্টগ্রাম ব্যুরো
- ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০২:৫৬
ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেছেন, জাকাত ইসলামী শরিয়তভিত্তিক গুরুত্বপূর্ণ একটি অর্থনৈতিক ব্যবস্থা। এর মাধ্যমে ধনী ও দরিদ্রের মধ্যে সম্পদের সুষম বণ্টন নিশ্চিত হয়। দারিদ্র্যবিমোচন ও সমাজে সাম্য প্রতিষ্ঠায় জাকাত মোক্ষম ব্যবস্থা।
গতকাল চট্টগ্রামে ওমর গণি এমইএস কলেজ মাঠে অসহায়, দুস্থ ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মাঝে আর্থিক সহায়তা প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন। আল মানাহিল ফাউন্ডেশনের সহায়তায় নুরে হাবিব ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশন এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, জাকাতের মাধ্যমে গরিব ও দুস্থদের খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান ও চিকিৎসার মতো মৌলিক চাহিদাগুলো পূরণ করা সম্ভব। এটি দরিদ্রদের জীবনমানের উন্নয়ন ঘটায় এবং তাদেরকে দারিদ্র্যের দুষ্টচক্র থেকে বেরিয়ে আসতে সহায়তা করে।
ধর্ম উপদষ্টা আরো বলেন, জাকাত সমাজের ধনী ও দরিদ্রের মধ্যে সম্পদের ভারসাম্য বজায় রাখে। ধনীদের অতিরিক্ত সম্পদ দরিদ্রদের মাঝে বিতরণ হলে সামাজিক বৈষম্য হ্রাস পাবে। তিনি শরিয়ত মোতাবেক জাকাত আদায়ে ধনীদের প্রতি আহ্বান জানান।
জাকাতের গুরুত্ব তুলে ধরে ড. খালিদ বলেন, জাকাতের অর্থ দিয়ে গরিবদের ক্ষুদ্র ব্যবসা, কৃষি বা অন্যান্য উপার্জনমুখী কাজে সহায়তা করা যায়। এটি তাদের আত্মনির্ভরশীল হতে সাহায্য করে এবং অর্থনৈতিক মুক্তি দেয়। এটি দরিদ্রদের ঋণের ফাঁদ থেকে বের হতে সাহায্য করে এবং তাদেরকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে সহায়ক। ঋণগ্রস্ত ব্যক্তিদেরকে ঋণমুক্ত করা জাকাতের অন্যতম উদ্দেশ্য।
আল মানাহিল ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের চেয়ারম্যান শায়খ হেলালুদ্দীন বিন যমীরুদ্দীনের সভাপতিত্বে এতে অন্যান্যর মাঝে চট্টগ্রাম ওমর গণি এমইএস কলেজের অধ্যক্ষ আ ন ম সরওয়ার আলম, উপাধ্যক্ষ রেজাউল করীম সিদ্দীকি, নূরে হাবিব ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সাঈদ আহসান খালিদ ও মাওলানা ফরিদ বিন যমীরুদ্দীন উদ্দীন উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে ২০০ জন দুস্থ ও অসহায় পরিবারের মাঝে ৪০ লাখ টাকার জাকাতের অর্থ বিতরণ করা হয়।
নারী সাংবাদিক প্রবেশে বাধা বিষয়ে ধর্ম উপদেষ্টার বক্তব্য : ‘ধর্ম উপদেষ্টার কর্মসূচির মিডিয়া কভারেজে নারী সাংবাদিক প্রবেশে বাধা’- এরূপ একটি ফেসবুক পোস্ট সোশ্যাল মিডিয়ায় লক্ষ করা গেছে। একজন নারী সাংবাদিক তার ফেসবুক ওয়ালে এই পোস্টটি করেছেন। পরবর্তীতে অনেকেই বিভিন্নভাবে তাদের ফেসবুক ওয়ালে এই পোস্টটি শেয়ার করেছেন। এ বিষয়ে ধর্ম মন্ত্রণালয় বৃহস্পতিবার একটি বিবৃতি দিয়েছে। এতে তারা জানান, গত ২৯ জানুয়ারি চীন মৈত্রী আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে এমন ঘটনা ঘটেছে বলে পোস্টটিতে উল্লেখ করা হয়েছে। এ অনুষ্ঠানটির আয়োজক ছিল ‘কওমি উদ্যোক্তা’ নামের একটি সংগঠন। এ অনুষ্ঠানে ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন প্রধান অতিথি হিসেবে আমন্ত্রিত হয়ে অংশগ্রহণ করেন। তিনি এ অনুষ্ঠানে প্রায় ৪৫ মিনিট অবস্থান করেন এবং সেখানে বক্তব্য রাখেন। সেখানে অবস্থানকালে এ অনুষ্ঠানে নারী সাংবাদিকদেরকে প্রবেশে বাধা দেয়ার বিষয়ে তিনি অবহিত ছিলেন না এবং কোনো সাংবাদিকও তাকে এ বিষয়ে কোনো অভিযোগ করেননি। সেখানে থাকাবস্থায় এরূপ ঘটনার বিষয়ে অবহিত হলে তিনি অবশ্যই নারী সাংবাদিকদেরকে সেখানে পেশাগত দায়িত্ব পালনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতেন।
কওমি উদ্যোক্তা সম্মেলনে এরূপ কোনো ঘটনা ঘটে থাকলে সেটি অবশ্যই নিন্দনীয়। তবে এরূপ ঘটনার জন্য অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথিকে দায়ী করাটা কোনোভাবেই যুক্তিসঙ্গত ও গ্রহণযোগ্য নয়। এরূপ পোস্ট নিছক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। ধর্ম উপদেষ্টার কিংবা ধর্ম মন্ত্রণালয়ের যেকোনো কর্মসূচিতে সাংবাদিকরা সাদরে আমন্ত্রিত হয়ে থাকেন। এ মন্ত্রণালয়ে যোগদানের পর থেকে ধর্ম উপদেষ্টা নারী সংবাদিকদেরকে পেশাগত দায়িত্ব পালনে সহযোগিতা করে আসছেন। কিছুসংখ্যক নারী সাংবাদিক ইতোমধ্যে তার দীর্ঘ সাক্ষাৎকারও নিয়েছেন। তিনি কিংবা তার দফতর থেকে কখনোই কোনো নারী সাংবাদিকের ওপর কোনোরূপ বিধিনিষেধে আরোপ করা হয়নি। আগামীতেও ধর্ম উপদেষ্টা ও তার মন্ত্রণালয় নারী সংবাদিকদেরকে পেশাগত দায়িত্ব পালনে সহযোগিতা করে যাবে।
কওমি উদ্যোক্তার বক্তব্য : ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের ফেসবুকভিত্তিক গ্রুপ কওমি উদ্যোক্তার আয়োজনে গত ২৯ জানুয়ারি চীন মৈত্রী আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এক উদ্যোক্তা সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এ সম্মেলনে ধর্ম উপদেষ্টাকে প্রধান অতিথি হিসেবে আমন্ত্রণ জানানো হয় এবং তিনি আনুমানিক বিকেল ৫টা ১৫ মিনিটে অনুষ্ঠানস্থলে উপস্থিত হন। এমি জান্নাত নামে একজন নারী সাংবাদিককে এ অনুষ্ঠানে প্রবেশ করতে দেয়া হয়নি মর্মে তিনি ফেসবুকে পোস্ট করেছেন। আমাদের জানা মতে এ অনুষ্ঠান আয়োজন সংশ্লিষ্ট কোনো ব্যক্তি থেকে এরূপ কোনো ঘটনা ঘটেনি। আমাদের অজ্ঞাতে এরূপ কোনো ঘটনা ঘটে থাকলে সে জন্য আমরা আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করেছি। এ ধরনের কোনো ঘটনার দায় কোনোভাবেই অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ধর্ম উপদেষ্টার নয়। এরূপ কোনো ঘটনার জন্য ধর্ম উপদেষ্টার ওপর দায় চাপানো অনাকাক্সিক্ষত ও দুঃখজনক। কওমি উদ্যোক্তা কখনোই নিউজ সংগ্রহ বা কর্মস্থলে নারীকে বাধাদান করেনি। আগামীতেও করবে না। উল্লেখ্য, চ্যানেল আইয়ের এক নারী সাংবাদিককে আমাদের একজন ভলান্টিয়ার নিজে রিসিভ করে অনুষ্ঠানে নিয়ে গেছেন এবং তিনি অনেকক্ষণ সেখানে নিউজ ও ফুটেজ সংগ্রহ করেছেন।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা