সরকার থেকে পদত্যাগের কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি : তথ্য উপদেষ্টা
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ৩১ জানুয়ারি ২০২৫, ০০:০০
দেশের একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশ ‘রাজনৈতিক দলে যুক্ত হতে উপদেষ্টা পদ থেকে নাহিদ ইসলাম ও আসিফ মাহমুদ পদত্যাগ করতে যাচ্ছেন’। প্রসঙ্গে তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেছেন, সরকার থেকে তাদের পদত্যাগের এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। হলে অবশ্যই সাংবাদিকদের জানানো হবে।
গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন। নাহিদ ইসলাম বলেন, পদত্যাগের বিষয়টি কোন উৎস থেকে পত্রিকায় লেখা হয়েছে সেটা উল্লেখ নেই। এ ধরনের কোনো সিদ্ধান্ত এখনো তার নিজের কিংবা আসিফের দিক থেকে হয়নি। আর হলে অবশ্যই জানানো হবে। রাজনৈতিক দলে অংশগ্রহণের প্রয়োজন হলে অবশ্যই জানাবো। তবে সেটা আমরা এখনো ভাবিনি। তিনি আরো বলেন, এই আলাপটা আসছিল রাজনৈতিক দলগুলো থেকে। তারা সরকারে থেকে রাজনৈতিক দল গঠন করা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল। তখন আমি বলেছিলাম, নতুন রাজনৈতিক দল হোক আর অন্য কোনো রাজনৈতিক দলে হোক, আমরা সরকারে থাকা অবস্থায় সেগুলোর সঙ্গে সম্পৃক্ত হবো না। এখন পর্যন্ত আমাদের এমন কোনো সিদ্ধান্ত বা পরিকল্পনা হয়নি।
সাংবাদিকদের অপর এক প্রশ্নের জবাবে নাহিদ ইসলাম বলেন, এটা তো গুরুত্বপূর্ণ একটা সংবাদ। সে ক্ষেত্রে পত্রিকা কর্তৃপক্ষ উৎসটা পরিষ্কার করা উচিত ছিল। আমাদের জায়গা থেকে এমন সিদ্ধান্ত হয়নি।
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের প্রশ্নের জবাবে নাহিদ ইসলাম বলেন, এ বিষয়ে সরকার এখনো সিদ্ধান্তে পৌঁছায়নি। বিচার কার্যক্রম চলমান আছে। ট্রাইব্যুনালের বিচার কার্যক্রমটা আগে দেখতে চাই। আদালত কী বলেন। আর রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গেও আলোচনার বিষয় আছে। এটা তো আসলে কেবল আইনগত সিদ্ধান্ত নয়। রাজনৈতিক সিদ্ধান্তেরও বিষয় আছে। তবে ব্যক্তিগত জায়গা থেকে আমরা মনে করি, আওয়ামী লীগ ১৫ বছর যে ফ্যাসিজম করেছে, জুলাই-আগস্টে যে গণহত্যা সংঘটিত করেছে। তারপর আসলে আওয়ামী লীগের রাজনীতি করার আর অধিকার নেই। আওয়ামী লীগ নামে ও ব্যানারে বাংলাদেশে রাজনীতি করার সুযোগ থাকা উচিত না বলে আমরা মনে করি। সেটার আইনগত ও রাজনৈতিক প্রক্রিয়া কী হবে সেটা আলোচনা করে বের করতে হবে। আমরা এটাও বলেছি, রাজনৈতিক প্রতিহিংসা করতে চাই না। আমরা রিকনসিলিয়েশন চাই। আমরা জাস্টিসও চাই।
সাংবাদিক সন্তানদের বৃত্তি প্রদান সরকারের যুগান্তকারী উদ্যোগ
তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো: নাহিদ ইসলাম বলেছেন, সাংবাদিক সন্তানদের বৃত্তি প্রদান সরকারের যুগান্তকারী উদ্যোগ। এর ফলে সাংবাদিকদের পরিবারের ওপর অর্থনৈতিক চাপ কমবে।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানী ঢাকার তথ্য ভবনে বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের উদ্যোগে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ ও আহত সাংবাদিক এবং অসুস্থ-অসচ্ছল সাংবাদিকদের কল্যাণ অনুদান ও সাংবাদিক সন্তানদের বৃত্তির চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে উপদেষ্টা এ কথা বলেন। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে সাংবাদিকদের আত্মত্যাগের কথা স্মরণ করে তথ্য উপদেষ্টা বলেন, এই গণ-অভ্যুত্থানে অনেক সাংবাদিক সহযোগিতা করেছেন এবং ফ্যাসিবাদের বিপক্ষে বলিষ্ঠ ভূমিকা রেখেছেন। আবার অনেক সাংবাদিক ফ্যাসিবাদের সহযোগী হিসেবেও কাজ করেছেন। যা খুবই দুঃখজনক। এ সময় তিনি গত ১৫ বছরে গণমাধ্যমের ভূমিকা নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা হওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেন।
গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ ও আহত সাংবাদিক পরিবারের পাশে থাকার প্রতিশ্রƒতি দিয়ে তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার শহীদ ও আহত সাংবাদিকদের সম্মান ও স্বীকৃতি প্রদান করবে। প্রবীণ ও গুণী সাংবাদিকদের অবসরকালীন মাসিক ভাতা প্রদানের বিষয়টিও সরকারের বিবেচনায় রয়েছে। গণমাধ্যমের সমালোচনাকে স্বাগত জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, গণমাধ্যমের ওপর সরকারের কোনো চাপ নেই। তবে গণমাধ্যমের স্বাধীনতার নামে ফ্যাসিবাদের পুনর্বাসন মেনে নেয়া হবে না।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব মাহবুবা ফারজানা বলেন, সাংবাদিকদের অনুদান প্রদান আইন দ্বারা পরিচালিত বিষয়। অসুস্থ ও অসচ্ছল সাংবাদিকদের অনুদান পাওয়া একটি আইনি অধিকার। তিনি তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সাংবাদিকদের সার্বিক সহযোগিতা প্রদানের আশ্বাস দেন।
বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুহাম্মদ আবদুল্লাহর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য প্রদান করেন ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মো: শহীদুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক খুরশীদ আলম, বিএফইউজের সহসভাপতি খায়রুল বাশার, প্রধান উপদেষ্টার উপপ্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আইয়ুব ভূঁইয়া, চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন ইনস্টিটিউটের প্রধান নির্বাহী আবুল কালাম মোহাম্মদ শামসুদ্দিন, ডিইউজের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ বাকের হোসাইন, সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের সদস্য শাহীন হাসনাত প্রমুখ। এ সময় অনুষ্ঠানে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের অধীন দফতর ও সংস্থার প্রধানসহ গণমাধ্যমের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী ও সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
তথ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, অনুদান প্রদান অনুষ্ঠানে ৪৬৩ জন সাংবাদিক পরিবারের মধ্যে মোট এক কোটি ৮০ লাখ ২৬ হাজার টাকা বিতরণ করা হয়। এর মধ্যে ১২৭ জন সাংবাদিক ও মৃত্যুবরণকারী সাংবাদিক পরিবারকে দেয়া হয় মোট ৮৯ লাখ টাকা। এর পাশাপাশি ৩০৫ জন সাংবাদিকের মেধাবী সন্তানদের এককালীন বৃত্তিবাবদ ৫৫ লাখ ২৬ হাজার টাকা প্রদান করা হয়। এ ছাড়া জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ পাঁচজন সাংবাদিক পরিবারকে দুই লাখ টাকা করে মোট ১০ লাখ টাকা এবং গণ-অভ্যুত্থানে আহত ২৬ জন সাংবাদিককে এক লাখ টাকা করে মোট ২৬ লাখ টাকা বিতরণ করা হয়।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা