প্রয়োজনীয় সংস্কার ছাড়া নির্বাচন দিলে জনগণ মানবে না : অধ্যাপক মুজিব

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেছেন, একদল খেয়ে গেছে, আরেক দল খাওয়ার জন্য রেডি হয়ে আছে বলায় ক্ষেপলেন কেন?- খাওয়ার জন্য রেডি বলায় গায়ে জ্বালা না নিয়ে বরং দলকে পরিশুদ্ধ করুন। কারণ আপনারাও বুঝতে পেরেছেন, আপনাদের নেতারা কেউ কেউ খাওয়া শুরু করে দিয়েছে। আবার কেউ কেউ খেতে রেডি হয়ে আছে। সুযোগ বুঝেই কোপ দিবে। এদেরকে চিহ্নিত করে দল থেকে বহিষ্কার করে গণমানুষের দল হিসেবে নিজেদেরকে প্রতিষ্ঠিত করতে পরামর্শ থাকবে।
মিরাজুন্নবী সা: উপলক্ষে গতকাল জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ আয়োজিত আলোচনা সভা ও দোয়া অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেন, মেরাজের শিক্ষা জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে ও কর্মে ধারণ করতে হবে। মেরাজের শিক্ষা হচ্ছে মানবজাতির কল্যাণের শিক্ষা। একটি ইসলামী রাষ্ট্রে কী কী আইন চালু করতে হবে এবং কিভাবে সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠা হবে, তা কুরআনের সূরা বনি-ইসরাইলে স্পষ্ট করা আছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে এ দেশের ছাত্র-জনতা ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’ স্লোগান দিয়ে ফ্যাসিবাদমুক্ত করেছে। ফ্যাসিবাদমুক্ত হলেও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা হয়নি। ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য প্রয়োজন ইসলামী রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা। মানুষের তৈরি আইনে ন্যায়বিচার হয়নি, হবেও না। সুদ হচ্ছে ধনীকে আরো ধনী করা আর গরিবকে নিঃস্ব করার মাধ্যম। সুদ ব্যবস্থা বহাল রেখে কোনোভাবেই বৈষম্যহীন সমাজ গঠন সম্ভব নয়। তাই সমাজ থেকে সুদ ব্যবস্থা নির্মূল করতে হলে জাকাতভিত্তিক অর্থনীতি চালু করতে হবে। এ জন্য সর্বপ্রথম প্রয়োজন ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা।

কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমির মো: নূরুল ইসলাম বুলবুলের সভাপতিত্বে এবং কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদের পরিচালনায় সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমির আবদুস সবুর ফকির, সহকারী সেক্রেটারি মুহাম্মদ দেলোয়ার হোসাইন, মোহাম্মদ কামাল হোসেন, ড. মুহাম্মদ আবদুল মান্নান, শামছুর রহমান প্রমুখ।
সভাপতির বক্তব্যে মো: নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, আল্লাহ দুনিয়া সৃষ্টির পর যুগে যুগে নবী-রাসূল পাঠিয়েছেন। সবশেষ নবী হিসেবে হজরত মুহাম্মদ সা:-কে মহাগ্রন্থ আল কুরআনের আলোকে সমাজ গঠন ও জীবনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র পরিচালনার যাবতীয় নির্দেশনা কুরআনে রয়েছে। কুরআনের আলোকে পৃথিবীর বুকে যত দেশ গোড়া হয়েছে সব দেশেই শান্তি বিদ্যমান। পক্ষান্তরে, মানুষের তৈরি আইনে অশান্তির দাবানলে জনগণের জীবন ও ভাগ্য পুড়ে ছাই হচ্ছে। বাংলাদেশের জনগণের ভাগ্যোন্নয়নের জন্য মিরাজের শিক্ষায় ইসলামী রাষ্ট্র ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

টিএন্ডটি শ্রমিক কর্মচারী আদর্শ ফেডারেল ইউনিয়ন : প্রয়োজনীয় সংস্কার না করে নির্বাচন দিলে জনগণ মেনে নিবে না উল্লেখ করে জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের মূল দায়িত্ব হলো রাষ্ট্রের প্রয়োজনীয় সংস্কার করা। যেই আওয়ামী লীগের হাতে রাষ্ট্রের সব ব্যবস্থা ধ্বংস হয়ে গেছে, তাদের দোসরদের বহাল রেখে প্রত্যাশিত সংস্কার হবে না। এটি হবে জনগণকে ধোঁকা দেয়ার সংস্কার। তাই সংস্কারের জন্য সৎ ও দেশপ্রেমিক নাগরিকদের কাজে লাগাতে হবে।
গতকাল বাংলাদেশ টিএন্ডটি শ্রমিক কর্মচারী আদর্শ ফেডারেল ইউনিয়নের বিশেষ সাধারণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মো: নজরুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও সহসভাপতি আমিনুল ইসলাম শামীমের পরিচালনায় রমনা বিটিসিএল চত্বরে অনুষ্ঠিত সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আতিকুর রহমান, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সভাপতি মো: আবদুস সালাম। এ ছাড়া ইউনিয়নের সারা দেশ থেকে আগত নেতারা বক্তৃতা করেন। সভায় সংগঠনের সেক্রেটারি মো: রুহুল আমিন, বিটিসিএল সার্ভিসের মান উন্নয়ন, সংযোগ ও গ্রাহক বৃদ্ধি এবং কর্মচারীদের সার্বিক উন্নয়নের জন্য সরকারের কাছে ১৫ দফা দাবি উপস্থাপন করেন।

রেল ধর্মঘট প্রত্যাহারের আহ্বান : তাবলিগি জামায়াতের বিশ্ব ইজতেমাকে সামনে রেখে রেল ধর্মঘট প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল, সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার। গতকাল এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ৩১ জানুয়ারি শুক্রবার থেকে তুরাগ নদের তীরে টঙ্গীতে বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। ইজতেমায় সারা দেশ থেকে বিপুলসংখ্যক মুসলমান অংশ নেন। ২৮ জানুয়ারি থেকে রেল কর্মচারীদের ধর্মঘটের কারণে রেল যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। আন্দোলনকারী সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি আমাদের আন্তরিক অনুরোধ বিশ্ব ইজতেমা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হওয়ার স্বার্থে ধর্মঘট প্রত্যাহার করুন এবং ন্যায়সঙ্গত দাবিদাওয়া সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে আলাপ-আলোচনার ভিত্তিতে সমাধান করুন। আশা করি ধর্মঘট আহ্বানকারী সংশ্লিষ্ট সবাই ধর্মীয় ও মানবিক বিষয়টিকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিবেন।
ঢাকা মহানগরী উত্তর : আগস্ট বিপ্লবে স্বৈরাচারী-ফ্যাসিবাদী শক্তির পতন হলেও জনপ্রশাসনসহ রাষ্ট্রের বিভিন্ন সেক্টরে পতিতদের প্রতিভুরা এখনো সক্রিয় রয়েছে; তাই অর্জিত বিজয়কে স্থায়িত্ব দিতে এবং দেশ ও জাতিসত্তাবিরোধী ষড়যন্ত্র মোকাবেলায় দলমত নির্বিশেষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম।
গতকাল রাজধানীর পান্থপথের একটি মিলনায়তনে শেরেবাংলা নগর দক্ষিণ থানা জামায়াত আয়োজিত এক রুকন সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। থানা আমির আবু সাঈদ মণ্ডলের সভাপতিত্বে সম্মেলনে বিশেষ অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য হেমায়েত হোসেন, ঢাকা মহানগরী উত্তরের প্রচার-মিডিয়া সম্পাদক আতাউর রহমান সরকার ও মৌলভীবাজার জেলা জামায়াতের কর্মপরিষদ সদস্য আমিনুল ইসলাম।