বিশেষায়িত বাণিজ্যিক আদালত প্রতিষ্ঠায় পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে : প্রধান বিচারপতি
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ২৬ জানুয়ারি ২০২৫, ০২:০৯
চলমান বিচারিক সংস্কার কার্যক্রমের অংশ হিসেবে বিশেষায়িত বাণিজ্যিক আদালত প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ। তিনি বলেন, চলমান বিচারিক সংস্কার কার্যক্রমের অংশ হিসেবে যেসব কার্যক্রম চলমান, তারই অংশ হিসেবে বিশেষায়িত বাণিজ্যিক আদালত প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। এ আদালতগুলো বাণিজ্যিক বিরোধের দ্রুত নিষ্পত্তিতে সহায়ক হবে। এর ফলে ব্যবসায়ী ও বিনিয়োগকারীরা সময়োপযোগী ও কার্যকর আইনি প্রতিকার লাভ পাবেন, যা বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাড়াবে এবং বেশি পরিমাণে প্রত্যক্ষ বিদেশী বিনিয়োগকে আকৃষ্ট করবে। তিনি আরো বলেন, এ উদ্যোগ বিচারব্যবস্থাকে পরিবর্তনশীল অর্থনীতির চাহিদার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ করতে এবং বাংলাদেশকে একটি প্রতিযোগিতামূলক ও বিনিয়োগবান্ধর গন্তব্য হিসেবে উপযোগী করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
সুপ্রিম কোর্ট ও ইউএনডিপির যৌথ উদ্যোগে শনিবার মৌলভীবাজারের দুসাই রিসোর্টে এক রিজিওনাল সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা জানান প্রধান বিচারপতি। বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিতকরণসহ বিচারসেবা দেয়ার ক্ষেত্রে দক্ষতা বাড়াতে করণীয়- নিয়ে আয়োজিত সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি বিচারপতি মো: আশফাকুল ইসলাম। সেমিনারে সিলেট, হবিগঞ্জ ও মৌলভীবাজারে কর্মরত বিভিন্ন পর্যায়ের বিচারবিভাগীয় কর্মকর্তারা অংশ নেন।
প্রধান বিচারপতি তরুণ প্রজন্মের জন্য শিক্ষাক্রমে সাংবিধানিক শিক্ষা অন্তর্ভুক্ত করার ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে বলেন, ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট মাসে ছাত্র-জনতার স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে সংঘটিত বিপ্লব সাংবিধানিকতা ও আইনের শাসনের প্রতি এ দেশের তরুণ প্রজন্মের ক্রমবর্ধমান প্রতিশ্রুতি ও সচেতনতার বিষয়টি আমাদের সামনে নতুন করে তুলে ধরেছে এবং একই সাথে এর মাধ্যমে নতুন একটি প্রজাতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার যে প্রচেষ্টা বর্তমানে চলমান রয়েছে তার অংশ হিসেবে শিক্ষার প্রাথমিক পর্যায়েই তরুণদের কিভাবে সাংবিধানিকতার মৌলিক দিকগুলোর সাথে পরিচিত করানো যায় তার প্রয়োজনীয়তা স্বীকৃত হয়েছে। প্রধান বিচারপতি উল্লেখ করেন, প্রাথমিকভাবে শিক্ষা কার্যক্রমের অংশ হিসেবে সংবিধানে উল্লিখিত নাগরিক, রাজনৈতিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক অধিকার সম্পর্কে তরুণদের জ্ঞান অর্জনের সুযোগ করে দেয়া হলে সেই অর্জিত শিক্ষা একটি ন্যায়সঙ্গত ও গণতান্ত্রিক সমাজ গঠনে এ দেশের তরুণদের অবদান রাখার ক্ষেত্র প্রস্তুত করতে সাহায্য করবে।
সংবিধানের ষষ্ঠ অংশের প্রথম অধ্যায়ের বেশকিছু বিধান কখনো সেভাবে প্রয়োগ করা হয়নি উল্লেখ করে প্রধান বিচারপতি বলেন, এ বিষয়ে বর্তমান পরিবর্তিত পরিস্থিতির আলোকে নতুন করে পুনর্বিবেচনা করা প্রয়োজন।
তিনি সুপ্রিম কোর্টের স্পেশাল কমিটি ফর জুডিশিয়াল রিফর্মের সভাপতি বিচারপতি মো: আশফাকুল ইসলামকে সংবিধানের ৯৮ অনুচ্ছেদের আওতায় অতিরিক্ত বিচারপতি নিয়োগ এবং ১০০ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রাজধানীর বাইরে হাইকোর্ট বিভাগের অধিবেশন আয়োজনের সম্ভাবনা অনুসন্ধানের জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করেন।
সংবিধানের ১০৭ অনুচ্ছেদের ৩ ও ৪ দফার সম্মিলিত পাঠের আওতায় প্রয়োজনীয় বিধি প্রণয়নের মাধ্যমে সুপ্রিম কোর্টের দ্বিকক্ষবিশিষ্ট কাঠামোকে আরো শক্তিশালী করা যেতে পারে বলে মতামত দেন প্রধান বিচারপতি। বিচার বিভাগ সংস্কারে প্রধান বিচারপতির ঘোষণা করা রোডম্যাপ বাস্তবায়ন প্রসঙ্গে তনি বলেন, এরই মধ্যে উচ্চ আদালতের বিচারক নিয়োগে জুডিশিয়াল অ্যাপয়েন্টমেন্ট কাউন্সিল গঠনের বিধান অন্তর্ভুক্ত করে অধ্যাদেশ জারি করা হয়েছে এবং সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় স্থাপনে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জিত হয়েছে। অধস্তন আদালতের বিচারকদের বদলি ও পদোন্নতিতে প্রয়োজনীয় নীতিমালা প্রণয়নসহ বিচারবিভাগীয় কর্মকর্তাদের সক্ষমতা বাড়াতে প্রধান বিচারপতি ফেলোশিপ চালু করার বিষয়ে সুপ্রিম কোর্ট কাজ করে যাচ্ছে বলেও জানান তিনি।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা