মেয়াদ শেষের সাড়ে ৪ মাস পর সংশোধনের প্রস্তাব
- বিশেষ সংবাদদাতা
- ২৫ জানুয়ারি ২০২৫, ০২:০০
- বাড়তি ৪২০ কোটিসহ মোট ৬৭০ কোটি টাকা চাইছে
- প্রায় ৬ বছরে হতাশাজনক অগ্রগতি
উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন ও প্রণয়নের ক্ষেত্রে সরকারি নীতিমালার প্রতি অনেক সংস্থাই তোয়াক্কা করছে না। মেয়াদ শেষের তিন মাসের মধ্যে প্রকল্প সংশোধনের বিধান থাকলেও তা পরিপালন হচ্ছে না। চট্টগ্রাম মহানগরীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ, জলমগ্নতা বা জলাবদ্ধতা নিরসন ও নিষ্কাশন উন্নয়ন শীর্ষক প্রকল্পের মেয়াদ শেষের সাড়ে চার মাস পর প্রকল্প সংশোধন ও বরাদ্দের প্রস্তাব দিয়েছে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়। ২০১৯ সালে শুরু হওয়া প্রকল্পের হতাশাজনক অগ্রগতি প্রায় ছয় বছরে পৌঁছেছে। চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের এডিপিতে অতিরিক্ত ৪২০ কোটি টাকাসহ এজন্য ৬৭০ কোটি টাকা বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের কৃষি, পানিসম্পদ ও পল্লী প্রতিষ্ঠান বিভাগের সেচ উইং সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের তথ্য থেকে জানা গেছে, চট্টগ্রাম মহানগরীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ, জলমগ্নতা/ জলাবদ্ধতা নিরসন ও নিষ্কাশন উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্দেশ্য মহানগরীকে জলাবদ্ধতা থেকে মুক্ত করা। কাজের লক্ষ্যের মধ্যে রয়েছে শহর এলাকা বন্যা/ জলাবদ্ধতা মুক্ত করার জন্য পাম্প হাউজ স্থাপনের মাধ্যমে বৃষ্টির পানি দ্রুত নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা ও জমে থাকা বৃষ্টির পানির যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করা। জন-দুর্ভোগ কমানোর জন্য খাল খনন/ ড্রেজিং/ বর্জ্য ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে শহরের ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নতি করা। যোগাযোগব্যবস্থা, ব্যবসা কেন্দ্র, শিল্পাঞ্চলসহ ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য অবকাঠামো জলমগ্নতা থেকে মুক্ত করা। রেগুলেটর নির্মাণের দ্বারা শহর এলাকায় লবণাক্ত পানি অনুপ্রবেশে প্রতিরোধ করা। কর্ণফুলী নদীর ডান তীরে প্রতিরোধ দেয়ালের মাধ্যমে জোয়ার/ ঝড় ইত্যাদি থেকে শহরকে রক্ষা ও বন্যা হতে রক্ষা করা। প্রকল্পের বাস্তবায়ন খরচ হলো এক হাজার ৬২০ কোটি ৭৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা। ২০২২-২৩ অর্থবছরে কাজের অগ্রগতি ৯৯ কোটি ৫১ লাখ ৫৩ হাজার টাকা। এর মধ্যে বাস্তবে ১০.১০ শতাংশ ও আর্থিক ৬.১৪ শতাংশ। আর ক্রমপুঞ্জিত অগ্রগতি ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত বাস্তব ২৫.১০ শতাংশ, আর্থিক ১৫.২৮ শতাংশ।
প্রকল্পের আওতায় কাজগুলো হলো, রিটেইনিং ওয়াল নির্মাণ ২.৭ কিলোমিটার, ফ্লাড ওয়াল নির্মাণ ১৮.৯৬৫ কিলোমিটার, রেগুলেটর নির্মাণ ২৩টি। এ ছাড়া এক কিলোমিটার তীর সংরক্ষণ কাজ।
পরিকল্পনা কমিশন থেকে জানা গেছে, সরকারি খাতে উন্নয়ন প্রকল্প প্রণয়ন, প্রক্রিয়াকরণ, অনুমোদন ও সংশোধন নির্দেশিকা এর ৪.৩.৬ অনুচ্ছেদ অনুসারে প্রকল্প সংশোধনের ক্ষেত্রে প্রকল্পের অনুমোদিত মেয়াদ শেষ হওয়ার অন্তত তিন মাস পূর্বে সংশোধনের জন্য প্রক্রিয়াকরণ করতে হবে-মর্মে বিধান রয়েছে। অথচ প্রকল্পটির অনুমোদিত মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার প্রায় সাড়ে চার মাস পর সংশোধন-প্রস্তাব পরিকল্পনা কমিশনে প্রেরণ করা হয়। প্রকল্পের জনগুরুত্ব বিবেচনা করে প্রাপ্ত আরডিপিপির ওপর ২০২৪ সালের ১৯ ডিসেম্বর পিইসি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভার সিদ্ধান্ত অনুসারে পুনর্গঠিত আরডিপিপি এখনো পরিকল্পনা কমিশনে প্রেরণ না করায় সংশোধন-প্রস্তাব অনুমোদনার্থে পরবর্তী কার্যক্রম গ্রহণ করা সম্ভব হচ্ছে না।
পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের কৃষি, পানিসম্পদ ও পল্লী প্রতিষ্ঠান বিভাগ সূত্র জানায়, বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন মূল প্রকল্পটি জিওবি অর্থায়নে মোট এক হাজার ৬২০ কোটি ৭৩ লাখ টাকা ব্যয়ে ২০১৯ সালে ১ ফেব্রুয়ারি থেকে ২০২২ সালের ৩০ জুন মেয়াদে বাস্তবায়নের জন্য গত ২০২৯ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় অনুমোদিত হয়। সোয়া তিন বছরে এটি বাস্তবায়নের কথা। পরবর্তীতে ব্যয় বৃদ্ধি ব্যতিরেকে বাস্তবায়ন মেয়াদ প্রথম দফায় জুন ২০২৩ পর্যন্ত। পরে আরো এক বছর মেয়াদ বাড়ানো হয়। মন্ত্রণালয় কর্তৃক এবং দ্বিতীয় দফায় জুন ২০২৪ পর্যন্ত পরিকল্পনা কমিশন কর্তৃক বৃদ্ধি করা হয়। গত ১৩ নভেম্বর ২০২৪ তারিখে প্রকল্পের মেয়াদ আরো ২ (দুই) বছর বৃদ্ধিসহ প্রথম সংশোধনী-প্রস্তাব প্রক্রিয়াকরণের নিমিত্ত পরিকল্পনা কমিশনে প্রেরণ করা হয়।
পরিকল্পনা কমিশন বলছে, প্রকল্পের অনুকূলে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবানুযায়ী চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের সংশোধিত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে অতিরিক্ত ৪২০ কোটি টাকাসহ সর্বমোট ৬৭০ কোটি টাকার বরাদ্দ প্রস্তাব পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য যথারীতি পরিকল্পনা কমিশনের কার্যক্রম বিভাগে ইতোমধ্যে প্রেরিত হয়েছে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা