বিলুপ্তির পথে কিশোরগঞ্জের পান চাষ
- আলি জামশেদ নিকলী (কিশোরগঞ্জ)
- ২৪ জানুয়ারি ২০২৫, ০১:৩৯
কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর, পাকুন্দিয়া, হোসেনপুর ও অন্যান্য উজান এলাকা থেকে বিভিন্ন ধরনের পানের আবাদ বিলুপ্ত হতে চলেছে। স্থানীয় পানচাষিদের ভাষ্য আবহাওয়ার তারতম্যের পাশাপাশি খরচ বেড়ে যাওয়ায় বর্তমানে পানের আবাদ লাভজনক নয় বলে উল্লেখ করেন। সরেজমিন ঘুরে এবং জেলা কৃষি অফিস থেকে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন শহর ও নগরে, এমনকি কিশোরগঞ্জের বিভিন্ন উপজেলায় যেসব পান আসে তাদের অধিকাংশই রাজশাহী, মহেশখালী, চুয়াডাঙ্গা, কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ এলাকার। এসব অঞ্চলের পান বাংলাদেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রফতানি করে অর্থনৈতিক ভাবে লাভবান হয় বলে জানা গেছে।
নিকলী উপজেলা সদরের পান ব্যবসায়ী দিলীপ পাল জানান, সপ্তাহের চার দিন ঝিনাইদহ থেকে রোদার পুড্ডা বাজারে ৬-৭ লাখ টাকার পান তারা নিয়মিত আমদানি করে থাকেন। এতে তারা মাত্র শতকরা ১০ ভাগ কমিশন পান বলে জানান। এলাকায় পানের বরজ থাকাকালে তাদের লাভ বেশি হতো বলে উল্লেখ করেন।
নিকলীর আঠারো বাড়িয়ার খুচরা পান বিক্রেতা বাচ্চু মিয়া বলেন, এলাকার পানের চাষ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় পাইকারের কাছ থেকে চালানি পান কেনার কারণে লাভের পরিমাণটা কমে গেছে।
কামালপুর এলাকার বরজ মালিক স্বদেশ চন্দ্র ভদ্র বলেন, পান চাষে এখন আর পোষায় না। এ জন্য তুলনামূলক উঁচু জমি লাগে এবং উর্বর মাটি ভরাট করতে হয়। এতে খাটুনি অনেক বেশি। কঞ্চি ও বাঁশের দামসহ শ্রমিকদের মজুরি এখন অনেক বেশি। আগে তার বেশ কয়েকটি বরজ ছিল, এখন মাত্র একটা আছে বলে উল্লেখ করেন। আবহাওয়াজনিত সমস্যা এখন পান চাষে বাধা বলে জানান। অতিরিক্ত গরমে পানে পচন ধরে আর অতিরিক্ত শীতেও পানের ক্ষতি হয়।
বাজিতপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আশরাফুল আলম এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, পান চাষে যারা আগ্রহ দেখাবে তাদের প্রতি উপজেলা কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করা হবে।
জেলা কৃষি কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ কিশোরগঞ্জের পানচাষিদের আগ্রহটা দিন দিন কমে যাওয়ার কথার সাথে সহমত পোষণ করেন। তিনি যুক্তি তুলে বলেন, পান অর্থকরী ফসল হলেও কিশোরগঞ্জের তিন ফসলি জমিতে পানের আবাদের তুলনায় অন্যান্য ফসলে চাষিদের লাভ তুলনামূলক বেশি হয়ে থাকে। চাষিরা সাধারণত যে ফসলে লাভবান হয় সেদিকেই বেশি ঝুঁকে। তাছাড়া সরকারিভাবে পান চাষে কোনো রকম প্রণোদনার ব্যবস্থাও নেই বলে তিনি উল্লেখ করেন।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা