ট্রাইব্যুনালে বিচারের এখতিয়ার চ্যালেঞ্জ জিয়াউল আহসানের আবেদন খারিজ
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ২৩ জানুয়ারি ২০২৫, ০২:০২
আন্তর্জাতিক অপারাধ ট্রাইব্যুনালের বিচারিক কার্যক্রমের এখতিয়ার চ্যালেঞ্জ করে হত্যা, গুম ও মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গ্রেফতার ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের (এনটিএমসি) সাবেক মহাপরিচালক বরখাস্ত মেজর জেনারেল (অব:) জিয়াউল আহসানের আবেদন খারিজ করে দেয়া হয়েছে। গতকাল চেয়ারম্যান বিচারপতি মো: গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এ আদেশ দেন।
আদেশে ট্রাইব্যুনাল বলেছেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের ক্ষমতার বিষয়ে কোনো সমাধান দেয়ার এখতিয়ার তাদের নেই। ট্রাইব্যুনালে জিয়াউল আহসানের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন সিনিয়র আইনজীবী এম আই ফারুকী এবং জিয়াউল আহসানের বোন আইনজীবী অ্যাডভোকেট নাজনীন নাহার। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।
এর আগে গত সোমবার ট্রাইব্যুনালের বিচারিক কার্যক্রমের এখতিয়ার চ্যালেঞ্জ করে এবং জিয়াউল আহসানের অব্যাহতি চেয়ে এ আবেদন করা হয়। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে ট্রাইব্যুনাল গতকাল বুধবার আদেশের জন্য রাখেন।
আদেশের পর চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেন, যে আইনে এই ট্রাইব্যুনাল প্রতিষ্ঠিত; অর্থাৎ ১৯৭৩ সালের ক্রাইম ট্রাইব্যুনাল অ্যাক্ট, সেই আইনের কোনো বৈধতা বা সেই আইনের সংশোধন কোনো বৈধতা চ্যালেঞ্জ করার জায়গা এই ট্রাইব্যুনাল নয়। কোনো আইন যদি সংবিধানের সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ হয় বা চ্যালেঞ্জ করার প্রশ্ন আসে, তাহলে অবশ্যই তাকে সাংবিধানিক আদালতে যেতে হবে। তা না করে বিচারক আদালতে এসেছেন, এটা কোনো সঠিক পদ্ধতি নয়।
তাজুল ইসলাম বলেন, ১৯৭৩ সালের ক্রাইমস ট্রাইব্যুনাল অ্যাক্টকে একটা ব্ল্যাংকেট প্রটেকশন দেয়া হয়েছে। এই আইনের ব্যাপারে কোনো সাংবিধানিক আদালতে কোনো প্রশ্নই তোলা যাবে না। এই আইনে যার বিচার হচ্ছে, সে রকম কোনো ব্যক্তি মৌলিক অধিকার দাবি করে হাইকোর্ট ডিভিশনে বা সাংবিধানিক আদালতে কোনো পিটিশনই করতে পারবেন না।
শেখ হাসিনার হেট স্পিচ প্রচার না করতে আহ্বান : তাজুল ইসলাম বলেন, আমরা দেখছি শেখ হাসিনা ভারতে বসে হেট স্পিচ দিয়ে যাচ্ছেন। হুমকি-ধমকি দিচ্ছেন। সাক্ষীদের ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন। বিচারকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য তিনি এসব করছেন। ট্রাইব্যুনালের আদেশ রয়েছে শেখ হাসিনার হেট স্পিচ প্রচার না করার। এর পরও দেখছি কিছু গণমাধ্যমে শেখ হাসিনার হেট স্পিচ প্রচার করছে। আমরা অনুরোধ করবো তার হেট স্পিচ প্রচার না করার। ট্রাইব্যুনালের বিচারকে প্রভাবিত ও বাধাগ্রস্ত করে শেখ হাসিনার এমন বক্তব্য যদি প্রচার অব্যাহত রাখা হয় তাহলে আমরা পদক্ষেপ নেয়ার কথা ভাববো।
এ বিষয়ে জিয়াউল আহসানের আইনজীবী ও তার বোন নাজনীন নাহার বলেন, ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে যারা অপরাধী ছিলেন, তাদের বিচার করতে এই ট্রাইব্যুনাল হয়েছে। এটাই ছিল এই আইনের মূল ভিত্তি। মূল স্পিরিটই ছিল যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করতে হবে এবং এ কারণেই এই আইন হয়েছিল, এই ট্রাইব্যুনাল হয়েছিল। তিনি বলেন, জুলাই-আগস্টে ছিল পলিটিকস কনফ্লিক্ট (রাজনৈতিক বিরোধ)। পলিটিকস কনফ্লিক্টকে বিচার করতে দেশে যে আইনি ব্যবস্থা আছে এবং যে আদালত আছে, সেখানে এর ব্যবস্থা আছে। যদি ওনারা মনে করেন, ট্রাইব্যুনাল করবেন, অবশ্যই নতুন করে করতে পারেন। কিন্তু এই ট্রাইব্যুনাল গঠিত হয়েছিল শুধু ১৯৭১ সালের যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের জন্য। আমি যুদ্ধাপরাধী নই। এই আইনই তৈরি হয়েছে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের জন্য।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা