কালোবাজারে মিলছে বিনামূল্যের পাঠ্যবই
- শাহেদ মতিউর রহমান
- ২২ জানুয়ারি ২০২৫, ০০:০০
কড়া নজরদারি সত্ত্বেও এবছরও কালো বাজারে চলে গেছে বিনামূল্যের পাঠ্যবই। যদিও নতুন শিক্ষাবর্ষের একমাস শেষ হয়ে যাচ্ছে কিন্তু এখনো অর্ধেক শিক্ষার্থীর হাতেও বই পৌঁছায়নি। ফলে অভিভাবকরাও এখন নানাভাবে ফন্দি ফিকির করে বই সংগ্রহের চেষ্টা করছেন। প্রাথমিকের নিচের দিকের তিনটি শ্রেণির (প্রথম দ্বিতীয় তৃতীয়) বই শিক্ষার্থীদের হাতে পৌঁছালেও চতুর্থ এবং পঞ্চম শ্রেণির পাঠ্যবই এখনো ছাপার কাজই শুরু করতে পারেনি জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। তবে এনসিটিবির নির্দেশনায় অধিকাংশ প্রেসে এখন অগ্রাধিকার ভিত্তিতে দশম শ্রেণির বই ছাপা হচ্ছে।
বছরের এ সময়ে স্কুলে বই না পৌঁছানোর কারণে একটি অসাধু চক্র কৌশলে প্রাথমিক এবং মাধ্যমিকের কিছু ক্লাসের পাঠ্যবই কালোবাজারে ছেড়েছে। ফলে অনেক স্কুলে বা শিক্ষার্থীর হাতে বই না পৌঁছালেও বাংলাবাজার এবং নীলক্ষেতে পাওয়া যাচ্ছে বিনামূল্যের পাঠ্যবই। এ বিষয়ে গোপন তথ্যের ভিত্তিতে গত কয়েকদিন বাংলাবাজার এবং নীলক্ষেতে অভিযান চালায় এনসিটিবি এবং সরকারের গোয়েন্দা বিভাগ। গত সোমবার একদিনই বাংলাবাজারের বিভিন্ন দোকান ও গোডাউনে অভিযান পরিচালনা করে পাঁচ হাজারের বেশি কপি বিনামূল্যের পাঠ্যবই জব্দ করেছে এনসিটিবি। আর এ অভিযানে নেতৃত্ব দেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রমনার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ তৌহিদুর রহমান। অভিযানে উপস্থিত থেকে সহযোগিতা করেন সরকারি সংস্থা অভ্যন্তরীন নিরাপত্তা বিভাগ (এনএসআই) ও এনসিটিবির মনিটরিং টিমের সদস্যরা।
অভিযানের বিষয়ে গতকাল মঙ্গলবার এনসিটিবির একটি সূত্র নয়া দিগন্তকে জানায়, সরকারিভাবে বিনামূল্যে বিতরণযোগ্য পাঠ্যপুস্তক রাজধানীর কোতয়ালি থানার বাংলাবাজার বই মার্কেটের বিভিন্ন দোকানে বিক্রি হচ্ছে এমন সুনির্দিষ্ট তথ্য এনএসআই শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে জানায়। পরে সেই তথ্যের ভিত্তিতে এনএসআই ও এনসিটিবির প্রতিনিধি দলের উপস্থিতিতে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অভিযান পরিচালনা করে ২টি দোকানের প্রত্যেকটিকে এক হাজার টাকা করে জরিমানা করেন এবং ৫ হাজার বই জব্দ করে।
দোকান ২টি হচ্ছে বাংলাবাজারের ৬ প্যারিদাস রোডের বই বাজার বিডি ও প্যারিদাস রোডের জাহিদ বুক হাউজ। বাংলাবাজারের কয়েকজন পুস্তক ব্যবসায়ী জানান, বই বাজার বিডির মালিকের নাম হিরা এবং জাহিদ বুক হাউজের মালিকর নাম জাহিদ মিয়া। তবে এই দুই মালিকের সাথে যোগাযোগ করেও তাদের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। অপরদিকে লেটার এন্ড কালার প্রেসের মালিক সিরাজুল ইসলাম গতকাল দুপুরে এ প্রতিবেদককে জানান, আমরা বই ছাপার পর সেগুলো গণনা করে বস্তায় কিংবা বান্ডেল বেঁধে ট্রাকে করে জেলা উপজেলায় পৌঁছে দেয়ার ব্যবস্থা করি। তবে এ বই কিভাবে বাইরে চলে যায় তা আমাদের জানা নেই। আমরাও চাই এভাবে অভিযান পরিচালনা করে দোষীদের খুঁজে বের করা হোক এবং তাদেরকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনা হোক।
একই প্রসঙ্গে কথা হয় মাস্টার সিমেক্স এর স্বত্বাধিকারী ইমরানের সাথে। তিনি জানান, আমাদের বই কিভাবে বাইরে কালোবাজারে চলে গেলো এটা আমাদেরও জানা নেই। আমরাও চাই এ বিষয়ে তদন্ত হোক। দোষীদের খুঁজে বের করা হোক। উল্লেখ্য, এনসিটিবির পাঠ্যপুস্তকের মান নিয়ন্ত্রণ, কাগজ ও আর্ট কার্ডের মজুত, গাইড বই মুদ্রণ ও সরকারি বই বাজারে বিক্রির বিরুদ্ধে শুরু থেকেই মাঠে রয়েছে তদারকি দল এবং সরকারের বিভিন্ন সংস্থা। কিন্তু এরপরে একটি চক্র কৌশলে বিনামূল্যের পাঠ্যবই কালো বাজারে নিয়ে গিয়ে বিক্রি করছে। অবশ্য এ বিষয়ে সরকার তৎপর থাকলে কোনো চক্রই সফল হবে না মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা