২০ জানুয়ারি ২০২৫, ০৬ মাঘ ১৪৩১, ১৯ রজব ১৪৪৬
`

বয়স্ক জাপানিদের জেল পছন্দ!

-

কক্ষগুলো বয়স্ক লোক দিয়ে ভরা। তাদের হাতের চামড়া কুঁচকে গেছে, অনেকের পিঠ বাঁকানো। তারা ধীরে ধীরে করিডোর দিয়ে নেমে আসে, কেউ কেউ হাঁটার যন্ত্র ব্যবহার করে। শ্রমিকরা তাদের গোসল করতে, খেতে, হাঁটতে ও ওষুধ সেবন করতে সাহায্য করছে। তবে এটি কোনো নার্সিং হোম নয়। এটি জাপানের সবচেয়ে বড় নারীদের কারাগার। এখানে এতো লোক মূলত বাইরের বয়স্ক সমাজের একাকিত্বের বিস্তৃত সমস্যাকে প্রতিফলিত করে। কারাগারের রক্ষীরা বলছিলেন, বাইরে একাকিত্ব কিছু লোকের জন্য এত তীব্র যে, তারা কারাগারে থাকতে পছন্দ করে।
টোকিওর উত্তরে অবস্থিত তোচিগি নারী কারাগারের কর্মকর্তা তাকায়োশি শিরানাগা সেপ্টেম্বরে সিএনএনকে বলেন, এমন লোকও রয়েছেন যারা বলেন, চিরকাল এখানে বসবাসের জন্য মাসে ২০,০০০ বা ৩০,০০০ ইয়েন (১৩০-১৯০ ডলার) প্রদান করবে!
কারারক্ষী শিরানাগা বলেন, অনেক মানুষ এখানে আসে শীতের কারণে অথবা ক্ষুধার্ত থাকার কারণে। যারা অসুস্থ হয়ে পড়ে, তারা কারাগারে থাকাকালীন বিনামূল্যে চিকিৎসা পেতে পারে। কিছু লোক যতদিন সম্ভব এখানে থাকতে চায়। দোষী সাব্যস্ত অপরাধীদের কাছে এ জায়গাটিকে কারাগারের চেয়ে নার্সিং হোমের মতো মনে হয়।

জাপানে কারাগারে বন্দী বয়স্ক নারীদের সবচেয়ে সাধারণ অপরাধ হলো চুরি। এ প্রবণতা পুরুষদের মধ্যেও দেখা যায়। সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২২ সালে দেশব্যাপী ৮০ শতাংশের বেশি বয়স্ক বন্দী নারী চুরির দায়ে কারাগারে ছিলেন। দেশে ৬৫ বছরের বেশি বয়সী ২০ শতাংশ লোক দারিদ্র্যের মধ্যে বাস করে।
জাপানজুড়ে ২০০৩ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে ৬৫ বছর বা তার বেশি বয়সী বন্দীর সংখ্যা প্রায় চারগুণ বেড়েছে। এটি কারাগারের ধরনকেও পরিবর্তন করেছে।
কারারক্ষী মেগুমি বলেন, সাবেক বন্দীদের জন্য সমস্যার আরো একটি কারণ হলো, সমাজে পুনরায় প্রবেশের পর তাদের সহায়তার লোকের অভাব। তারা মুক্তি পেলেও এবং স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার পরও তাদের দেখাশোনা করার কেউ নেই। এমনও মানুষ আছেন, যারা বারবার অপরাধ করে পরিবার পরিত্যক্ত হয়েছেন। তাদের এখন থাকার কোনো জায়গা নেই। ইন্টারনেট।


আরো সংবাদ



premium cement